জাতীয় অধ্যাপক ডা. নুরুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
জাতীয় অধ্যাপক ডা. নুরুল ইসলাম
আজ ২৪ জানুয়ারি, প্রথিতযশা চিকিৎসক জাতীয় অধ্যাপক ডা. নুরুল ইসলামের দশম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১৩ সালের এইদিনে ইন্তেকাল করেন তিনি। জীবদ্দশায় চিকিৎসাশাস্ত্র ও অধ্যাপনা জন্য বিশেষ খ্যাতিমান ছিলেন এই প্রথিতযশা বাংলাদেশী চিকিৎসক।
জন্ম ও শৈশবকাল :
১৯২৮ সালের ১ এপ্রিল চট্টগ্রাম জেলার চান্দনাইশ থানার মোহাম্মদপুর গ্রামের এক অতি সাধারণ পরিবারে ডা. ইসলামের মতো কীর্তিমান মানুষের জন্ম। তার পিতা সৈয়দুর রহমান ছিলেন স্কুল শিক্ষক। তিন ভাই পাঁচ বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট। মাত্র চার বছর বয়সেই তার পিতা সৈয়দুর রহমান ইন্তেকাল করেন। গ্রামেই তার শৈশব কাটে স্নেহময়ী মা গুলমেহের এবং বড় ভাবী মোসাম্মাৎ মোস্তফা খানম এর তত্বাবধানে।
শিক্ষাজীবন :
বাবা মারা যাওয়ার পর তিনি স্কুলে ভর্তি হন। বাড়ি থেকে আধা মাইল দুরত্বের এই স্কুল ছেড়ে তাকে কিছুদিনের মধ্যেই ভর্তি হতে হয় পাশের গ্রামের এলাহাবাদ স্কুলে। কারণ এ স্কুলের পড়ালেখার মান ভালো। দ্বিতীয় শ্রেণী পর্যন্ত পড়ালেখার পর নিকটবর্তী গাছবাড়িয়া নিত্যানন্দ গৌরচন্দ্র উচ্চ ইংরেজী বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার প্রস্তুতি নেন। ডাবল প্রোমোশন নিয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে ভর্তি হবার জন্যে হেডমাস্টার গিরিজাশঙ্কর চৌধুরীর কাছে সাক্ষাৎকার দিতে হয়। তিনি নুরুল ইসলামকে ইংরেজীতে কয়েকটি প্রশ্ন করেন এবং সঠিক উত্তর পেয়ে অনুমুতি দেন ভর্তি হবার জন্যে। অজপাড়া গাঁয়ে থেকেও সেই দ্বিতীয় শ্রেণীতেই এতটা ইংরেজী আয়ত্ত করেছিলেন ইংরেজীর প্রতি তার আগ্রহ আর প্রচেষ্টার কারণেই।
গাছবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে তিনি ১৯৪৩ সালে মেট্রিক পরীক্ষা দেন। মেট্রিক পাশের পর তার বড় ভাই তাকে কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি করে দেন। ছোটবেলা থেকেই ডাক্তারী পড়ার প্রতি তার ঝোঁক ছিল। কলকাতা মেডিকেল কলেজে ভর্তির ন্যূনতম যোগ্যতা ছিল প্রথম বিভাগে আইএসসি পাশ। পরীক্ষার ফল বের হবার আগেই ভর্তি ফরম নেয়ার তারিখ শেষ হয়ে যায়। সৎ সাহস আর মানসিক দৃঢ়তার অধিকারী ডা. নুরুল ইসলাম কলকাতা মেডিকেল কলেজের ইংরেজ অধ্যক্ষ্যের সাথে দেখা করে ফরম সংগ্রহ করতে সমর্থ হন এবং ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান। ১৯৫১ সালে তিনি কৃতিত্বের সাথে ডাক্তারী পাশ করেন।
কর্মজীবন : ডাক্তারী পাশের পর তিনি দেশে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন। দেশ ভাগ হওয়ায় কলকাতায় চাকরি পাবার কোনো সম্ভাবনা ছিল না। ইতোমধ্যে সংবাদ পেলেন যে, ঢাকা মেডিকেল কলেজে কিছু সংখ্যক চাকরি খালি হয়েছে এবং ‘এডহক’ ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হবে। দু’দিন পর সার্জন জেনারেলের কাছে ইন্টারভিউ।
ঢাকা ফেরার পরদিনই মেজো ভাইয়ের টেলিগ্রাম পান-মা গুলমেহের মরণাপন্ন, এখনই যেতে হবে। ডা. নুরুল ইসলাম রোগের ইতিহাস শুনে বুঝলেন টাইফয়েড বা সান্নিপাতিক। সে সময় এর একমাত্র ওষুধ ছিল ক্লোরোমাইসেটিন। রোগী অজ্ঞান বলে মুখে খাওয়ানোর উপায় ছিল না। চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল থেকে রাইস টিউব ধার করে এনে তার মধ্যে ক্যাপসুল ভেঙে দুধের সঙ্গে ওষুধ মিশিয়ে পেটের মধ্যে প্রবেশ করালেন সদ্য পাশ করা ডা. ইসলাম। নাকের মধ্যে টিউব ঢোকালে শ্বাস বন্ধ হয়ে রোগী মারা যাবে আশঙ্কা করে বাড়ির সবাই আপত্তি করলেও তিনি সিদ্ধান্তে অটল থাকেন এবং মাকে সুস্থ করে তোলেন। পেশাগত জীবনের শুরুতে মৃত্যুপথযাত্রী নিজের মাকে প্রথম রোগী হিসেবে সারিয়ে যে সুযোগ পেয়েছিলেন তা এক বিরল সৌভাগ্য।
মায়ের অসুস্থতার জন্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ‘এডহক’ ভিত্তিতে নিয়োগে ইন্টারভিউ দিতে না পারলেও পরে পিএসসির ইন্টারভিউ দিয়ে ১৯৫২ সালে মেধা তালিকার শীর্ষে থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বক্ষব্যাধি বিভাগের আউটডোরে নিয়োগ পান।
১৯৫৪ সালে ১ এপ্রিল লন্ডনের হুইটিংটন হাসপাতালে এমআরসিপি কোর্সে অংশ নেবার সুযোগ পান সরকারী খরচে। মেডিসিনে প্রশিক্ষণ পাবার পর ১৯৫৫ সালে ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ে টিডিডি কোর্সে যোগদান করেন ও ছয় মাসের কোর্সে প্রথম সুযোগে এমআরসিপি পাশ করেন। তৎকালীন সময়ে প্রথম সুযোগে এমআরসিপি পাশ করতো মাত্র ১০ থেকে ১৫ শতাংশ ছাত্রছাত্রী।
১৯৫৬ সালে তিনি দেশে ফিরে আসেন। সে সময় পুরো পূর্ব পাকিস্তানে তিনিই ছিলেন একমাত্র এমআরসিপি, টিডিডি। জেনারেল সার্জনের সাথে দেখা করে তিনি জানান যে, সরাসরি এসোসিয়েট প্রফেসর বা প্রফেসর হবার পরিবর্তে তিনি ধাপে ধাপে অগ্রসর হতে চান। মিটফোর্ড মেডিকেল স্কুলে মেডিসিনের লেকচারার হিসেবে যোগদান করার পাশাপাশি তিনি টিবি ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত হন।
১৯৫৮ সালে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ পান। ১৯৬২ সালে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে নিযোগ পান অধ্যাপক হিসেবে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে তিনি সর্বপ্রথম ‘নাফিল্ড স্কলারশিপ’ লাভ করেন ১৯৬৩ সালে। ভিজিটিং অধ্যাপক হিসেবে বিলেতে কাজ করে ১৯৬৪ সালের মাঝামাঝি দেশে ফিরে আসেন। ১৯৬৫ সালে পোস্ট গ্রাজুয়েট চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ের যুগ্ম পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান। ১৯৮৭ সালে পোস্ট গ্রাজুয়েট ইন্সটিটিউটের পরিচালক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে নিজের মেধা, শ্রম, মনন দিয়ে তিনি এ প্রতিষ্ঠানকে গড়ে তোলেন যা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রশংসিত হয়েছে।
তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ছিলেন। এছাড়াও তিনি মাওলানা ভাসানী, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, পল্লীকবি জসীম উদদীন, মাওলানা মো. আকরাম খাঁ, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনসহ অসংখ্য মানুষের চিকিৎসা করে সুনাম অর্জন করেছেন।
জাতীয় যক্ষা সমিতি :
এমবিবিএস পাশের পর ডা. ইসলাম ঢাকা মেডিকেল কলেজের বক্ষব্যাধি বিভাগে হাউজ ফিজিশিয়ান হিসেবে কর্মরত থাকাবস্থায় উপলব্ধি করেন, দেশের আনাচে কানাচে, শহরে, বন্দরে, গ্রামে অবস্থিত অগণিত যক্ষা এমন এক সমস্যা, যা সমাধানের দায়িত্ব শুধু সরকারের ওপর চাপিয়ে না দিয়ে এগিয়ে আসতে হবে সবাইকে। ১৯৫৭ সালের শেষ দিকে যক্ষার প্রকোপ থেকে দেশকে বাঁচানোর উদ্যোগ হিসেবে একটি সমিতি গড়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং গঠিত হয় জাতীয় যক্ষা সমিতি। সমিতির উদ্যোগে ১৯৫৮ সালে প্রেসক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ রোগের ভয়াবহতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই যক্ষা নির্মুলে দেশজুড়ে জেলা শাখা গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছিলেন ডা. ইসলাম ও তার সহযোগীরা।
জাতীয় ওষুধ নীতি :
পাকিস্তান আমলে ওষুধের ষাট থেকে সত্তর শতাংশ আসত পশ্চিম পাকিস্তান থেকে। স্বাধীনতা লাভের পর বাংলাদেশে ওষুধের তীব্র সঙ্কট দেখা দেয়। প্রয়োজনীয় প্রশাসন কাঠামো এবং বিশেষজ্ঞের অভাবে অপ্রয়োজনীয় অনেক ওষুধ দেশে আসে এবং প্রয়োজনীয় অনেক ওষুধের অভাব দেখা দেয়। সরকার এ অবস্থা উপলব্ধি করে ১৯৭৩ সালে ডা. নুরুল ইসলামকে চেয়ারম্যান করে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে। কমিটির সুপারিশে অনেক ওষুধ ও মাদক-মিশ্রিত টনিক বাদ পড়ে। ১৯৭৫ সালে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরে বাতিল হওয়া ওষুধগুলো আবার বাজারে আসে। ১৯৮২ সালে নতুন সরকার আবারো ডা. নুরুল ইসলামকে চেয়ারম্যান করে নতুন বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে। কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে ১৯৮২ সালের ১২ জুন সরকার ওষুধ অধ্যাদেশ জারি করেন। এই ওষুধনীতি সারা বিশ্বে এক নজিরবিহীন ইতিবাচক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে।
আইপিজিএমআর :
১৯৬৪ সালের জুলাই মাসে পিজি ইনস্টিটিউট প্রকল্প প্রণয়ন করা হয়। ১৯৬৫ সালের ৬ ডিসেম্বর ডা. ইসলাম প্রথমে পোস্ট গ্রাজুয়েট চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ের যুগ্ম-পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান। পরবর্তীতে তিনি অধ্যাপক হিসেবে এবং রোগীকে চিকিৎসা প্রদানের দায়িত্বও পান। ১৯৮৭ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন। দীর্ঘ ২২ বছর পিজিতে চাকরির মধ্যে বিশ বছর পরিচালক হিসেবে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে পরিচালনা করে দুটি টিনশেডের ঘর থেকে একে সুবিশাল এক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করেন। এ সময়ে তার উল্লেখযোগ্য কাজগুলো-ইনস্টিটিউট শাহবাগে স্থানান্তর, ভূতপূর্ব মুসলিম লীগ ভবন ইনস্টিটিউট কর্তৃক গ্রহণ, বঙ্গবন্ধু কর্তৃক ব্লাড ট্রান্সফিউশন সার্ভিস উদ্বোধন, ইনস্টিটিউটের জন্যে জমি অধিগ্রহণ, যুগোপযোগী কোর্স প্রবর্তন ইত্যাদি। লন্ডনের রয়েল সোসাইটি অব মেডিসিন থেকে প্রকাশিত ট্রপিক্যাল ডক্টর-এর একটি নিবন্ধে তাকে আইপিজিএমআর এর ‘ফাউন্ডিং ফাদা্র’ হিসেবে অভিহিত করা হয়।
ধূমপান বিরোধী সংগঠন ‘আধূনিক’ এর প্রতিষ্ঠা :
ইসলামিয়া কলেজে পড়ার সময় এক ধূমপায়ী বন্ধুর সান্নিধ্যে ডা. ইসলাম ধূমপায়ী হয়ে ওঠেন। উনিশ শতকের পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝি সময়ে বিলেতে তামাক বিরোধী আন্দোলন দানা বেঁধে ওঠে। অনেক চেষ্টা করে অবশেষে দ্বিতীয়বার বিলেতে গিয়ে ডা. ইসলাম ধূমপান ত্যাগ করতে সমর্থ হন। ধূমপানের কুফল সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে ১৭ সদস্য নিয়ে ‘আধূনিক’ নামের সংগঠন গড়ে তোলেন। ‘আমরা ধূমপান নিবারণ করি’-এর সংক্ষিপ্ত রূপ আধূনিক ১৯৮৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশ সরকারের সমাজ কল্যাণ বিভাগের রেজিস্ট্রেশন পায়। ধূমপান বিরোধী আন্দোলনে আধূনিকের অবদান অপরিমেয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রতিবছর ৩১ মে বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস পালন করে আসছে এই প্রতিষ্ঠান। এই অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯০, ১৯৯২ এবং ২০০৫ সালে জাতীয় অধ্যাপক ডা. নুরুল ইসলাম বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পদক লাভ করেন।
সম্মাননা :
কর্মবীর সর্বজনশ্রদ্ধেয় ডা. নুরুল ইসলাম তার কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন মানুষের অকুন্ঠ ভালবাসা আর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অসংখ্য সম্মাননা। ১৯৬৩ সালে তিনি লাভ করেন প্রেসিডেন্টস গোল্ড মেডেল, ১৯৭০ এ ভূষিত হন সিতারা-ই-ইমতিয়াজ হিসেবে, বাংলাদেশ একাডমি অব সায়েন্স এর স্বর্ণপদক লাভ করেন ১৯৮২ সালে, ফজলুল হক মেমোরিয়েল এ্যাওয়ার্ড পান ১৯৮২ সালে, ১৯৮৭ সালে ভূষিত হন হন জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে, হু এ্যাওয়ার্ড ফর টোবাকো কন্ট্রোল লাভ করেন ১৯৯০ এবং ১৯৯২ সালে, ভাসানী মেমোরিয়েল গোল্ড মেডেল লাভ করেন ১৯৯৩ সালে, স্বাধীনতা দিবস পদক লাভ করেন ১৯৯৭ সালে, সোশাল সার্ভিস এওয়ার্ড লাভ করেন ২০০০ সালে, ভারত সরকারের পক্ষ থেকে চিকিৎসা রত্ন হিসেবে ডা. বিধান রায় স্বর্ণ পদক লাভ করেন ২০০৩ সালে। এছাড়াও আরো অনেক অনেক পদক আর সম্মানে ভূষিত হয়েছেন এই কৃতি বাঙালী।
ডা. নুরুল ইসলামকে নিয়ে কবি জসীম উদদীন ও বেগম সুফিয়া কামাল কবিতা রচনা করেছেন।
লেখালেখি :
আন্তর্জাতিক মেডিকেল জার্নালে ডা. নুরুল ইসলামের শতাধিক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। তার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ২৪ এর বেশি। চিকিৎসা শিক্ষা ও ওষুধ নীতি ছিল তার আগ্রহের বিষয়, যা তার লেখা প্রবন্ধ ও গ্রন্থসমূহ থেকে প্রতিফলিত হয়।
ইউএসটিসি প্রতিষ্ঠা :
১৯৮৯ সালের ১৩ মে মাত্র ৪২ জন ছাত্রছাত্রী নিয়ে ইনস্টিটিউট অব এ্যাপ্লায়েড হেলথ (আইএএইচএস)-এর যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তীতে নামকরণ করা হয ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি চট্টগ্রাম (ইউএসটিসি)। ১৯৯২ সালের ৯ নভেম্বর সরকার ইউএসটিসি-কে স্বীকৃতি দেয়। ডা. ইসলামের দূরদর্শী সাংগঠনিক দক্ষতা ও ব্যক্তিত্বের কারণে সকল ধরনের প্রতিকূলতা পেরিয়ে ইউএসটিসি আজ দেশের অন্যতম সেরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগ্যতা অর্জন করেছে।
ব্যক্তিজীবন :
ডা. ইসলাম অধ্যাপক হিসেবে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে বদলি হওয়ার পর ১৯৬২ সালের ২৬ ডিসেম্বর ঢাকা শিক্ষা সম্প্রসারণ কেন্দ্রের শিক্ষক আনোয়ারার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের তিন সন্তান আজ স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। বড় মেয়ে নূর-ই-জান্নাত আয়েশা দীনা বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেন এবং পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট অব বিজনেস এ্যাডমিনিস্ট্রেশন থেকে প্রথম স্থান অধিকার করে এমবিএ অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি ইউএসটিসি-এর বিজনেস ফ্যাকাল্টির ডেপুটি প্রোগ্রাম ডিরেক্টর। ছেলে আহমেদ ইফতেখারুল ইসলাম বিএ(অনার্স) ও এমএ লাভের পর ইউএসটিসি থেকে এমবিএ অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি জনসেবা ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব ট্রাস্টির ভাইস চেয়ারম্যান। ছোট মেয়ে নীনা ইসলাম এমবিবিএস, বিসিএস হেলথ, এফসিপিএস এর পাশাপাশি এমবিএ সম্পন্ন করেন। বর্তমানে তিনি ইউএসটিসি-র একাডেমি অব ফ্যামিলি মেডিসিন এর সহযোগী অধ্যাপক।