প্রতীকী কফিন নিয়ে তামাক আইন সংশোধন দাবি

অনলাইন ডেস্ক
2022-10-15 17:05:20
প্রতীকী কফিন নিয়ে তামাক আইন সংশোধন দাবি

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন প্রক্রিয়া অবিলম্বে সম্পন্নের দাবিতে প্রতীকী লাশের কফিনসহ মানববন্ধন করেছে তামাকবিরোধী সংগঠনগুলো

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন প্রক্রিয়া অবিলম্বে সম্পন্নের দাবিতে প্রতীকী লাশের কফিনসহ মানববন্ধন করেছে তামাকবিরোধী সংগঠনগুলো। মানববন্ধন শেষে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হয়। শনিবার (১৫ অক্টোবর) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত প্রতীকী এ কর্মসূচিতে প্রগতির জন্য জ্ঞান (প্রজ্ঞা), অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স (আত্মা) এবং প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, তামাকের ব্যবহার হ্রাসের জন্য সংশোধনীর মাধ্যমে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে খসড়া সংশোধনী প্রস্তুত, ওয়েবসাইটে প্রকাশ এবং অংশীজনের মতামত গ্রহণের কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু তামাক কোম্পানিগুলো সরকারের এই মহতী উদ্যোগকে বাধাগ্রস্ত করতে নানাবিধ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা তথ্য প্রচার করছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এফসিটিসি-তে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা ও পদক্ষেপসমূহ তামাক কোম্পানির ব্যবসায়িক ও অন্যান্য স্বার্থ থেকে সুরক্ষা করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। বিশেষ করে এফসিটিসি আর্টিকেল ৫.৩ এ তামাক নিয়ন্ত্রণের জন্য নীতি প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নে সরকারকে তামাক কোম্পানির প্রভাবমুক্ত রাখতে সুপারিশ করা হয়েছে।

তারা জানান, বর্তমানে তামাক ব্যবহার করেন প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠীর ৩৫ দশমিক ৩০ শতাংশ (৩ কোটি ৭৮ লাখ)। প্রতি বছর তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ মারা যায়। দেশে তামাক ব্যবহারজনিত মৃত্যু ও অসুস্থতায় বছরে ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়, যা তামাক খাত থেকে অর্জিত রাজস্ব আয়ের চেয়ে অনেক বেশি। তামাক ব্যবহারজনিত এই ক্ষয়ক্ষতি এবং ভয়াবহতা উপলব্ধি করে প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন এবং এ লক্ষ্য অর্জনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল— এফসিটিসি’র সাথে সামঞ্জস্য রেখে ২০১৬ সালে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের নির্দেশনা প্রদান করেছেন।

এ অবস্থায় আইন সংশোধনে যত দেরি হবে তামাকজনিত মৃত্যু ততোই বাড়তে থাকবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন বক্তারা।

ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে) এর সহায়তায় মানববন্ধন কর্মসূচিতে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন, টিসিআরসি, ডরপ, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, নাটাব, ধূমপান মাদক ও দুর্নীতি বিরোধী ফাউন্ডেশন, ঢাকা আহছানিয়া মিশনসহ বিভিন্ন তামাকবিরোধী সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া সংশোধনীতে যেসব প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তারমধ্যে রয়েছে, সকল পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ রাখার বিধান বিলুপ্ত করা; বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্য বা প্যাকেট প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা; তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা; সব ধরনের খুচরা বা খোলা তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় নিষিদ্ধ করা; ই-সিগারেট, ভ্যাপিং, হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্টসহ এধরনের সকল পণ্য উৎপাদন, আমদানি ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ করা; এবং তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট বা মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ৯০ শতাংশ করা ইত্যাদি।


আরও দেখুন: