৫১ সরকারি হাসপাতালে ‘প্রাইভেট চেম্বার’ উদ্বোধন
পাইলট প্রকল্প হিসেবে ১২টি জেলা সদর হাসপাতাল ও ৩৯টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হবে এ কার্যক্রম
সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকদের নির্ধারিত ডিউটি শেষে চেম্বার করার কার্যক্রম উদ্বোধন করেছে সরকার।
বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠানে পরীক্ষামূলকভাবে জেলা পর্যায়ে ১২টি এবং উপজেলা পর্যায়ে ৩৯টি হাসপাতালে এ সেবা উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘চিকিৎসকরা বিকেলে নিজ কর্মস্থলে বসে রোগী দেখবেন। বৃহস্পতিবার থেকে পাইলট প্রকল্প হিসেবে আমরা প্রাতিষ্ঠানিক প্র্যাকটিস শুরু করতে যাচ্ছি। এতে বিকেল ৩টা থেকে সাধারণ মানুষ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের কাছ থেকে সেবা নিতে পারবেন।’
দুপুর আড়াইটার পরে সরকারি চিকিৎসকদের দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তারপর ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত তারা চেম্বার প্র্যাকটিস করতে পারবেন। তারা নিজ হাসপাতালে বসে রোগী দেখবেন, রোগীদের সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করতে পারবেন।’
চলতি বছরের মধ্যে বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় এ কার্যক্রম চালু করার আশা প্রকাশ করেন তিনি। জাহিদ মালেক বলেন, ‘অল্প-সময়ের নোটিসে আজকে যেসব হাসপাতাল প্রস্তুত হতে পেরেছে, তাদের যুক্ত করেছি। প্রথমে আমরা ২০টি উপজেলার কথা বলেছিলাম, এখন তা ৩৯টি হয়েছে। কারণ এরা সবাই প্রস্তুত, আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আমরা আশা করছি, এ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের সব হাসপাতালেই এই প্রাতিষ্ঠানিক প্রাকটিস চালু করতে পারব।’
এর আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল ইউনিভার্সিটি (বিএসএমএমইউ) প্রথম হাসপাতালেই চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত রোগী দেখার সুযোগ করে দেয়। স্বায়ত্তশাসিত এই প্রতিষ্ঠানের পর বেসরকারি বারডেমও একই পথ অনুসরণ করে।
এখন সরকারি হাসপাতালেও একই ধারা চালু করল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। গত সোমবার সচিবালয়ে ‘ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস নীতিমালা ২০২৩’ সংক্রান্ত সভা শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ‘চিকিৎসক সপ্তাহে দুদিন বেলা ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত নির্ধারিত ফি’র বিনিময়ে রোগী দেখতে পারবেন। নার্স ও টেকনিশিয়ানরাও সপ্তাহে দুদিন করে কাজ করবেন। এছাড়া বৈকালিক সেবা নিতে আসা রোগীদের বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফি ও নির্ধারণ করে দেওয়া হবে।’
প্রাথমিকভাবে যেসব সরকারি হাসপাতালে ‘বৈকালিক চেম্বার’ চালু হলো তার একটি তালিকা সরবরাহ করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
ঢাকা বিভাগ
মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতাল, রাজবাড়ী জেলা সদর হাসপাতাল, ঢাকার সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
চট্টগ্রাম বিভাগ
ফেনী জেলা সদর হাসপাতাল এবং ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল এবং পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতাল, নোয়াখালী সেনবাগ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং বান্দরবানের লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
ময়মনসিংহ বিভাগ
চার জেলার মধ্যে জামালপুর জেলা সদর হাসপাতাল এবং সরিষাবাড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, শেরপুরের নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
খুলনা বিভাগ
চার জেলায় এই বৈকালিক সেবা চালু হচ্ছে। এগুলো হলো- ঝিনাইদহ জেলা সদর হাসপাতাল, যশোরের মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মাগুরার শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
রাজশাহী বিভাগ
তিন জেলায় বৈকালিক সেবা চালু হচ্ছে। এগুলো হলো- নওগাঁ জেলা সদর হাসপাতাল এবং সাপাহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, রাজশাহীর পবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
রংপুর বিভাগ
ঠাকুরগাঁও জেলা সদর হাসপাতাল, কুড়িগ্রাম জেলা সদর হাসপাতাল, দিনাজপুরের ফুলবাড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, রংপুরের বদরগঞ্জ এবং গংগাচরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নীলফামারীর ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
বরিশাল বিভাগ
ভোলা জেলা সদর হাসপাতাল এবং চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বরগুনার আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বরিশালের আগৈলঝড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
সিলেট বিভাগ
সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতাল এবং ছাতক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সিলেটের গোপালগঞ্জ এবং বিশ্বনাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।