ডা. সাজ্জাদকে মারধরের নেপথ্যেও প্রলয় গ্যাং

অনলাইন ডেস্ক
2023-03-28 14:25:23
ডা. সাজ্জাদকে মারধরের নেপথ্যেও প্রলয় গ্যাং

প্রলয় গ্যাংয়ের সদস্যরা

বিজয় একাত্তর হলের সামনে এক শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনার পর আলোচনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থীকে নিয়ে গঠিত প্রলয় গ্যাং।

এবার গত বছরের আগস্টে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক সাজ্জাদ হোসাইনকে মারধরেও এ গ্যাং জড়িত ছিল বলে জানা যাচ্ছে। এই গ্যাংয়ের সদস্যরা এভাবে বিভিন্নজনকে মারধরের গল্প গর্বভরেই বলে বেড়ান বলে জানাচ্ছেন তাদের বন্ধুরা।

গত ২৫ মার্চ রাত ৮টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিজয় একাত্তর হলের (হল চত্বর) সামনে অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী জোবায়ের ইবনে হুমায়ুনকে মারধর করেন প্রলয় গ্যাংয়ের সদস্যরা। মূলত শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনা অনুসন্ধান করতে গিয়েই বেরিয়ে আসে প্রলয় গ্যাং নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

এখন জানা যাচ্ছে, গত বছর ৮ আগস্ট ঢামেক হাসপাতালের ইন্টার্ন ডা. সাজ্জাদ হোসাইনকে মারধর করে এ গ্যাংয়ের সদস্যরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে গ্যাং সদস্যদের এক বন্ধু বলেন, গ্যাংয়ের সদস্য মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল ও ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের ফয়সাল আহমেদ সাকিব ঢামেকের ইন্টার্ন ডা. সাজ্জাদের বুকে লাথি মারেন। উপর্যুপুরি চড়-থাপ্পড় কিল-ঘুষি মারেন শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের তবারক মিয়া। এরপর এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করেন কবি জসীমউদ্‌দীন হল ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাদ এবং একই হলের রহমান জিয়া, ফিন্যান্স বিভাগের মোশারফ হোসেন, বঙ্গবন্ধু হলের মুরসালীন আহমেদ ফাইয়াজ। সবাই তখন মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন।

তিনি আরও বলেন, সেদিন (৮ আগস্ট, ২০২২) শহীদ মিনারে ডা. সাজ্জাদ হোসেন একা বসা ছিলেন। এ সময় প্রলয় গ্যাংয়ের সদস্যরা গিয়ে তার পরিচয় জিজ্ঞেস করেন।  আইডি কার্ড না দেখানোয় একপর্যায়ে তাকে মারধর শুরু করেন তারা। সেদিন গ্যাংয়ের সব সদস্য একসঙ্গে ছিলেন।

প্রলয় গ্যাংয়ের সদস্যদের ছবি দেখালে ডা. সাজ্জাদ হোসাইন তাদের কয়েকজনকে শনাক্ত করতে পেরেছেন। ছবি দেখে প্রলয় গ্যাংয়ের সদস্য, শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগ ও মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের শিক্ষার্থী তবারক মিয়াও ওই সময় উপস্থিত থাকতে পারেন বলে জানান ডা. সাজ্জাদ।

তিনি বলেন, ‘পরে তবারকের এক বড় ভাই আমাকে কল দিয়ে বলেন, সে খুব অসহায়, তাকে ফাঁসাতে নাম দেওয়া হয়েছে। পরে আমি তাই মনে করছিলাম, এখন গণমাধ্যমের সংবাদ দেখে মনে হচ্ছে, তবারক অপরাধী। ঢাবি মেডিকল সেন্টারের বিপরীত পাশেই এ ঘটনা ঘটেছিল। তাদের কার্যালয় যেহেতু ঢাবি মেডিকেলের তৃতীয় তলায়, সব দিক থেকে আমার সন্দেহ হচ্ছে, এরাই আমাকে মারধর করেছে।’

এ শাহবাগ থানার ওসি নুর মোহাম্মদ বলেন, জোবায়েরকে মারধরের মামলায় তদন্ত চলমান। তবে ইন্টার্ন চিকিৎসককে মারধরের বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি।

উল্লেখ্য, শহীদ মিনারে ডা. সাজ্জাদকে মারধরের ঘটনায় ওই সময় শাহবাগ থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি হয়নি। ওই ঘটনায় ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও কর্মবিরতি করেছিল।


আরও দেখুন: