দেশের চিকিৎসাখাতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্মৃতিপদক ২০২৩  লাভ করলেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ইমেরিটাস অধ্যাপক এ বি এম আব্দুল্লাহ। এ বছর চিকিৎসা, শিক্ষা, সাহিত্য, প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা, সাংবাদিকতা, সঙ্গীত, সংস্কৃতি পুরুষ ও নারীসহ নয়টি ক্যাটাগরিতে নয়জন গুণী ব্যক্তিকে সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।

শুক্রবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের শহীদ ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত ভাষা চত্বরে গুণীজন সংবর্ধনা পরিষদ আয়োজনে এই সম্মাননা প্রদান করা হয়।

সত্যনিষ্ঠ, সত্যের কন্টকময় পথে অবিরাম পথচলা একজন খাঁটি মানুষ অধ্যাপক এ বি এম আব্দুল্লাহ। গণমানুষের ভালোবাসার চিকিৎসক মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক , একজন শিক্ষক, শিক্ষকের শিক্ষক। 

করোনাকালে অধ্যাপক এ বি এম আব্দুল্লাহ জাতিকে দিক নির্দেশনা দিয়েছেন, দিয়েছেন নানা পরামর্শ। বাংলাদেশ টেলিভিশন সহ সকল গণমাধ্যমে সচেতনতামূলক বক্তব্য দিয়ে তিনি রেখেছেন সাহসী এবং বলিষ্ঠ ভূমিকা।

দেশের চিকিৎসা শিক্ষা, চিকিৎসাসেবা ও গবেষণাসহ সামগ্রিক পেশার উন্নয়ন, মর্যাদা বৃদ্ধি ও সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখতে অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহর অসামান্য অবদান রয়েছে।
এ পর্যন্ত দেশি-বিদেশি ১৩টি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ।
গত বছরের এপ্রিল মাসে মেডিসিনের বাইবেলখ্যাত পাঠ্যপুস্তক ডেভিডসনস’ প্রিন্সিপ্যাল অ্যান্ড প্র্যাকটিস অব মেডিসিন’র ২৪তম আন্তর্জাতিক সংস্করণের উপদেষ্টা বোর্ডের সদস্য মনোনীত হন প্রখ্যাত এ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ। গবেষণায় অবদানের জন্য ২০১৬ সালে সরকার তাঁকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করেন। ২০১৭ সালে তিনি বাংলা একাডেমি সম্মানসূচক ফেলোশিপ অর্জন করেন।

অধ্যাপক এ বি এম আব্দুল্লাহ ১৯৫৪ সালে জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার হাড়িয়াবাড়ী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

নিজ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তাঁর শিক্ষাজীবনের হাতেখড়ি। ১৯৬৯ সালে ইসলামপুর নেকজাহান উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং ১৯৭২ সালে ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন এবং ১৯৭৮ সালে এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করেন ।

পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজে মেডিকেল অফিসার হিসেবে হিসেবে যোগদান করেন ডা. আব্দুল্লাহ। এরপর চলে যান সৌদি আরবে। সেখানে পাঁচ বছর চিকিৎসক হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর উচ্চশিক্ষার জন্য ১৯৯২ সালে চলে যান লন্ডনে।

যুক্তরাজ্যের রয়্যাল কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স থেকে এমআরসিপি ডিগ্রি লাভ করে দেশে এসে হলিফ্যামিলি মেডিকযাল কলেজের মেডিসিন বিভাগে দুই বছর পরামর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৯৫ সালে পিএসসি পরীক্ষার মাধ্যমে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (তৎকালীন আই পিজিএম এন্ড আর ) এ যোগদান করেন।

পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিসিন অনুষদের ডিন ও মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসরে যান অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ।