‘অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স’ কী এই নীরব মহামারি?

তৌহিদুল ইসলাম তারেক
2022-12-20 17:27:31
‘অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স’ কী এই নীরব মহামারি?

অ্যান্টিবায়োটিক

অ্যান্টিবায়োটিক, আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের অন্যতম আশীর্বাদ।  ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রমিত ইনফেকশন বা রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে পীড়িতকে সুস্থ্য করে তোলে।

তবে সঠিক পরিমাণে এবং পর্যাপ্ত সময় ধরে অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ না করলে হিতে বিপরীত হতে পারে । সংক্রমিত ব্যাক্টেরিয়াগুলো পরোপুরি ধ্বংস না হয়ে হয়ে উঠবে আরও শক্তিশালী। ফলসরূপ অকার্যকর হয়ে পড়বে অ্যান্টিবায়োটিক। মেডিকেলের ভাষায় যাকে বলে ‘অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স’।

বিশেষ রিপোর্ট দেখুন এখানে।

এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. ফজলে রাব্বি চৌধুরী বলেন, সাধারণত ব্যাক্টেরিয়া অ্যান্টিবায়টিক রেজিস্টেন্স হয়। বিভিন্ন কারণে হতে পারে। যেমন প্রয়োজনের তুলনায় বেশি মাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করলে বা অ্যান্টিবায়োটিকের যে কোর্স দেওয়া আছে তা শেষ না করলে, এমনকি খাবার ও পোষা প্রাণী থেকেও সংক্রমিত হতে পারে এই রিজিস্ট্যান্স।

কোনো ব্যক্তির শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমিত হলে ব্যাক্টেরিয়াগুলো রোগ প্রতিরোধকারী মেটাবলিজমকে নষ্ট করে দেয়। পাশাপাশি ব্যাক্টেরিয়া মোকাবেলা করার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করলে সেই ওষুধকেও প্রতিরোধ করে। এতে করে অসুখ সারানোর জন্য অন্য কোনো বিকল্প থাকে না। ফলে রোগী নির্ঘাত মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যায়।  

ডা. ফজলে রাব্বি চৌধুরী

নতুন অ্যান্টিবায়োটিকের সংখ্যা খুব সীমিত উল্লেখ করে এই চিকিৎসক বলেন, প্রচুর গবেষণা চলছে তবে এখনো নতুন অ্যান্টিবায়োটিকের সন্ধানে আছি আমরা। তাই বাজারে এখন যে অ্যান্টিবায়টিক আছে তা খুবই সচেতনভাবে ব্যবহার করতে হবে।

বিশেষ রিপোর্ট দেখুন এখানে।

তাই সর্বপ্রথম প্রয়োজন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া যাবে না। যদি জ্বর হয়, সাধারণত ভাইরাসজনিত জ্বর হলে প্রথম ৪-৫ দিন তা সেরে যায় । এরপরেও যদি জ্বর থেকে যায় তখন অ্যান্টিবায়টিকের প্রশ্ন আসে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। যে পর্যায়ের জ্বর বা অসুখ সেই লেভেলের অ্যান্টিবায়োটিক খেতে হবে। এর উপরের লেভেলের খাওয়া যাবে না। এবং অবশ্যই ওষুধের কোর্স শেষ করতে হবে বলে তিনি সতর্ক করেন।

শুধু বাংলাদেশ নয় পৃথিবী ব্যাপী অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের ভয়ানক ছোবল ছড়িয়ে পড়েছে।  ক্রমেই এটি নীরব মহামারি হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে আগামী ২০ বছরে অতিরিক্ত ১ কোটি মানুষ মারা যাবে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের কারণে।


আরও দেখুন: