মেয়ের অঙ্গদানের সম্মতিপত্রে সারার মা যা লেখেন
সারা ইসলাম ও তা মা
দীর্ঘ ১৯ বছর টিউবারাস সিরোসিস রোগের সঙ্গে লড়াই করার পর অবশেষে পরপারে চলে গেছেন ঢাকার বাসিন্ধা সারা ইসলাম। তবে মরণোত্তর অঙ্গদানের এক অনন্য নজির স্থাপন করে গেছেন ২০ বছর বয়সী এই তরুণী। তার দুটি কিডনিতে নতুন জীবন পেয়েছেন দুইজন। আর তার দুটি কর্নিয়ায় দুইজনের চোখে আলো ফিরে এসেছে।
মৃত্যুর আগে সারা ইসলাম তার দেহের সবকিছুই দান করে দিতে বলেছিলেন। তবে চিকিৎসকরা শুধু তার দুটি কিডনি ও দুটি কর্নিয়া কাজে লাগিয়েছেন। অতল শোক নিয়েও সারার মা শবনম সুলতানা তার মেয়ের দুটি কিডনি ও চোখের কর্নিয়া দান করার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছিলেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দেওয়া ওই সম্মতিপত্রে সারার মা লিখেছেন, ‘আমি শবনম সুলতানা এই মর্মে প্রত্যয়ন করছি যে; আমার মেয়ে সারা ইসলাম (২০), (multiple tubular Sclerosis) রোগের অপারেশন পরবর্তী জটিলতায় ZCU, BSMMU ভর্তি করানো হয়। তার শারীরিক অবস্থা অবনতি হলে, অত্র ১৮ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে ডাক্তারেরা তাকে (Brain stem Death) ঘোষণা করেন। এমতাবস্থায় আমি স্বেচ্ছায় প্রণোদিত হয়ে আমার মেয়ের দুটি কিডনি ও দুটি কর্নিয়া দান করতে সম্মতি দান করছি। এটি করতে কোন প্রকার ভয় ভীতি বা আর্থিক প্রলোভন দেখানো হয়নি। এই অস্ত্রোপচার এবং কিডনি ও কর্নিয়া দান সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা, জটিলতা হলে সংশ্লিষ্ট সেবা প্রদানকারী সদস্য, অধ্যাপক, চিকিৎসক, নার্স এবং কর্মচারী দায়ী থাকবে না।’
এর আগে, গত বুধবার রাত সাড়ে ১০টা থেকে বৃহস্পতিবার ভোর ৪টা পর্যন্ত বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদের সার্বিক নির্দেশনায় দেশে প্রথমবারের মতো মৃত ব্যক্তির দুটি কিডনি বিকল রোগীর দেহে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়। সারা ইসলামের দুটি কিডনির একটি মিরপুরের বাসিন্দা ৩৪ বছর বয়সী শামীমা আক্তারের দেহে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কিডনি অপারেশন থিয়েটারে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়। আর অপর কিডনিটি কিডনি ফাউন্ডেশনে এক রোগীর দেহে প্রতিস্থাপন করা হয়।