খুলনা ডেন্টাল কলেজ হবে বিশ্বমানের : অধ্যক্ষ
খুলনা ডেন্টাল কলেজের প্রজেক্ট মডেল
প্রস্তবনা অনুযায়ী নির্মাণ করা হলে বিশ্বমানের মেডিকেল শিক্ষা ও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান হবে খুলনা ডেন্টাল কলেজ হাসপাতাল। ডক্টর টিভি অনলাইনের সঙ্গে আলাপকালে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. অনুপম পোদ্দার। উল্লেখ্য, খুলনা ডেন্টাল কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. অনুপম পোদ্দার নিয়োগ পেয়েছেন গত ২১ ডিসেম্বর, ২০২২। এরপর থেকেই অর্পিত দায়িত্ব এগিয়ে নিতে জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. অনুপম পোদ্দার জানান, খুলনাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে খুলনায় ডেন্টাল কলেজ ও হাসপাতাল নির্মাণের ব্যাপারে ২০২০ সালের ৯ জানুয়ারি সম্মতি দেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর নগরীর লবণচরা থানার পাশে জায়গা নির্ধারণ করা হয়। ২০২০ সালের ২৮ অক্টোবর ২০ একর জমি চিহ্নিত করে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠায় খুলনা জেলা প্রশাসন। জমি অধিগ্রহণে ব্যয় ধরা হয় প্রায় ৬৮ কোটি টাকা। সবমিলিয়ে কলেজটি নির্মাণে মোট ব্যয় ধরা হয় ১৪শ’ কোটি টাকা।
পরের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ‘খুলনা ডেন্টাল কলেজ ও হাসপাতালের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা’ কার্যক্রম শুরু হয়। ওই বছর ২৯ নভেম্বর একজন প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ করা হয়। এরপর পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ‘বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট (বিআইএম)’ পরিচালিত সমীক্ষা কার্যক্রম সম্পন্ন হয়।
তিনি জানান, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই খুলনা ডেন্টাল কলেজের সম্ভাব্যতা যাচাই ও পিসিআর(প্রকল্প সমাপ্তি প্রতিবেদন) পরিকল্পনা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয় তা গ্রহণ করেছে। নিয়ম অনুযায়ী সেটি মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব বা ডিপিপি করে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি বা একনেকে পাঠানোর কথা। একনেকে প্রস্তাবনাটি অনুমোদনের পরই পরবর্তী কার্যক্রম শুরু হবে। তবে দ্রুত কাজটি সম্পন্ন করতে এখনই ডিপিপি করে একনেকে পাঠানো দরকার বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
নিয়ম অনুযায়ী- একনেকে অনুমোদনের পর দরপত্র আহ্বান করা হবে। এরপর ঠিকাদার নিযুক্ত হলে অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শুরু হবে খুলনা ডেন্টাল কলেজের। অবকাঠামো নির্মাণ কাজের দরপত্র আহ্বান করবে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।
তিনি জানান, কলেজে মোট ১২০টি আসন এবং হাসপাতালে ৫০০ শয্যা চালু করার জন্য তারা প্রস্তাবনা তৈরি করেছেন। একাডেমিক ভবনে মোট ২৮টি বিভাগ থাকবে। প্রশাসনিক ভবন হবে আট তলা। প্র্যাকটিক্যাল কক্ষ, বিভিন্ন ধরনের ল্যাব, বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক বিভাগ ও ৪০০ আসনের একটি লাইব্রেরি নির্মাণ করা হবে। থাকবে অডিটোরিয়াম, লেকচার গ্যালারি, শ্রেণিকক্ষ, টিউটোরিয়াল কক্ষ, ছাত্রছাত্রীদের জন্য পৃথক কমন রুম, ক্যাফেটেরিয়া প্রভৃতি। কলেজে মর্গ ও মরচুয়ারি এবং ডিএনএ টেস্টের আধুনিক ল্যাব থাকবে। এর পাশাপাশি অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, হোস্টেল সুপার ও হাসপাতাল পরিচালকের আবাসিক ভবন নির্মাণ করা হবে।
ডা. অনুপম পোদ্দার জানান, হাসপাতালে ৫০০ শয্যার পাশাপাশি অপারেশন থিয়েটার, জরুরি বিভাগ, আউটটোর, ফার্মেসি প্রভৃতি থাকবে। নির্মাণ করা হবে হাসপাতাল ভবন, প্রশাসনিক ভবন। বৈদ্যুতিক সাব স্টেশন, হেলিপ্যাড, মসজিদ, পুকুর, মাঠ ও জিমনেসিয়াম তৈরি করা হবে।
খুলনা ডেন্টাল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপনের জন্য প্রাথমিক চাহিদাপত্রে বলা হয়েছে, ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করা হবে প্রতি সেশনে ১২০ জন।
প্রস্তাবিত একাডেমিক ভবন হবে ২৮ টি স্বতন্ত্র ডিপার্টমেন্ট সমৃদ্ধ। এতে থাকবে প্রিক্লিনিক্যাল বিভাগসমূহ। সেগুলো হলো : এনাটমি, ডেন্টাল এনাটমি, ফিজিওলজি, বায়োকেমেস্ট্রি, সাইন্স অব ডেন্টাল মেটারিয়ালস এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, প্যাথলজি, মাইক্রোবায়োলজী, ফার্মাকোলজী, ডেন্টাল ফার্মাকোলজী, ওরাল প্যাথলজী, ডেন্টাল পাবলিক হেলথ, ডেন্টাল জুরিসপ্রডেন্স এন্ড ইথিক্স, ফরেনসিক মেডিসিন, মেডিকেল এডুকেশন এন্ড রিসার্চ ডিপার্টমেন্ট।
ক্লিনিকাল বিভাগ সমূহ: মেডিসিন, জেনারেল সার্জারী, সাইকেয়াট্রি, পেডিয়েট্রিক ডেন্টিস্ট্রি, পেরিওডন্টোলজী, ওরাল এন্ড ম্যাক্সিলোফেশিয়াল সার্জারী, কনজারভেটিভ ডেন্টিস্ট্রি এন্ড এন্ডোডনটিকস, অর্থোডন্টিকস ও ডেন্টোফেসিয়াল অর্থোপেডিকস, প্রস্থোডন্টিকস, ডেন্ট্রিষ্ট্রি, রেডিওলজী, এ্যানেসথেসিওলজী, ডেন্টাল ইমপ্লান্টোলজী এবং বিভাগ বিহীন ডিপার্টমেন্ট।
প্রশাসনিক ভবনে থাকবে কলেজ প্রশাসন শাখা, হিসাব শাখা, MIS/ HRM শাখা, পরিসংখ্যান শাখা, কলেজ স্টোর শাখা, কলেজ লাইব্রেরী শাখা, ছাত্র হোস্টেল শাখা, ছাত্রী হোস্টেল শাখা, সিকিউরিটি শাখা, পরিবহন শাখা, নির্মাণ ও মেরামত শাখা, ইউটিলিটি সার্ভিস শাখা ও অন্যান্য শাখা।
লাইব্রেরী : ৪০০ আসন সম্বলিত দশহাজার বর্গফুট ফ্লোরস্পেস বিশিস্ট স্বয়ংসম্পুর্ণ ইন্টারনেট সুবিধা সম্বলিত সেন্ট্রাল লাইব্রেরী থাকবে। এর অবস্থান হবে কলেজ একাডেমিক ভবনে। টিচার ও পোস্ট-গ্রাজুয়েটদের আলাদা বসার ব্যবস্থা থাকবে।
ই-লাইব্রেরী: থাকবে অধুনিক কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সুবিধা সমৃদ্ধ ই-লাইব্রেরী। ফটোকপি মেশিন থাকবে।
আবাসন : প্রিন্সিপাল, ভাইস-প্রিন্সিপাল, হোস্টেল সুপার, গেস্ট হাউস ও হাসপাতালের ডাইরেক্টরের ভবন, শিক্ষক, চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জনবল কাঠামো অনুযায়ী আবাসন ব্যবস্থা থাকবে।
থাকবে প্র্যাকটিক্যাল রুম (একাডেমিক ল্যাবরেটরি), বিভিন্ন ল্যাব সমূহ, স্পেশাল ল্যাব, ইমপ্লান্ট ও প্রস্থেসিস ল্যাব, সিমুলেশন সেন্টার, এনাটমি ডিসেকশন রুম, জেনারেল এনাটমি হিস্টোলজি রুম, ডেন্টাল এনাটমি ল্যাব, ফিজিওলজি, বায়োকেমেস্ট্রে ও মাইক্রোবায়োলজি প্র্যাকটিক্যাল রুম এবং ল্যাবরেটরি, প্যাথলোজি ল্যাব ও প্র্যাকটিক্যাল রুম, ওরাল প্যাথলোজি ল্যাব ও প্র্যাকটিক্যাল রুম।
ডায়াগনস্টিক বিভাগসমূহ : ফার্মাকোলজি ল্যাব ও প্র্যাকটিক্যাল রুম, ডেন্টাল ফারমাকোলজি প্র্যাকটিক্যাল রুম, সাইন্স অব ডেন্টাল মেটেরিয়ালস, পেরিওডন্টোলজি, প্রস্থোডন্টিকস, অর্থোডন্টিকস ও ডেন্টোফেসিয়াল অর্থোপেডিকস, ওরাল এন্ড ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জারী প্র্যাকটিক্যাল রুম ও ল্যাব সমূহ থাকবে। এগুলোর অবস্থান কলেজ একাডেমির ভবনে।
৭ হাজার বর্গ ফুট আয়াতনের সিমুলেশন সেন্টারের অবস্থান হবে কলেজ একাডেমির ভবনে।
ডেন্টাল ইমপ্লান্ট ও প্রস্থেসিস ল্যাবের অবস্থান হবে হাসপাতাল ভবনে।
হাসপাতালে আধুনিক ডায়াগনস্টিক বিভাগ থাকবে হাসপাতাল ভবনে।
স্পেশাল ল্যাব, ওরাল ও ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জারি ওটির জন্য আলাদা ফ্রোজেন সেকশন ল্যাব, RT PCR Lab, Radiology & Imaging Department (অত্যাধুনিক X-ray, CBCT, CT Scan, MRI ব্যবস্থা থাকবে। এর অবস্থান হবে হাসপাতাল ভবনে।
মাইক্রোবায়োলজি, বায়োকেমিস্ট্রি ও প্যাথলজি বিভাগের নমুনা সংগ্রহের জন্য ১টি রুম এবং রিএজেন্ট/মিডিয়া প্রিপারেশনের জন্য থাকবে ২টি রুম। অবস্থান হবে হাসপাতাল ভবনে।
অত্যাধুনিক ব্লাড ব্যাংক ও ট্র্যানইফউশন ডিপার্টমেন্ট থাকবে। অবস্থান হবে হাসপাতাল ভবনে।
আধুনিক ডিজিটাল সাউন্ড সিস্টেম সমৃদ্ধ অডিটোরিয়াম ভবন হবে ১০০০ আসন বিশিষ্ট।
২৫০ আসন বিশিষ্ট লেকচার গ্যালারি থাকবে কলেজ একাডেমি ভবনে। এটি হবে ৬টি আধুনিক ডিজিটাল সাউন্ড সিস্টেম বিশিষ্ট এসি লেকচার গ্যালারি।
টিউটোরিয়াল রুম : কলেজ একাডেমি ভবনে প্রতিটি ডিপার্টমেন্টের জন্য ৫০ আসন বিশিষ্ট ৩-৫টি এসি যুক্ত টিউটোরিয়াল রুম থাকবে।
থাকবে ভার্চুয়াল 3D লেকচার গ্যালরি। আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি সম্বলিত ২৫০ আসন বিশিষ্ট ১ টি 3D লেকচার গ্যালারির অবস্থান হবে কলেজ একাডেমি ভবনে।
Distance Learning Theatre (DLT)-এটি আধুনিক কম্পিউটার প্রযুক্তি সমৃদ্ধ দূর প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লাইভ অনলাইনে ক্লাস করার ব্যবস্থা থাকবে।
কলেজ একাডেমিক ভবনে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য পৃথক কমনরুম থাকবে যেখানে খেলাধুলা ও বিনোদনের ব্যবস্থা থাকবে। ১ টি ক্যাফেটেরিয়া ভবন থাকবে যেখানে দিনে ও রাতে খাবারের ব্যবস্থা থাকবে। ২ টি পরীক্ষা নেয়ার ২০০ আসন বিশিষ্ট এসি হল রুম যেখানে বিভিন্ন পরীক্ষার কেন্দ্র হিসাবে ব্যবহৃত হবে।
ক্লাব ঘর- ছাত্র-ছাত্রীদের Extra Academic Activity ও লিডারশিপ বিকাশের জন্য সন্ধানী, লিও ক্লাব, রোটারেক্ট ক্লাব, মেডিসিন ক্লাব ইত্যাদি বিভিন্ন ক্লাব ঘরের জন্য কলেজ একাডেমিক ভবনে আলাদা আলাদা বড় রুম থাকবে।
১ টি টিচিং মর্গ ও মরচুয়ারি ভবন থাকবে যা ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের অধীনে থাকবে।
১ টি আধুনিক ডিএনএ টেস্টিং ল্যাব থাকবে যা ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের অধীনে থাকবে।
৫০০ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক হাসপাতালে হবে। এর শয্যা/বেড নির্ধারণ যেভাবে করা হয়েছে-
ওরাল ও ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জারির জন্য ১৩৫টি বেড থাকবে। তন্মধ্যে- পুরুষ বেড ৬০টি, মহিলা বেড ৬০টি ও শিশু বেড ১৫টি।
নিউরোসার্জারির জন্য থাকবে ১০টি বেড।
এছাড়া অর্থোপেডিকসের ১০টি, ইএনটিতে ১০টি, প্লাস্টিক সার্জারি ১০টি, মেডিসিন ৫০টি, সার্জারি ৫০টি, অনকোলজি ১০টি, পেডোডন্টিকস ১০টি, অটিস্টিকস ১০টি, ক্যাজুয়ালটি-এক্সিডেন্ট এন্ড ইমার্জেন্সি বেড ৫০টি, প্রিভিলেজড ওয়ার্ড ২০টি, ডে কেস সার্জারী ওয়ার্ড ১০, কেবিন ৫০টি, স্টুডেন্টস কেবিন ৫টি, ডক্টরস কেবিন ৫টি, স্টাফ কেবিন ৫টি, ভিআইপি কেবিন ১০টি, আইসিইউ ১০টি, এইচডিইউ ১০টি, পোস্ট অপারেটিভ ১০টি, প্রিঅপারেটিভ বেড ১০টি।
অপারেশন থিয়েটার : আধুনিক অপারেশন থিয়েটার ১০টি, আইসিইউ ১০টি, এইচডিইউ ১০টি, পোস্ট অপারেটিভ ১০টি, প্রি-অপারেটিভ ১০টি।
আধুনিক ইমারজেন্সি বিভাগ : আধুনিক ট্রায়াজ রুম, রেড জোন ও গ্রিন জোন সম্বলিত অত্যাধুনিক ইমারজেন্সি বিভাগ। OCC ভিক্টিম সার্ভিস থাকবে।
সব ধরনের আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত ওপিডি (আউট পেশেন্ট ডিপার্টমেন্ট) থাকবে। এতে থাকবে ডেন্টাল ওপিডি, পেডিয়েট্রিক ডেন্টিস্ট্রি, পেরিওডন্টোলজী, কনজারভেটিভ ডেন্টিস্ট্রি এন্ড এন্ডোডনটিকস, অর্থোডন্টিকস ও ডেন্টোফেসিয়াল অর্থোপেডিকস, প্রস্থোডন্টিকস, ডেন্টিস্ট্রি, ডেন্টাল রেডিওলজী, ডেন্টাল ইমপ্লান্টোলজী এন্ড প্রস্থেসিস, লেজার ডেন্ট্রিস্ট্রি, ওরাল ও ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জারি, নিউরোসার্জারি, অর্থোপেডিকস, ইএনটি, প্লাস্টিক সার্জারি, মেডিসিন, সার্জারি, অনকোলজি, ফিজিক্যাল মেডিসিন, সাইকেয়াট্রি, পেডিএট্রিকস, অটিস্টিকস প্রভৃতি বিভাগ। ইপিআই এবং ভ্যাক্সিনেসন সেন্টারও থাকবে।
হাসপাতালের পাশে/ উপরে হেলিপ্যাড রাখা হবে। ৪ তলা ভবন বিশিষ্ট শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মসজিদ ভবন, পুকুর, খেলার মাঠ এবং জিমনেসিয়াম থাকবে।
পানি উত্তোলন ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ সাব-স্টেশন, বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশন, আধুনিক জেনারেটর ব্যবস্থা, আনসার ব্যারাক, সিকিউরিটি ভবন, পোস্ট ও গেইট থাকবে।
হাসপাতালের জন্য সেনট্রাল লন্ড্রি ভবন থাকবে যেখানে সব ধরনের কাপড়, লিলেন সামগ্রী ধোলাই ও ইস্ত্রি ব্যবস্থা থাকবে।
হাসপাতাল ভবনে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্বলিত Central Sterilization Service System Department (CSSD) থাকবে। CSSD থেকে অপারেশন থিয়েটার, আউটডোর, অন্যান্য প্রয়োজনীয় সব জায়গায় স্টেরিলাইজড যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হবে।
৪ তলা ভবন বিশিষ্ট আধুনিক সুবিধা সম্বলিত সেন্ট্রাল স্টোর ভবন হাসপাতাল ভবনের পাশেই থাকবে। হাসপাতাল ভবনের পাশে আধুনিক সেন্ট্রাল মেডিকেল গ্যাস সিস্টেম প্লান্ট থাকবে। হাসপাতালের আউটডোরে আধুনিক সুবিধা সম্বলিত ফার্মেসি ও ডিসপেনসারি থাকবে- যেখান থেকে হাসপাতালে আগত আউটডোর রোগীদের টিকিটের মাধ্যমে ওষুধ সরবরাহ করা হবে।
হাসপাতালে আগত মা ও শিশুদের জন্য ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার থাকবে। হাসপাতালে প্রশাসনিক ভবন, হিসাব শাখা, কনফারেন্স রুম, ডক্টরস কমন রুম, বিভাগীয় প্রধান, রেজিষ্ট্রার, কনসালটেন্ট, ও অন্যান্য চিকিৎসক, অফিসার ও স্টাফদের আলাদা আলাদা রুম, ক্যাফেটেরিয়া ইত্যাদি প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা থাকবে।
প্রতিটি ভবনে আধুনিক ফায়ার সার্ভিস সিস্টেমসহ সব ধরনের ফায়ার সার্ভিস ইকুইপমেন্ট থাকবে।
২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষ থেকেই শিক্ষার্থী ভর্তিসহ একাডেমিক কার্যক্রম শুরুর প্রত্যাশা :
অবকাঠামো নির্মাণ প্রক্রিয়া এগিয়ে নেয়ার পাশাপাশি দ্রুত শিক্ষার্থী ভর্তিসহ একাডেমিক কার্যক্রম শুরুর দাবি উঠেছে খুলনাবাসীর মধ্যে। তাদের দাবি- নিজস্ব ভবন ছাড়াই ইতোপূর্বে দেশের বেশ-কয়েকটি সরকারি মেডিকেল কলেজের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানগুলোর অবকাঠামো নির্মাণ শুরু হয়। একইভাবে খুলনা ডেন্টাল কলেজের কার্যক্রম শুরু হতে পারে বলে যুক্তি তাদের।
খুলনাবাসীর দাবির সাথে একমত পোষন করেন অধ্যক্ষ ডা. অনুপম পোদ্দার। তিনি বলেন, খুলনা ডেন্টাল কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমতি চেয়ে ২০২২ সালে মন্ত্রণালয়কে একটি চিঠি দিয়েছিলেন আগের অধ্যক্ষ ডা. অসীম কুমার সাহা। তবে এ ব্যাপারে এখনো কোন সিদ্ধান্ত দেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
সচেতন মহলের দাবি প্রসঙ্গে অধ্যক্ষ ডা. অনুপম পোদ্দার জানান, মন্ত্রণালয় চাইলে আসছে ২০২২-২৩ সেশন থেকেই শিক্ষার্থী ভর্তি করা সম্ভব। এক্ষেত্রে খুলনা মেডিকেল কলেজের একাডেমিক ভবন ও শিক্ষকদেরকে কাজে লাগানো যেতে পারে। শিক্ষার্থী ভর্তিসহ একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হলে ডেন্টাল কলেজের কাজে গতি আসবে বলে যুক্তি তাঁর।