নারায়ণগঞ্জে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে ডায়রিয়ার প্রকোপ
দৈনিক প্রায় ১১৫ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
তীব্র গরমে নারায়ণগঞ্জে বাড়ছে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা।
গত ১০ দিনে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে প্রায় সহস্রাধিক ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন।
চিকিৎসকরা বলছেন, তীব্র গরম ও জলবায়ু পরিবর্তনের পাশাপাশি দূষিত পানি এবং বাইরের খাবার খাওয়ার কারণে মানুষ ডায়রিয়া আক্রান্ত হচ্ছেন। হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের ১০টি বেডে সবসময় রোগী ভর্তি থাকছে। কখনো কখনো বাইরে রাখা অতিরিক্ত বেডেও চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের নার্সদের ঈদুল ফিতরের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ শহরের হাজীগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা সজল জানান, হঠাৎ করেই আমার বাচ্চার পাতলা পায়খানা শুরু হয। এতে সে দুর্বল হয়ে পড়লে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে এসেছি।
আব্দুর রহমান নামে একজন জানান, সকাল থেকেই আমার স্ত্রীর ঘনঘন বমি হচ্ছিল। দুপুরে সে
অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়ায় হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। হাসপাতালে নিয়ে আসার পর ডাক্তাররা তাকে স্যালাইন দিয়েছে।
প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১১৫ জন করে ডায়রিয়া রোগী আসছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন ডায়রিয়া ওয়ার্ডের সিনিয়র সাব নার্স মেরী রিমি। তিনি আরো জানান, ঈদের আগে থেকেই রোগী বাড়ছিল। কিন্তু ঈদের পর থেকে বেশি পরিমাণে বাড়তে শুরু করেছে। আমাদের ধারণা গরম কিংবা পানির সমস্যার কারণে রোগীরা ডায়রিয়া আক্রান্ত হচ্ছে।
প্রতি বছরের মে, জুন ও জুলাই এই তিন মাসে গরম বেশি থাকায় স্বাভাবিকভাবেই ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়ে থাকে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক গোলাম মোস্তফা। এছাড়া এখন জলবায়ু পরিবর্তন, দূষিত পানি এবং বাইরের খাবারও ডায়রিয়া রোগী বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান কারণ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. মুশিউর রহমান জানান, ঈদের ছুটিতে মানুষ এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়ায় খাওয়া দাওয়ার পরিবর্তন হয়েছে। ফলে ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। দিনে ৭০ থেকে ১০০ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী আসছে। যাদের অবস্থা গুরুতর তাদের ভর্তি রাখা হচ্ছে। আর যাদের ছেড়ে দেওয়ার মতো তাদের চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।