শিশুর পেট থেকে পেরেক অপসারণ, প্রশংসায় ভাসছেন বক্ষব্যাধির চিকিৎসকরা
খেলার ছলে লোহার পেরেক গিলে ফেলে শিশু আফোয়ান।
জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চিকিৎসকদের প্রচেষ্টায় ১৭ দিন পর ব্রংকোটমি করে এক শিশুর পেট থেকে পেরেক বের করা হয়েছে। আফোয়ান নামে এক বছর তিন মাস বয়সী ওই শিশুর বাড়ি সিলেটের বিছানাকান্দিতে।
শনিবার (৬ মে) রাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এসব তথ্য জানানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, খেলার ছলে লোহার পেরেক গিলে ফেলে শিশুটি। গিলে ফেলা পেরেকটি তার ডান ফুসফুসের নিচের লোবের ভেতরে ঢুকে যায়। তাকে প্রথমে সিলেটে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়ার পর দুইবার ব্রংকসকপির মাধ্যমে বের করার চেষ্টা ব্যর্থ হয়। পরে সেখান থেকে শিশুটিকে ঢাকার জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে পাঠানো হয়।
বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউটের থোরাসিক সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. আনোয়ারুল আনাম কিবরিয়ার অংশগ্রহণে সার্জারি ইউনিট-১ টিম ব্রংকোটমি করে এ পেরেক বের করেন। বর্তমানে শিশুটি সুস্থ হয়ে বাড়িতে চলে গেছে বলে জানা গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ফুসফুস, খাদ্যনালীর সব জটিল অপারেশন আমাদের দেশের দক্ষ থোরাসিক সার্জন টিম প্রতিনিয়ত করে যাচ্ছেন। তাই এসব অপারেশন ও চিকিৎসার জন্য বিদেশে না গিয়ে দেশের চিকিৎসকদের ওপর আস্থা রাখতে বলা হয়েছে।
ডা. মুহম্মদ শিবলী শাহরিয়ার বলেন, বক্ষব্যাধি ইন্সটিটিউটে প্রায় প্রতিদিনই এরকম ২/৪ টা অপারেশন করা হয়।
প্রশংসায় ভাসছেন চিকিৎসকরা
মুমিন উল্লাহ নামের একজন লেখেন, যেসকল সন্মানিত চিকিৎসকবৃন্ধ এই সার্জারি টিমে ছিলেন সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ। ছোট বাচ্চাকে আল্লাহ সুস্থ ও নিরাপদে রাখুন। অভিভাবকদেরকে আরো বেশি সতর্ক থাকতে হবে, যাতে বাচ্চাদের হাতের নাগালে অনিরাপদ বস্তু না থাকে। এক মুহূর্তের অসতর্কতা সারা জীবনের কান্না, এ শ্লোগানটি সবসময় মনে রাখতে হবে।
আবদুল্লাহ আল মামুন নামের একজন ফেসবুক কমেন্টে লিখেন, ‘আগে দেশের বড় বড় ভিভিআইপি-দের দেশের চিকিৎসার উপর ভরসা রেখে দেশে চিকিৎসা নিতে হবে। তাহলে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার উপর আস্থা এমনিতেই আসবে। আমরা যারা সাধারণ মানুষ, দেশের ডাক্তারদের ওপর তাদের যথেষ্ট আস্থা আছে এবং আস্থা থাকতে হয়।’
পলাশ চৌধুরী নামের একজন লেখেন, ‘আস্থা রাখার জন্য সরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থা সহজলভ্য ও দালালমুক্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা করা উচিত।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের উদ্দেশে মো. হুমায়ূন কবির নামের একজন লেখেন, মাননীয় মহাপরিচালক ও মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় আমরাই আপনাদের বলছি আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্হা আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো। চিকিৎসা ব্যবস্হা ভালো নানহলেও ডাক্তাররা অনেক ভালো দয়া করে আপনারা দেশেই চিকিৎসা নেবেন আশা করি।
মুহাম্মদ ইউসুফ বলেন, আমাদের দেশের আমলারা যদি একটু আস্থা রাখতো। তাহলে সাধারণ মানুষ আস্থা আরো বেশি রাখতো। এখন তো বেশিরভাগ স্যাররা সমান্য জ্বর হলেও বাহিরে চলে যায়। তাহলে সাধারণ মানুষ আস্থা রাখবে কিভাবে বলেন?
আবদুল্লাহ শামীম নামের একজন ফেসবুক কমেন্টে বলেন, আমাদের দেশের দক্ষ ও অভিজ্ঞ চিকিৎসকগণ জনগণের যেরূপ চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন, তা খুবই প্রশংসনীয় এবং অন্য দেশের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।