কালাজ্বর নিয়ে গবেষণা : আন্তর্জাতিক পুরস্কার জিতলেন বাংলাদেশি মেয়ে

অনলাইন ডেস্ক
2022-12-25 21:55:36
কালাজ্বর নিয়ে গবেষণা : আন্তর্জাতিক পুরস্কার জিতলেন বাংলাদেশি মেয়ে

মাত্র তিন মিনিটে কালাজ্বরের কার্যকর ওষুধ তৈরির সম্ভাবনার কথা শুনিয়ে ‘থ্রি মিনিট থিসিস (থ্রিএমটি)’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান লাভ করলেন বাংলাদেশের মেয়ে আতিয়া বিনতে আমিন

মাত্র তিন মিনিটে কালাজ্বরের কার্যকর ওষুধ তৈরির সম্ভাবনার কথা শুনিয়ে ‘থ্রি মিনিট থিসিস (থ্রিএমটি)’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান লাভ করলেন বাংলাদেশের মেয়ে আতিয়া বিনতে আমিন। 

কানাডার মনট্রিয়লে অবস্থিত ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ে মানবদেহের জিনতত্ত্বের ওপর পিএইচডি করছেন আতিয়া। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব প্রকাশনার অনলাইন সংস্করণে এই পুরস্কার জয়ের খবর প্রকাশ করা হয়েছে। 

১০ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় ‘নর্থ আমেরিকান ফাইনাল’ নামে এই  প্রতিযোগিতার আন্তর্জাতিক পর্যায় অনুষ্ঠিত হয়। এতে কানাডার প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিয়ে আন্তর্জাতিক পদক জয় করলেন আতিয়া। প্রথম বাংলাদেশি শিক্ষার্থী হিসেবে তিনি এই পুরস্কার জয় করলেন।

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চূড়ান্ত প্রতিযোগী ছিলেন ১১ জন। এর মধ্যে আটজন ছিলেন  যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের। দুজন মেক্সিকোর ও কানাডার একমাত্র প্রতিনিধি ছিলেন আতিয়া।

আন্তর্জাতিক এই প্রতিযোগিতার আয়োজক ছিলেন- যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সংগঠন কাউন্সিল অব গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজ। 

মাস্টার্স ও পিএইচডির শিক্ষার্থীদের মধ্যে থ্রিএমটি প্রতিযোগিতাটি খুব জনপ্রিয়। বিশ্বের প্রায় ৮৫টি দেশে প্রতিবছর এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

চলতি বছর কানাডার ৪৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ২ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী থ্রিএমটি প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। গত এপ্রিলে ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েক ধাপ শেষে প্রতিযোগিতায় প্রথম হন আতিয়া।

এই আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের কথা তুলে ধরেছেন আতিয়া।  বলেছেন, গবেষণার মাধ্যমে কালাজ্বরের কার্যকর ওষুধ তৈরি করা সম্ভব। এক্ষেত্রে উন্নত দেশগুলোর পৃষ্ঠপোষকতা দরকার। 

আতিয়া আরও বলেন, আন্তর্জাতিক মহলে খুব অবহেলিত হলেও বাংলাদেশ, ভারত, নেপালে কালাজ্বরের প্রকোপ খুব বেশি। উন্নত দেশে এ রোগ হয় না। এ কারণে তারা রোগটি নির্মূলে সহজে কোনো তহবিল দেয় না। তবে রোগটি পৃথিবী থেকে নির্মূলে উন্নত দেশেরও দায়িত্ব রয়েছে। এ ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করছেন তিনি। 

প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হিসেবে আতিয়া পেয়েছেন দুই হাজার মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় তা দুই লাখ টাকার বেশি।

প্রসঙ্গত : আতিয়ার বাবা মো. আমিনুল ইসলাম। তিনি ময়মনসিংহের বাংলাদেশ রেলওয়ে সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। তিনি এখন অবসরে। মা ফাতেমা আক্তার। তিনি একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। তিনিও অবসরে গেছেন। তিন বোন, এক ভাইয়ের মধ্যে আতিয়া বড়।

আতিয়া ময়মনসিংহের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হাইস্কুল থেকে এসএসসি, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগে। পরে মাস্টার্স করতে বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যান তিনি।

২০১৯ সালে ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি শুরু করেন আতিয়া। তাঁর স্বামী হক মুহাম্মদ ইশফাক। তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্সে পিএইচডি করছেন। তাঁরা ২০১৬ সালে বিয়ে করেন।


আরও দেখুন: