‘প্রাইভেট চেম্বারে’ সর্বোচ্চ ফি ৩০০ টাকা

অনলাইন ডেস্ক
2023-02-22 15:18:01
‘প্রাইভেট চেম্বারে’ সর্বোচ্চ ফি ৩০০ টাকা

রোগীপ্রতি চিকিৎসকের সর্বোচ্চ ফি ৩০০ ও সর্বনিম্ন ১৫০ টাকা

মার্চ থেকে সরকারি হাসপাতালে বৈকালিক ‘প্রাইভেট চেম্বার’ চালুর খসড়া নীতিমালা করেছে সরকার। এতে চিকিৎসক তার অফিস সময়ের পর নিজ কর্মস্থলে বসে রোগী দেখবেন। এ জন্য রোগীপ্রতি চিকিৎসকের সর্বোচ্চ ফি ৩০০ ও সর্বনিম্ন ১৫০ টাকা। খবর প্রথম আলোর।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শুরুতে দেশের ৮৩টি সরকারি হাসপাতালে ‘প্রাইভেট চেম্বার’ চালু করতে চায়। আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে দেশের সব সরকারি হাসপাতালে এ সেবা চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।

‘প্রাইভেট চেম্বার’ চালুর বিষয়ে গত ২২ জানুয়ারি একটি কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সাইদুর রহমানকে কমিটির প্রধান করা হয়। প্রথমে ২০ জনকে কমিটির সদস্য করা হয়। পরে আরও ছয়জনকে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

সূত্র জানায়, কমিটি এখন পর্যন্ত দুটি বৈঠক করেছে। ‘প্রাইভেট চেম্বার’ কীভাবে চলবে, তা নিয়ে ‘ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস’ নামের একটি খসড়া নীতিমালা ইতিমধ্যে তৈরি করেছে কমিটি। নীতিমালাটি চূড়ান্ত করতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার কমিটির শেষ বৈঠক হবে। বৈঠকে নীতিমালা চূড়ান্ত করে তা মন্ত্রণালয়কে দেওয়া হবে।

কমিটির প্রধান সাইদুর রহমান বলেন, ‘নীতিমালা চূড়ান্ত করতে আরেকটি বৈঠক ডাকা হয়েছে। আমরা আশা করছি, মার্চের মধ্যেই সরকারি হাসপাতালে প্রাইভেট প্র্যাকটিস চালু সম্ভব হবে।’

খসড়া নীতিমালায় বলা হয়েছে, অফিস সময়ের পর নিজ কর্মস্থলে চিকিৎসকেরা যে প্রাইভেট চেম্বার করবেন, তার সময় হবে বেলা ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা। সেবা পেতে রোগীকে টিকিট কাটতে হবে।

খসড়া নীতিমালা অনুযায়ী, জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকের ফি হবে ৩০০ টাকা। কনিষ্ঠ চিকিৎসকের ফি ১৫০ টাকা। ফি থেকে জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক পাবেন ২০০ টাকা। তার সহায়তাকারী পাবেন ৫০ টাকা। বাকি ৫০ টাকা সরকারি তহবিলে জমা পড়বে। ফি থেকে কনিষ্ঠ চিকিৎসক পাবেন ১০০ টাকা। তার সহায়তাকারী পাবেন ২৫ টাকা। বাকি ২৫ টাকা যাবে সরকারি তহবিলে।

খসড়া নীতিমালায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ফি রাখা হয়েছে ১৫০ টাকা। জেলা-উপজেলা পর্যায়ে যদি জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক থাকেন, সে ক্ষেত্রে ফি একই থাকবে কি না, এমন প্রশ্নে কমিটির এক সদস্য বলেন, ২৩ ফেব্রুয়ারির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্র বলছে, প্রাথমিকভাবে উপজেলা পর্যায়ের ৫০টি, জেলা পর্যায়ে ২০টি, বিভাগীয় ৮টি ও বিশেষায়িত ৫টি সরকারি হাসপাতালে প্রাইভেট চেম্বার চালু হবে। উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের হাসপাতাল ঠিক করা হবে রোগীর উপস্থিতির ওপর ভিত্তি করে। যেসব হাসপাতালে রোগী বেশি আসেন, সেখানে এ সেবা চালু করা হবে।

প্রাইভেট চেম্বারে কী কী সেবা দেওয়া হবে, তা খসড়া নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, কনসালটেশন, ডায়াগনস্টিক, ল্যাবরেটরি, রেডিওলজি, ইমেজিং ও সার্জিক্যাল সেবা দেওয়া হবে।

খসড়া নীতিমালায় বলা হয়, চিকিৎসকরা পালা করে রোগী দেখবেন। একজন অধ্যাপক সপ্তাহে দুই দিন, সহযোগী অধ্যাপক দুই দিন, সহকারী অধ্যাপক দুই দিন রোগী দেখবেন। চিকিৎসক যদি রোগীকে কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে দেন, রোগী চাইলে তা সরকারি হাসপাতালে করতে পারবেন। আবার বেসরকারি হাসপাতালেও করতে পারবেন।

গত ২২ জানুয়ারি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠক শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সাংবাদিকদের বলেছিলেন, সরকারি হাসপাতালে অফিস সময়ের পর চেম্বার করতে পারবেন চিকিৎসকেরা। এখন তা কার্যকর হতে যাচ্ছে।

নীতিমালার বিষয়ে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব এহতেশামুল হক চৌধুরী বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালে প্রাইভেট প্র্যাকটিস চালুর সুবিধা যেমন আছে, তেমনি অসুবিধাও আছে। এটি বাস্তবায়ন করতে হলে সবাইকে আস্থায় নিতে হবে। হুট করে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া সমীচীন হবে না।’


আরও দেখুন: