চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ৬৫তম বর্ষপূর্তি পালিত

অনলাইন ডেস্ক
2022-09-21 09:18:57
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ৬৫তম বর্ষপূর্তি পালিত

নানা আয়োজনে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) ৬৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

নানা আয়োজনে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) ৬৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি জাগ্রত রেসকোর্সে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্যদিয়ে শুরু হয় নির্ধারিত কর্মসূচি। 

এরপর পুরাতন প্রশাসনিক ব্লকের প্রিন্সিপাল লবি থেকে র‍্যালি বের হয়। র‍্যালিটি ক্যাম্পাসের আশেপাশে গুরুত্বপূর্ণ সড়কসমূহ প্রদক্ষিণ শেষে শাহ আলম বীর উত্তম মিলনায়তনে এসে শেষ হয়।

সকাল সাড়ে ৯টায় শাহ আলম বীর-উত্তম মিলনায়নে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত।  এ সময় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তার, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মো. শামীম আহসান, উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. হাফিজুল ইসলাম, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি ডা. মো. অধ্যাপক মোহাম্মদ মনোয়ার উল হক, সাধারণ সম্পাদক ডা. প্রণয় কুমার দত্ত-সহ অনেকে। 

অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের বিভিন্ন বিভাগের প্রধান, অধ্যাপক, শিক্ষক, চিকিৎসকসহ সহস্রাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। আলোচনা সভা শেষে কেক কাটার মাধ্যমে বর্ষপূর্তি উদযাপনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ দেশের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী মেডিকেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ৬ই আগষ্ট ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে তৎকালিন প্রাদেশিক সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরোওয়ার্দী এবং প্রাদেশিক মন্ত্রী হিসাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর পদধূলিতে শুভ উদ্বোধনের মাধ্যমে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের যাত্রা শুরু হয়। কিন্তু এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ২০ শে সেপ্টেম্বর ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে। এজন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ‘কলেজ ডে’ হিসাবে ২০ সেপ্টেম্বর নির্ধারন করা হয়েছে এবং প্রতিবছর তা পালিত হচ্ছে। এরপর দীর্ঘ পথ পেরিয়ে আজ এটি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সরকারি মেডিকেল কলেজ। যা এই অঞ্চলের ৫ কোটির অধিক জনগনের একমাত্র তৃতীয় মাত্রার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

নানা সংকট ও সীমাবদ্ধতার মধ্যেও কলেজটি দেশের চিকিৎসা ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। ভালো মানের চিকিৎসক তৈরির পাশাপাশি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই জাতির দুঃসময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করা চিকিৎসকদের মধ্যে একমাত্র বীরউত্তম উপাধিতে ভূষিত শাহ আলম এ কলেজের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।
এমবিবিএস কোর্সে ৫০টি আসন নিয়ে

১৯৫৭ সালের ২০ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানাধীন কে. বি. ফজলুল কাদের রোডে ৮০ একর জায়গা নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের যাত্রা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত এবং যুক্তরাজ্যের জেনারেল মেডিকেল কাউন্সিল স্বীকৃত এ সরকারি চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে প্রতি শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস কোর্সে দুই শতাধিক ও বিডিএস কোর্সে ৬০ শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। এছাড়া প্রতিবছর গড়ে ২৫ থেকে ৩০ জন বিদেশি শিক্ষার্থীও ভর্তি হয়। বর্তমানে শতাধিক বিদেশি শিক্ষার্থী বিভিন্ন বর্ষে অধ্যয়ন করছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ১৯৯২ সাল থেকে বিভিন্ন বিষয়ে এমফিল, ডিপ্লোমা ও ২০০২ সাল থেকে এমডি-এমএসসহ ৩৬টি স্নাতকোত্তর কোর্স চালু রয়েছে। চলতি বছরের জুলাই শিক্ষাবর্ষ থেকে মেডিসিন, সার্জারি, পেডিয়াট্রিক্স এবং অবস্ অ্যান্ড গাইনী বিষয়ে এফসিপিএস কোর্স চালু হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক এম এ ফয়েজ, সাবেক মন্ত্রী ডা. আফছারুল আমীন, জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের উপদেষ্টা ডা. সামন্ত লাল সেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. ইসমাইল খানসহ অনেক গুণীজন এ মেডিকেল কলেজেরই শিক্ষার্থী। এদের মতোই দেশের জন্য মানসম্মত চিকিৎসক তৈরির আলোকিত প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ।

দেশের পাশাপাশি বিদেশেও সুনামের সঙ্গে এ কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা পেশাদারিত্ব দেখিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমানে ফ্লোরিডায় ডা. বি এম আতিকুর জামান, সুইডেনের উপসালা ইউনিভার্সিটিতে ডা. শহিদুল ইসলাম, আমেরিকায় প্রফেসর ডা. ইউনুছ, লন্ডনে ডা. এম এ মবিনসহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অনেক সাবেক শিক্ষার্থী সুনামের সাথে দেশ-বিদেশের নামিদামি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ও হাসপাতালে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করছেন|


আরও দেখুন: