স্বাস্থ্যের ডিজি পদে আলোচনায় তিন নাম
আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের চাকরির নিয়মিত মেয়াদ টেনে দুই বছর লম্বা করা হয়
স্বাস্থ্য সেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) কে হতে যাচ্ছেন, তা নিয়ে চিকিৎসক মহল ও স্বাস্থ্যের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের মধ্যে জোর আলোচনা চলছে। বর্তমান মহাপরিচালক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের মেয়াদকাল শেষ হচ্ছে ৩১ ডিসেম্বর। তারপর কে? নাকি আবারও তার মেয়াদ বৃদ্ধি হবে?
প্রথম আলোর বুধবারের (২৮ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক পক্ষ বলছে, আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের মেয়াদ আবার বাড়ছে। কারণ তিনি ঊর্ধ্বতন নীতিনির্ধারকদের কারও কারও কাছে বিশেষ পছন্দের। কেউ বলছেন, চিকিৎসকদের মধ্যে যোগ্য জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার অভাব নেই। অতিরিক্ত মহাপরিচালক আছেন দুজন। একজন অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন), অন্যজন অধ্যাপক আহমেদুল কবীর (প্রশাসন)।
এ দুজনের মধ্যে জ্যেষ্ঠ মীরজাদী সেব্রিনা। তিনি অসুস্থ। তবে সুস্থ হয়ে উঠছেন। আহমেদুল কবীর অতিরিক্ত মহাপরিচালক হলেও তার চেয়ে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বা পরিচালক বেশ কয়েকজন আছেন। ওই বেশ কয়েকজনকে পেছনে ঠেলে আহমেদুল কবীরকে অতিরিক্ত মহাপরিচালক পদে বসানো হয়েছিল।
সরকারি কর্মকর্তাদের কেউ কেউ মনে করেন, আহমেদুল কবীরকে অতিরিক্ত মহাপরিচালক বানানো হয়েছিল সুযোগমতো তাকে মহাপরিচালকের পদে বসানোর জন্য।
স্বাস্থ্যের মহাপরিচালকের পদ বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ। সেই গুরুত্ব আরও বেড়েছে মহামারীর কারণে। এ পদে থাকা কর্মকর্তার গণমাধ্যমে উপস্থিতি এত বেশি দেখা যায়, যা সরকারের আর কোনো অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের ক্ষেত্রে ঘটে না।
বছর তিনেক আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ভেঙে স্বাস্থ্য সেবা অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর নামে দুটি অধিদপ্তর করা হয়। করোনা মহামারী শুরুর সময় স্বাস্থ্য সেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ছিলেন আবুল কালাম আজাদ। নিয়মিত মেয়াদ শেষে তার চাকরির মেয়াদ দুই বছর বাড়ানো হয়েছিল।
২০২০ সালের মাঝামাঝি করোনা মহামারীতে দেশে যখন টালমাটাল পরিস্থিতি, তখন স্বাস্থ্য সেবা অধিদপ্তরে দুর্নীতির বান ডাকল। দেশের মানুষ অবাক হলো। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে দুর্নীতি নতুন কিছু নয়, তাই বলে মহামারীর মধ্যে! দুর্নীতির অপবাদ নিয়ে আবুল কালাম আজাদ ২০২০ সালের ২৩ জুলাই পদ ছাড়লেন। ২৬ জুলাই পদে বসলেন আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। তিনি অনেকের দৃষ্টিতে আদর্শ সার্জন।
আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের চাকরির নিয়মিত মেয়াদ ছিল ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। মেয়াদ টেনে দুই বছর লম্বা করা হয়। সেই মেয়াদও শেষ হচ্ছে এই ৩১ ডিসেম্বর।
আবুল কালাম আজাদের চাকরির মেয়াদ বৃদ্ধির কারণে অন্যদের মহাপরিচালক হওয়া আর হয়ে ওঠেনি। একইভাবে আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের প্রথম দুই বছর মেয়াদ বৃদ্ধির কারণে যোগ্যতা থাকার পরও কেউ কেউ স্বাস্থ্যের শীর্ষ পদে যেতে পারেননি।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব ইহতেশামুল হক চৌধুরী বলেন, একজন মহাপরিচালকের মেয়াদ বৃদ্ধি করলে অন্য এক বা একাধিক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বঞ্চিত হন। অন্যদিকে মাঠপর্যায় থেকে যারা ওপরের দিকে উঠে আসার চেষ্টা করেন, তারা হতোদ্যম হয়ে পড়েন। অসুস্থ স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে সবল করতে হলে বঞ্চনা দূর করতে হবে।