করোনা আক্রান্ত কিডনি রোগীর মৃত্যুঝুঁকি ১০ গুন
কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট রোগীদের শরীরে করোনার টিকার কার্যকারিতা অনেক কম
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কিডনি রোগীর (ক্রনিক কিডনি ডিজিজ-সিকেডি) মৃত্যুঝুঁকি সাধারণ মানুষের চেয়ে ১০ গুন বেশি বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কিডনি ডায়ালাইসিসের রোগীরা করোনা আক্রান্ত হলে শতকরা ৫০ ভাগেরই মৃত্যুর আশঙ্কা থাকে।
সোমবার (৩০ জানুয়ারি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) করোনার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব নিয়ে আয়োজিত সিম্পোজিয়ামে এসব তথ্য দেন বক্তারা। ‘মাল্টিটিউড অব ইস্যুজ ইন কভিড: রেনাল, কার্ডিয়াক অ্যান্ড মেটাবলিক ইনফ্লুয়েন্স’ শীর্ষক সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করে কিডনি ডিজিজ রিসার্চ গ্রুপ।
ইউজিসি অধ্যাপক ডা. সজল ব্যানার্জির সভাপতিত্বে এবং বিএসএমএমইউর হৃদরোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. দিপল অধিকারীর সঞ্চালনায় সিম্পোজিয়ামে ঢাকা মেডিকেল কলেজের নেফ্রোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আবু সালেহ আহমেদ, বারডেমের এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফারিয়া আফসানা, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের কনসালট্যান্ট ডা. মীর ইসারাকুজ্জামান একটি করে গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, কিডনি রোগীদের করোনা হলে তার ফল অত্যন্ত খারাপ হয়। বিশেষ করে পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস রোগীদের করোনা হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। এমনকি কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট রোগীদের করোনায় মৃত্যুঝুঁকি শতকরা ৫০ ভাগ।
গবেষণার বরাত দিয়ে তারা বলেন, কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট রোগীদের শরীরে করোনার টিকার কার্যকারিতা অনেক কম। ডায়ালাইসিস রোগীদের শরীরে করোনার টিকার কার্যকারিতা শতকরা ৮৭ ভাগ। এমনকি করোনার টিকা নেফ্রাইটিস রোগের পুনরাগমন ঘটাতে পারে বলেও উল্লেখ করে গবেষকরা।
একটি গবেষণার বরাত দিয়ে বক্তারা বলেন, করোনা রোগীদের মধ্যে শতকরা ১০ ভাগের ডায়াবেটিস আছে এবং তাদের শতকরা ১৫ ভাগের চিকিৎসা প্রয়োজন হয়েছে। করোনা পরবর্তী জটিলতাকে লং কভিড সিনড্রম বলা হয়। তাদের দুর্বলতা, গায়ে ব্যথা, মাথা ধরা, ঘুম কম হওয়া ইত্যাদি সমস্যা থাকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, করোনায় আক্রান্তদের ১২ শতাংশ ডিপ্রেশনে ভুগছেন। তাদের এ অবস্থা থেকে চিকিৎসাসেবার মাধ্যমে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে।
তিনি আরও বলেন, পেশাজীবীদের মধ্যে করোনায় চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা বেশি মারা গেছেন। করোনা আক্রান্ত চিকিৎসকদের ৪০ ভাগ এবং ৩৪ ভাগ নার্সরা লং কভিডে ভুগছেন। করোনায় যাদের ডায়াবেটিস ছিল না, তাদের ডায়াবেটিস হয়েছে। এটিতে অনেকের মায়োপ্যাথি হয়েছে।