রক্তের চাহিদা বাড়লেও রক্তাদাতা বাড়েনি
রক্তদাতার সংখ্যা না বাড়ার কারণ রক্ত পরিসঞ্চালন সংক্রান্ত অধিকাংশ উদ্যোগ শহরমুখী
দেশে চিকিৎসায় বছরে প্রায় ১০ লাখ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন হয়। এই চাহিদার মাত্র ৩৪ শতাংশ পাওয়া যায় স্বেচ্ছাসেবকদের কাছে থেকে। বাকি রক্তের যোগান দেয় রোগীর পরিবার।
চাহিদার তুলনায় বাড়েনি রক্তদাতার সংখ্যা। এর অন্যতম কারণ রক্ত পরিসঞ্চালন সংক্রান্ত সরকারি-বেসরকারি ও স্বেচ্ছাসেবী অধিকাংশ উদ্যোগ শহরমুখী।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাম্প্রতিক বছরে উপজেলা পর্যায়েও স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারিত হয়েছে। সন্তান জন্মদান, সড়ক দুর্ঘটনা ও ছোট-বড় বিভিন্ন অস্ত্রোপচারের জন্য উপজেলা পর্যায়েও রক্তের চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু এসব চাহিদা মেটাতে সরকারি উদ্যোগ খুবই কম।
এমন পরিস্থিতিতে বুধবার (২ নভেম্বর) পালিত হচ্ছে জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান ও রক্তাদাতাদের সংগঠন।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিবসটি উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন। তারা রক্তদান সংশ্লিষ্ট সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং সন্ধানী কেন্দ্রীয় পরিষদ ও সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতির উদ্যোগে দিবসটি দেশব্যাপী পালিত হচ্ছে।
বাংলাদেশে স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান আন্দোলনের পথিকৃৎ ‘সন্ধানী’। রক্তদানের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি মানুষের চক্ষু ব্যাংক হিসেবেও কাজ করে। মৃত্যুর আগে স্বেচ্ছাপ্রণোদিত চক্ষুদানের বিষয়ে উৎসাহ প্রদান করে থাকে সন্ধানী, যাতে ভবিষ্যতে কেউ ব্যবহার করতে পারেন সেই চোখ।
দেশে বছরে ১০ লাখ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন হয়। আর সংগৃহীত হয় ৭ লাখ ব্যাগ রক্ত। বছরে প্রায় ৩ লাখ ব্যাগ রক্তের ঘাটতি থাকে।
বিপরীতে দেশে এখন প্রায় ১৪ লাখ মানুষ অন্ধত্ব বরণ করে আছে এবং বছরে প্রায় ৫ লাখ মানুষ কর্নিয়াজনিত দৃষ্টি সমস্যায় ভুগছেন। দেশে কর্নিয়াজনিত অন্ধত্ব দূর করতে আগামী ১০ বছরে প্রতি বছরে ৩৬ হাজার কর্নিয়া সংগ্রহ করা প্রয়োজন, যা মৃতের মাত্র ২ শতাংশ।
১৯৭৮ সালের ২ নভেম্বর ডিএমসিএইচ ব্লাড ব্যাংকে সন্ধানী প্রথমবারের মতো স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করে। পরবর্তীতে এই দিনটিকেই ‘জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস’ হিসেবে পালন করার ঘোষণা দেওয়া হয়।