অসহায় দুরারোগ্য রোগী ও আর্তমানবতার সেবায় মুনির ফাউন্ডেশন
আর্তমানবতার সেবা ও দরিদ্র দুরারোগ্য মুমূর্ষু রোগীদের পাশে এগিয়ে আসার মাধ্যমে তাদের সুচিকিৎসা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছে মুনির ফাউন্ডেশন
আর্তমানবতার সেবা ও দরিদ্র দুরারোগ্য মুমূর্ষু রোগীদের পাশে এগিয়ে আসার মাধ্যমে তাদের সুচিকিৎসা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছে মুনীর ফাউন্ডেশন। বিদেশনির্ভরতা কমিয়ে দেশেই আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসা প্রদানের লক্ষ্যে স্বচ্ছল ও অস্বচ্ছল উভয় সামর্থ্যের রোগীদের কথা মাথায় রেখে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ‘মেডিকেল ভিলেজ’ স্থাপনের লক্ষ্য তাদের। ডক্টর টিভি অনলাইনকে এ তথ্য জানিয়েছেন সংগঠনটির জেনারেল সেক্রেটারি শরিফুল ইসলাম সিরাজী।
তিনি জানান, মুনির ফাউন্ডেশনের যাত্রা শুরু ২০১৯ সালে। বিগত ৩ বছরে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রায় ১ কোটি টাকার সমপরিমাণ আর্থিক সহায়তা লাভ করেছে সংগঠনটি। সেখান থেকে এখন পর্যন্ত ১৩৯ জন দূরারোগ্য রোগীকে বিভিন্ন অংকের আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন মুনির ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি জেনারেল শরিফুল ইসলাম সিরাজী।
সিরাজী জানান, মুনির ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠা মুজাহিদুল ইসলাম মুনির নামে একজন সাধারণ একজন ব্যক্তির নামে। তিনি ছিলেন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বাসিন্দা। ২০১৭ সালে প্রাণঘাতী ক্যানসার বা লার্জ ডিফিউজড বি-সেল লিম্ফোমায় আক্রান্ত হন। তখন সুচিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি। কিন্তু মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে ২০১৯ সালে তার শরীরে আবারও ক্যানসার ধরা পড়ে।
প্রথমবার পারিবারিক সম্পত্তি বিক্রি করে মুনিরের চিকিৎসা করা সম্ভব হয়। দ্বিতীয়বার ক্যান্সারের চিকিৎসা করার সামর্থ্য না থাকায় ক্রাউডফান্ডিংয়ের (মানুষের কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে) মাধ্যমে টাকা যোগাড় করা হয়। তখন সবার সহায়তা পেয়ে আপ্লুত হয়ে পড়েন মুনির। তিনি ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন যে, সবাই তাকে চিকিৎসার জন্য যেভাবে সহায়তা করেছে, ঠিক একইভাবে তিনিও অন্য অসহায় রোগীদের পাশে দাঁড়াতে চান। সুস্থ হওয়ার পর তিনি এমন একটা উদ্যোগ নিবেন, যেন আর্থিক সমস্যা থাকলেও প্রত্যেকেই চিকিৎসা করার সুযোগ পায়। কিন্তু সেই ইচ্ছা পূরণ হয়নি মুনিরের। ওই বছরের ২৯ জুলাই ভারতের ব্যাঙ্গালোরের মজুমদার ক্যানসার সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
মুনিরের মৃত্যুর পরে তার স্মৃতি ও ইচ্ছাকে বাস্তবে রূপ দিতে মুনীরের পরিবার ও কিছু উদ্যোমী যুবক মিলে গড়ে তোলেন ‘মুনির ফাউন্ডেশন’। ইতোমধ্যে সোসাইটি রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট- ১৮৬০ অনুযায়ী স্থানীয় সাব রেজিষ্টারের অফিসে রেজিস্টেশন নিয়েছে সংস্থাটি।
দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা অসহায় রোগীদের পাশে দাঁড়ানোর কাজ চলছে মুনির ফাউন্ডেশন পরিচালিত পেশেন্ট ক্রাউডফান্ডিং প্রজেক্টের মাধ্যমে। ক্রাউডফান্ডিং তথা মানুষের কাছ থেকে প্রাপ্ত অর্থ সহায়তা ব্যয় করা হয় অসহায় এবং গরিব রোগীদের সেবায়। অনলাইনে কার্যক্রম পরিচালনার সুবিধার্থে বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই চলছে কার্যক্রম। আর্তমানবতার সেবায় তাদের এই উদ্যোগে যথেষ্ট সফল হয়েছে। যার ফলে অল্প কয়েক বছরের মধ্যেই ফাউন্ডেশনের নাম ছড়িয়ে পড়েছে দেশব্যাপী। তবে, তারা শীঘ্রই ’গোফান্ডমি’ এর আদলে একটি ক্রাউডফান্ডিং ওয়েবসাইট শুরু করতে চান যা দিয়ে যে কেউ নিজের প্রয়োজন মাফিক চিকিৎসা ও অন্যান্য জরুরী প্রয়োজনে টাকা সংগ্রহ করতে পারবে, এবং ডোনাররা সকল তথ্য ও ডকুমেন্টস দেখে অনলাইনে ডোনেশান পাঠাতে পারবেন।
বর্তমানে নিম্নোক্ত বিকাশ ও ব্যাংক একাউন্টগুলোর মাধ্যমে চিকিৎসা সহায়তা কাজের টাকা সংগ্রহ এবং সহায়তা প্রদান করা হয়; আপনিও অংশ নিতে পারেন!
Bkash Personal:
01853 32 51 53
Bank:
Munir Foundation
2050 2210 2036 78017
Islami Bank Bangladesh Limited
Sitakund Branch, Chittagong.
Munir Foundation
062 121 000 1598
Union Bank Limited
Dhanmondi Branch, Dhaka.
সিরাজী জানান, মুনীর ফাউন্ডেশন মূলত ৫টা কাজ করছে:
১. চিকিৎসা সহায়তা সংগ্রহ, ২. ’মেডিকেল ভিলেজ’ প্রতিষ্ঠা, ৩. দুর্যোগকালীন দুর্গতদের সহায়তা, ৪. দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মৌলিক অধিকারসমূহ নিশ্চিতকরন, ৫. যাকাত-সাদাকাহ ব্যবস্থাপনা।
বিশেষ করে যাকাত ব্যাবস্থাপনা কার্যক্রম ইসলামী নীতিমালা মেনে পরিচালনা করছে মুনীর ফাউন্ডেশন। সারা বছর ধরেই যাকাত দাতাদের নিকট হতে যাকাত এর টাকা সংগ্রহ করেন তারা, এবং অনলাইন এ যাকাত প্রার্থীদের আবেদনগুলো গ্রহন করেন, পরবর্তীতে যাচাই বাছাইয়ের পর যোগ্য আবেদনকারীদের ঋণমুক্তি, ঘর নির্মান ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেন তারা।
কেউ যদি যাকাত পাঠাতে চান, তবে নিম্নোক্ত একাউন্ট এ পাঠাতে পারেন
Munir Foundation Zakat Fund
2050 2210 1001 64104
Islami Bank Bangladesh Limited, Sitakund Branch.
মুনীর ফাউন্ডেশন এর ড্রীম প্রজেক্ট, মেডিকেল ভিলেজ এর প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখতে পারেন নিম্নোক্ত একাউন্ট এ টাকা পাঠানোর মাধ্যমে:
Munir Foundation Hospital
2050 2210 1001 64003
Islami Bank Bangladesh Limited, Sitakund Branch.
শরিফুল ইসলাম সিরাজী জানান, তিন ধরনের সদস্য নিয়ে কাজ করে থাকে মুনির ফাউন্ডেশন। সেগুলো হলো- আজীবন সদস্য, দাতা সদস্য, স্বেচ্ছাসেবক। আজীবন সদস্য হতে চাইলে ফাউন্ডেশনের তহবিলে এককালীন ন্যূনতম ১ লাখ টাকা দান করতে হবে। দাতা সদস্যরা দিয়ে থাকেন এককালীন ৫০ হাজার বা তারও বেশি টাকা। এ ছাড়া সংস্থার ফান্ডে যে কোনো পরিমাণ অর্থ দান ও কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতার মাধ্যমে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যোগ দিতে পারেন যে-কেউ।