মোবাইলের নেশা বাড়ায় হতাশা ৬ শতাংশের বেশি

ডক্টর টিভি রিপোর্ট
2022-10-10 19:04:35
মোবাইলের নেশা বাড়ায় হতাশা  ৬ শতাংশের বেশি

২০১৯ সালে ১৭ জন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করে।

মোবাইল কিংবা ইন্টারনেট ব্যবহারের নেশায় হতাশা বাড়ার আশঙ্কা বাড়ে ৬ শতাংশের বেশি। শুধু তাই নয়, ১৫ থেকে ১৯ বছরের কিশোর-কিশোরীদের মৃত্যুর চতুর্থ প্রধান কারণ আত্মহত্যা।

আজ (১০ অক্টোবর) বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস’২২ উপলক্ষে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে আয়োজিত সেমিনারে এসব তথ্য উঠে আসে।

সেমিনারে আরো জানানো হয়, মেডিকেল শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্রমেই বাড়ছে আত্মহত্যা ও আত্মহত্যার চেষ্টার প্রবণতা। সারাদেশে ছয় দশমিক সাত শতাংশ মানুষ ডিপ্রেশন ডিসঅর্ডারে ভূগছে, যেখানে মেডিকেল শিক্ষার্থী ১৮ শতাংশ। আর এ্যানজাইটি ডিসঅর্ডারে ভূগছে ৩৩ শতাংশ শিক্ষার্থী। করোনা মহামারীর পর এর হার বেড়েছে আরো বেশি। ২০১৯ সালে ১৭ জন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করে। ২০২২ সালে এর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫০ জনে।

হতাশা থেকেই আত্মহত্যার ঘটনাগুলো ঘটছে। পরিসংখ্যান বলছে, পড়াশোনার চাপ, ক্যারিয়ার নিয়ে দুশ্চিন্তা কিংবা ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভাঙনের কারণে এ ধরণের ঘটনাগুলো বেশি ঘটছে ।

অন্যদিকে মানসিক অবসাদ বা হতাশায় ভূগলে বিষেশজ্ঞের কাছে ধর্ণা দেন এমন রোগীর সংখ্যাও কম। এর কারণ হিসেবে মানসিক যে কোনো অসুস্থতা সম্পর্কে সমাজের নানা রকম কুসংস্কার ও অজ্ঞতাই প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। পুরো বিশ্বে মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করলেও আমাদের দেশে বিষয়টি ব্যক্তিগত ও সামাজিক পর্যায়ে বরাবরই উপেক্ষিত।

এসময় বক্তারা শিক্ষার্থীদের ধর্মীয় বিশ্বাস বৃদ্ধি ও নৈতিকতা মেনে চলার পরামর্শ দেন। সেই সাথে মানসিক অবসাদে ভূগলে সংকোচ ভুলে বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়ারও পরামর্শ দেন তাঁরা।

কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নুরুল হুদা ল্যানিন বলেন, শারীরিক ও মানসিক সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতে খেলাধুলার মত সুস্থ্য বিনোদনের বিকল্প নেই। সেই সাথে থাকতে হবে নৈতিকতা ও ধর্মীয় বিশ্বাস। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের হলে ইনডোর গেমসের ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের (বিএমআরস) চেয়ারম্যান অধ্যাপক  ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী। 

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন এসএসএমসি ও মিটফোর্ড হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী মোঃ রশিদ-উন-নবী ও স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল অধ্যাপক ডা. ডিজিএম আকলদুজ্জামান। 

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নুরুল হুদা ল্যানিন। সহ-সভাপতি ছিলেন মনোরোগ বিভাগের প্রধান ডা. এম.এস. কবির জুয়েল।

সেমিনারে আরো বক্তব্য রাখেন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের মনোরোগ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মোঃ রশিদুল হক, ডা. এ এম ফরিদুজ্জামান এমডি (সাইকিয়াট্রি) ও ডা. তৌহিদুল ইসলাম এমডি (সাইকিয়াট্রি)। 

  “সবার জন্য মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং ভালো থাকাই হোক বৈশ্বিক অগ্রাধিকার”- এই প্রতিপাদ্যে আজ পালিত হচ্ছে এবারের বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস।  


আরও দেখুন: