ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম খাতে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের আহ্বান
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে ইউএস চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহীর সঙ্গে বৈঠক করেন। ছবি: পিআইডি
ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন সম্ভাবনাময় খাতে বিনিয়োগ করতে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জাহাজ নির্মাণ, অটোমোবাইল, হালকা ও ভারী মেশিন, রাসায়নিক, সার, তথ্যপ্রযুক্তি, সমুদ্রসম্পদ, সহ আমাদের অনেক সম্ভাবনাময় সেক্টরে বিনিয়োগ করার আমন্ত্রণ জানাই।
যুক্তরাষ্ট্রের চেম্বার অব কমার্সে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মঙ্গলবার ‘যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব : স্মার্ট প্রবৃদ্ধির জন্য লক্ষ্য’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলও প্রস্তাব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। খবর বাসসের।
গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের চেম্বার অব কমার্সে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে গোলটেবিল বৈঠকে এসব সেক্টর ছাড়াও আরও কোন কোন ক্ষেত্রে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করা যায়, মার্কিন ব্যবসায়ীদের তার সুযোগ ও সম্ভাবনা অনুসন্ধানেরও আহ্বান জানান তিনি।
ওই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ ব্যবসায়ী কাউন্সিল।
যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল বন্ধুপ্রতিম দুই দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতাকে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি মার্কিন ব্যবসায়ীদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। এ ক্ষেত্রে মার্কিন বিনিয়োগকারীদের আলাদা একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল দেওয়ার প্রস্তাব করেন তিনি।
স্বাগত বক্তব্য দেন যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট এবং যুক্তরাষ্ট্র চেম্বার অব কমার্সের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট (সাউথ এশিয়া) অ্যাম্বাসাডর অতুল কেশপ। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের সিনিয়র নির্বাহী এবং যুক্তরাষ্ট্র চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুজানা পি ক্লার্কের সঙ্গে বৈঠক করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে সংস্থাটির সদর দপ্তরের শিহাতা সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে ৫০ বছরের অংশীদারত্ব উপলক্ষে এ মতবিনিময় হয়।
সরকারপ্রধান বলেন, বিশ্বব্যাংক এখন বাংলাদেশে ১৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয়সাপেক্ষ ৫৩টি বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং এ অর্থ এ পর্যন্ত ব্যাংকের দেওয়া ৩৯ বিলিয়ন ডলারের অনুদান ও ঋণের অংশ।
তিনি বলেন, ‘মানব পুঁজি গঠনে আমাদের কর্মক্ষমতা অবকাঠামো মেগা-প্রকল্পে আমাদের বিনিয়োগের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। বাংলাদেশের নিজস্ব আর্থিক ও কারিগরি সংস্থান দিয়ে ৬.১ কিলোমিটার পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ আমাদের অর্থনৈতিক পরিপক্বতার লক্ষণ।’
প্রধানমন্ত্রী পরে বিশ্বব্যাংক দপ্তরের ইস্ট ডাইনিং রুমে সংস্থার প্রেসিডেন্ট, ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এমডি) এবং ভাইস প্রেসিডেন্টদের (ভিপি) সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনের পর একটি উচ্চপর্যায়ের মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেন। পরে তিনি বিশ্বব্যাংকের প্রেস্টন অডিটরিয়ামে ‘বিশ্বব্যাংক-বাংলাদেশ অংশীদারত্বের ৫০ বছর বিষয়ে প্রতিফলন’ শীর্ষক বক্তৃতা দেন।
প্রধানমন্ত্রী অর্থনৈতিক অগ্রগতি, দারিদ্র্য হ্রাস, করোনা মহামারী মোকাবিলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ হলো সহিষ্ণুতা। আমরা গণহত্যার পর আমাদের স্বাধীনতা অর্জন করেছি এবং ১৯৭১ সালে ধ্বংসের মুখে থাকা একটি অর্থনীতি নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলাম।’