গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৭ জনের পরিচয় মিলেছে
মঙ্গলবার রাতে ঢামেক হাসপাতালে স্বজনরা একে একে মরদেহগুলো শনাক্ত করেন।
রাজধানী ঢাকার গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারের বিস্ফোরণে নিহত ১৭ জনের পরিচয় মিলেছে।
মঙ্গলবার (৭ মার্চ) রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই তালিকা প্রকাশ করে।
এ ঘটনায় আরও শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার রাতে ঢামেক হাসপাতালে স্বজনরা একে একে মরদেহগুলো শনাক্ত করেন।
নিহতদের মধ্যে ১৭ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- কুমিল্লার মেঘনার তিথিরচড় গ্রামের মমিনের ছেলে সুমন (২১), সুমনের মরদেহ তার বাবা মমিন শনাক্ত করেন। বংশাল সুরিটোলা এলাকায় থাকতেন সুমন। বরিশাল সদর উপজেলার কাজিরহাট গ্রামের মৃত দুলাল মৃধার ছেলে ইসহাক মৃধা (৩৫)। মরদেহ শনাক্ত করেন ফুফাতো ভাই হুমায়ুন কবির খান। ইসলামপুরে কাপড়ের ব্যবসা করতেন ইসহাক মৃধা। যাত্রাবাড়ীর শেখদির মোশারফ হোসেনের ছেলে মনসুর হোসেন (৪০)। মরদেহ শনাক্ত করেন নিহতের ভায়রা মুরাদ হোসেন। বংশাল আলুবাজার এলাকার মৃত হোসেন আলীর ছেলে ইসমাইল হোসেন (৪২)। মরদেহ শনাক্ত করেন ভাই আব্দুল কুদ্দুস। চাঁদপুরের মতলবের পশ্চিম লালপুর গ্রামের বিল্লাল হোসেনের ছেলে আল আমিন (২৩)। তার মরদেহ শনাক্ত করেন ভাই হাবিবুর রহমান। আলামিন বেসরকারি কলেজে বিবিএর ছাত্র। কেরানীগঞ্জের চুনকুঠিয়া এলাকার জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে রাহাত (১৮) শনাক্ত করেন ভাই রাকিবুল হাসান। চকবাজার ইসলামবাগের আবুল হাসেমের ছেলে মমিনুল ইসলাম (৩৮)। তার স্ত্রী নদী বেগম (৩৫)। তাদের মরদেহ শনাক্ত করেন চাচা জয়নাল আবেদীন। মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের মৃত সমির উদ্দিনের ছেলে মাঈন উদ্দিন (৫০) শনাক্ত করেন ছেলে মাহমুদুল হাসান। বংশালের কেপি ঘোষ স্ট্রিটের ইউনুছ আলীর ছেলে নাজমুল হোসেন (২৫)। তার মরদেহ শনাক্ত করেন খালাতো শোভন। মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বেউথা গ্রামের মৃত সাহেব আলীর ছেলে ওবায়দুল হাসান বাবুল (৫৫),তার মরদেহ শনাক্ত করেন মেয়ে জামাই চাতক সিকদার। মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার বালুয়া কান্দি গ্রামের মৃত মোজাম্মেল হকের ছেলে আবু জাফর সিদ্দিক (৩৪)। মরদেহ শনাক্ত করেন খালাতো ভাই রাশেদুল হাসান। বংশালের আগামাসি লেনের মৃত আনোয়ারুল ইসলামের স্ত্রী আকুতি বেগম (৭০)। তার মরদেহ শনাক্ত করেন খালাতো ভাই শাজাহান সাজু। শরীয়তপুরের নড়িয়ার কাঠাকুলি গ্রামের মৃত কালাচাঁন মিয়ার ছেলে ইদ্রিস মিয়া (৬০)। তার মরদেহ শনাক্ত করেন তার ছেলে রিফাত। তিনি জানান, বর্তমানে যাত্রাবাড়ীর মীর হাজারীবাগ এলাকায় থাকেন এবং তার বাবা আজাদ স্যানেটরি দোকানে কাজ করতেন। যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইল এলাকার মৃত আলী মোহাম্মদ ভুইয়ার ছেলে নুরুল ইসলাম ভুইয়া (৫৫)। মরদেহ শনাক্ত করেন ভাই মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ভূঁইয়া। তার ভাই ওই ভবনের ইউসুফ স্যানেটারির দোকানের মালিক। কিশোরগঞ্জ করিমগঞ্জ থানার উলুকাঠা গ্রামের হাশেম মিয়ার ছেলে হৃদয় (২০)। মরদেহ শনাক্ত করেন তার বাবা। তিনি জানান, বংশাল সিদ্দিক বাজার এলাকায় থাকেন তারা। কিছুই করতো না।
ঢাকার কেরানীগঞ্জ কালিগঞ্জের মো. দুলাল মিয়ার ছেলে আব্দুল হাকিম সিয়াম (১৮)। ছেলের মরদেহ শনাক্ত করে দুলাল হোসেন জানান, সিয়াম জয়নাল স্যানেটারি স্কুলে কাজ করত। আহতাবস্থায় পথচারীরা সিয়ামকে হাসপাতালে ভর্তি করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০টার দিকে মারা যায়।
এদিকে ঢামেক হাসপাতালের টিকিট কাউন্টার থেকে দায়িত্বরত মো. সুমন জানান, সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনার পর থেকে রাত পৌনে ১২টা পর্যন্ত ১৭২ জন টিকিট নিয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন ও ১৮ জনকে ভর্তি দেওয়া হয়েছে।