১৩০০ কিডনি প্রতিস্থাপনের বিরল নজির ডা. কামরুলের

ডক্টর টিভি রিপোর্ট
2023-03-16 11:20:28
১৩০০ কিডনি প্রতিস্থাপনের বিরল নজির ডা. কামরুলের

কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য তিনি কোনো পারিশ্রমিকই নেন না

অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম। দেশে কিডনি প্রতিস্থাপনে কিংবদন্তিতুল্য চিকিৎসক। বুধবার (১৫ মার্চ) তিনি স্পর্শ করেছেন নতুন আরেক মাইলফলক। গড়েছেন একাই ১ হাজার ৩০০ কিডনি প্রতিস্থাপনের নজির।

রাজধানীর শ্যামলীতে নিজের প্রতিষ্ঠিত সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি (সিকেডি) হাসপাতালে এক রোগীর কিডনি প্রতিস্থাপনের মধ্য দিয়ে এ কীর্তি গড়েন অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম।

শুধু চিকিৎসক হিসেবে নন, ডা. কামরুল পরিচিত তার মহানুভবতার জন্যও। কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য তিনি কোনো পারিশ্রমিকই নেন না। তার প্রতিষ্ঠিত সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি (সিকেডি) হাসপাতালে খরচও ন্যূনতম। রোগীদের ফলোআপে উৎসাহিত করতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও রিপোর্ট দেখার ফি নেওয়া হয় না। এ ছাড়া খরচ কমাতে কিডনি সংরক্ষণের জন্য বিদেশ থেকে আমদানি করা এক ধরনের দামি তরলের বিকল্প তৈরি করেছেন তিনি।

অধ্যাপক কামরুল ১৯৯৩ সালে স্বাস্থ্য ক্যাডারে যোগ দেন। তিনি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। প্রথমবার সফলভাবে কিডনি প্রতিস্থাপনের কাজ করেন ২০০৭ সালে। ২০১১ সালে সরকারি চাকরি ছেড়ে দরিদ্র রোগীদের কম মূল্যে কিডনি প্রতিস্থাপন ও চিকিৎসাসেবা দিতে ২০১৪ সালে সিকেডি গড়ে তোলেন তিনি।

নানা সীমাবদ্ধতা ও জটিলতায় সরকারি পর্যায়ে কিডনি প্রতিস্থাপনের সংখ্যা যেখানে নগণ্য, সেখানে সিকেডিতে প্রতি সপ্তাহে অন্তত চারটি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে। দেশে প্রথম কিডনি প্রতিস্থাপন হয় ১৯৮২ সালে। এখন পর্যন্ত সাড়ে ৩ হাজারের মতো কিডনি প্রতিস্থাপন হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৩০০ কিডনিই প্রতিস্থাপন করেছেন ডা. কামরুল। চিকিৎসাবিদ্যায় অসামান্য অবদানের জন্য ২০২২ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন তিনি।

অধ্যাপক কামরুল ছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) ৪০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। ১৯৮২ সালে ঢামেক থেকে আটটি মেডিকেল কলেজের সম্মিলিত ভর্তি পরীক্ষায় তিনি প্রথম স্থান অর্জন করে স্বর্ণপদকসহ এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৯৫ সালে এফসিপিএস এবং ২০০০ সালে বিএসএমএমইউ থেকে ইউরোলজিতে এমএস ডিগ্রি অর্জন করেন।

উচ্চশিক্ষা নেন রয়্যাল কলেজ অব সার্জনস অব এডিনবার্গ থেকে। মুক্তিযুদ্ধের সময় ডা. কামরুলের বাবা আমিনুল ইসলাম পাকশী ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউটে কর্মরত ছিলেন। মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করায় ওই সময় স্থানীয় রাজাকার ও বিহারিরা তাকে হত্যা করে।


আরও দেখুন: