অস্বাস্থ্যকর খাবার খায় ৪৯ শতাংশ শিশু
অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে যেসব শিশু বড় হয়, পরিণত বয়সে ডায়াবেটিসসহ নানা রোগের ঝুঁকিতে থাকে তারা
ছয় থেকে ২৩ মাস বয়সী প্রায় ৪৯ শতাংশ শিশু অস্বাস্থ্যকর খাবার খায়। গত এপ্রিলে প্রকাশিত বাংলাদেশ জনমিতি ও স্বাস্থ্য জরিপ ২০২২– এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জরিপটি করেছে জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (নিপোর্ট)। জরিপে দেশের ৩০ হাজার ৩৭৫টি পরিবারের কাছ থেকে নানা ধরনের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। খাদ্য গ্রহণ-সংক্রান্ত তথ্য নেওয়া হয় ৬ থেকে ২৩ মাস বয়সী ২ হাজার ৫৭৮টি শিশুর।
জরিপে উঠে এসেছে, ৩২ শতাংশ শিশু তথ্য সংগ্রহের আগের দিন কোমল পানীয় পান করেছে। ৪৯ শতাংশ শিশু অতিরিক্ত চিনি ও লবণজাতীয় অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়েছে।
নিপোর্টের পরিচালক (গবেষণা) মোহাম্মদ আহছানুল আলম বলেন, কোমল পানীয় বলতে নানা ধরনের ‘কার্বোনেটেড’ পানীয়, প্রক্রিয়াজাত ফলের রসকে বোঝানো হয়েছে। আর অতিরিক্ত লবণ ও চিনিজাতীয় খাবারের মধ্যে রয়েছে চিপস, চানাচুর, আধা প্রস্তুতকৃত (ইনস্ট্যান্ট) নুডলস, বার্গারসহ নানা ‘জাংক ফুড’।
নিপোর্টের প্রতিবেদনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও জাতিসংঘ শিশু তহবিলের (ইউনিসেফ) সংজ্ঞা ব্যবহার করে এসব খাবারকে অস্বাস্থ্যকর বলা হয়েছে। কারণ, এসব খাবারে মাত্রাতিরিক্ত লবণ, চিনি ও চর্বি থাকে।
নিপোর্টের জরিপের হার বিবেচনায় দেখা যাচ্ছে, ২৩ লাখের বেশি শিশু অস্বাস্থ্যকর খাবার খাচ্ছে। কৃত্রিম পানীয়তে প্রচুর পরিমাণে চিনি ও সংরক্ষক (প্রিজারভেটিভ) থাকে। সংরক্ষক ও সুইটেনিং এজেন্টে (মিষ্টিকারক) আবার নানা ধরনের ক্ষতিকর উপাদান থাকে, যা শিশুর অস্বাভাবিক শারীরিক বৃদ্ধির কারণ হয়।
চিপস, বার্গার ও আধা প্রস্তুত করা নুডলসে সাধারণ লবণ বেশি ব্যবহার করা হয়। অল্প বয়সে মাত্রাতিরিক্ত লবণে ভরা খাবার শিশুর শরীরে ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
পুষ্টিবিদরা বলছেন, এখন শিশুদের প্রধান খাদ্য হয়ে উঠছে– চিপস, চানাচুর, চকলেট, চুইংগাম ও চাটনি। প্রতিটি সুষম খাবারের পরিপন্থি। এগুলো খেলে ক্ষুধা নষ্ট হয়। অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে যেসব শিশু বড় হয়, তারা পরিণত বয়সে ডায়াবেটিসসহ নানা রোগের ঝুঁকিতে থাকে। খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনে আয়রনের ঘাটতিজনিত অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতা, কোষ্ঠকাঠিন্য ও ভিটামিন ডির ঘাটতি দেখা দেয়।