বায়ু দূষণে বাড়ছে অ্যাজমা রোগী
বিশ্বেজুড়ে প্রতিদিন ১ হাজার মানুষ অ্যাজমাজনিত সমস্যা নিয়ে মৃত্যুবরণ করে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মতে, বিশ্বে প্রায় ৩০ কোটি মানুষ অ্যাজমা রোগে আক্রান্ত। বায়ু দূষণের কারণে অ্যাজমা রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়েছে।
মঙ্গলবার (২ মে) বিশ্ব অ্যাজমা দিবস উপলক্ষে নেয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে ডক্টর টিভি অনলাইনকে এসব জানান বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ ডা. মনিরুল ইসলাম।
১৯৯৮ সাল থেকে প্রতি বছর মে মাসের প্রথম মঙ্গলবারে ‘বিশ্ব অ্যাজমা দিবস’ হিসাবে পালিত হয়ে আসছে। ফুসফুসের দীর্ঘময়াদী রোগ অ্যাজমা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে এই দিবস পালন করা হয়ে থাকে। ২০১৮ সালের গ্লোবাল অ্যাজমা রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্বেজুড়ে প্রতিদিন ১ হাজার মানুষ অ্যাজমাজনিত সমস্যা নিয়ে মৃত্যুবরণ করে।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের তথ্যমতে, অ্যাজমা (Asthma) বা হাঁপানি রোগ বংশগত। কিন্তু, বর্তমানে বংশগত কারণের চেয়ে পরিবেশগত কারণেই অ্যাজমা বা হাঁপানি রোগীর সংখ্যা দিন-দিন বাড়ছে। ইদানিং শিশু ও বয়স্করাই অ্যাজমায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। বাংলাদেশের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ডিজিজ অফ দ্য চেস্ট অ্যান্ড হাসপাতালের (NIDCH) প্রকাশিত সমীক্ষায় এমনই তথ্য উঠে এসেছে।
বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ ডা. মনিরুল জানান, অ্যাজমা ফুসফুসের প্রদাহজনিত রোগ। এরফলে স্বাভাবিকের তুলনায় শ্বাসনালী সরু থাকে। অ্যাজমা রোগীর মধ্যে বেশকয়েকটি সুস্পষ্ট উপসর্গ থাকে। সেগুলো হলো- কাশি, শ্বাসকষ্ট, বুকে চাপ লাগা ও সাঁই-সাঁই শব্দ করা।
অ্যাজমা রোগীদের বেশ কয়েকটি রিস্কফ্যাক্টর উল্লেখ করেন ডা. মনিরুল ইসলাম। এগুলো হলো- ধুঁয়া, ধুলাবালি, জন্মগত কারণ, মানসিক চাপ, ধূমপান ও শ্বাসযুন্ত্রের সংক্রমণজনিত কারণে অ্যাজমা রোগ বেড়ে যায়।
এছাড়াও, ফুলের রেনু, ঘরবাড়ির ধুলা, কম্বল-তোষক ও পাপস-ম্যাটস ও কার্পেটে জমা ধুলা-জীবাণু অ্যাজমার কারণ।
বেশকিছু ওষুধের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াতেও অ্যাজমা বেড়ে যায়। যেমন- অ্যাসপিরিন জাতীয় ওষুধ. বিটা-ব্লকার ও ব্যাথানাশক ওষুধ।
অ্যাজমার প্রতিকার
অ্যাজমার প্রতিকার সম্পর্কে বেশকিছু পরামর্শ দিয়েছেন ডা. মনিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, অ্যাজমা রোগীদেরকে অবশ্যই ধুঁয়া ও ধুলাবালি পরিহার করতে হবে। ধূমপান পরিহার করতে হবে। ব্যায়াম করতে হবে। যে ওষুধ খেলে শ্বাসকষ্ট হয়, সেগুলো (অ্যাসপিরিন জাতীয় ওষুধ. বিটা-ব্লকার ও ব্যাথানাশক ওষুধ) পরিহার করতে হবে।
বসবাসের জায়গায় পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা রাখতে হবে। স্যাঁতসেতে জায়গা পরিহার করতে হবে।
কার্পেটের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। লোমশ প্রাণী যেমন, কুকুর ও বেড়ালের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে। স্বাস্থ্যকর খাবার যেমন- শাকসবজি ও ফলমূল নিয়মিত খেতে হবে। ওজন কমাতে হবে।