পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে কর্মকর্তাকে হত্যার অভিযোগ

ডক্টর টিভি রিপোর্ট
2023-04-06 03:56:54
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে কর্মকর্তাকে হত্যার অভিযোগ

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মেডিকেল অফিসার মো. মনোয়ারুল হক

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে মো. মনোয়ারুল হক নামের এক কর্মকর্তাকে হত্যার অভিযোগ ওঠেছে। নিহত মো. মনোয়ারুল হক পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মেডিকেল অফিসার ছিলেন। 

 এর আগে তিনি নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। 

পরিবারের বরাত দিয়ে দেশের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো  এ নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

পরিবারের অভিযোগ, মনোয়ারুলকে হত্যা করা হয়েছে। 

নিহত মনোয়ারুলের ভাই সাবেক সেনাকর্মকর্তা মনিরুল হক অভিযোগ করেন, তাঁর ভাইয়ের স্পর্শকাতর স্থানে আঘাত করে হত্যার পর লাশ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

মনোয়ারুল সপরিবার পুরান ঢাকার নারিন্দায় থাকতেন। তাঁর দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। গ্রামের বাড়ি বগুড়া সদরে। মনোয়ারুলের ভাই মনিরুল হক সাবেক ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তা। তিনি র‍্যাব-৮–এর অধিনায়কেরও দায়িত্বে ছিলেন। 

মনোয়ারুলের ভাই মনিরুল হক বলেন, মনোয়ারুলের ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর অবসরে যাওয়ার কথা ছিল। গত সোমবার মনোয়ারুল পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে গিয়ে দেখেন তাঁর ব্যাপারে সেই একই অডিট আপত্তি দেওয়া হয়েছে। তখন বিষয়টি সচিবকে জানালে কেন এখনো মনোয়ারুলের পেনশনের কার্যক্রম শুরু করা হলো না, সে বিষয়ে কারণ দর্শাতে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদকে নোটিশ দেন। জবাব দিতে তিন কর্মদিবস সময় বেঁধে দেন তিনি। 

বিষয়টি ভাই তাঁকে জানিয়েছিলেন। সে কারণে তাঁর ভাইকে গোপনস্থানে আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা মনিরুল।

মঙ্গলবার দুপুরে তেজগাঁও থানা–পুলিশ কারওয়ান বাজারে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ভবনের ১২তলার ১২০১ নম্বর কক্ষের তালা খুলে মনোয়ারুলের লাশ উদ্ধার করে। গলায় গামছা প্যাঁচানো অবস্থায় ওই কক্ষের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় ছিলেন তিনি। পরে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়। কক্ষটি ছিল পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা (অডিট) আবুল কালাম আজাদের।

এ বিষয়ে পরিকল্পনা অধিদপ্তরের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, প্রায় দুই কোটি টাকার অডিট আপত্তির ঘটনায় মনোয়ারুলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছিল। সেই মামলার রায়ে তাঁর এক বছরের বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি স্থগিত করে দেওয়ার পাশাপাশি তাঁকে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তিনি দাবি করেন, মনোয়ারুলের বিরুদ্ধে নতুন তদন্তে আরও ১ কোটি ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তিনি প্রতিবেদন দিয়েছিলেন। এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিতেই মনোয়ারুল অধিদপ্তরে এসেছিলেন। এসব নিয়ে হতাশা থেকেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন।

পুলিশ বলছে, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। এ ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর।


আরও দেখুন: