তৃণমূলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা মাতৃ-স্বাস্থ্য নিশ্চিত করছে ‘কানেক্টিং বরুড়া’
বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. কামরুল হাসান সোহেল
কমিউনিটি ক্লিনিকে আগত গর্ভবতীদের বিশেষজ্ঞ স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে অনলাইন জুম মিটিং এর সাহায্যে গাইনী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সেবা দিয়ে থাকে বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। স্থানীয়ভাবে যার নাম দেয়া হয়েছে "কানেক্টিং বরুড়া"। এর ফলে সেখানে ধীরে ধীরে বাড়ছে প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব এবং গর্ভকালীন সেবা গ্রহীতার সংখ্যা। ডক্টর টিভিকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানান কুমিল্লার বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কামরুল হাসান সোহেল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ডক্টর টিভির সিনিয়র প্রতিবেদক ইলিয়াস হোসেন। পাঠকদের জন্য কথামালার চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো।
ডক্টর টিভি : আপনার উপজেলার স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে কিছু বলুন
ডা. কামরুল হাসান সোহেল : বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রদত্ত স্বাস্থ্য সেবা সমূহ হলো
➡️বহির্বিভাগ সেবা,
➡️অন্তঃবিভাগ সেবা,
➡️জরুরি সেবা,
➡️কমিউনিটি ভিশন সেন্টার সেবা,
➡️প্যাথলজি সেবা,
➡️এক্সরে সেবা,
➡️জিন এক্সপার্ট সেবা,
➡️এএনসি, পিএনসি সেবা,
➡️ভায়া এন্ড সিবিই সেবা,
➡️ডটস কর্ণার সেবা,
➡️এনসিডি কর্ণার সেবা,
➡️সমন্বিত শিশু স্বাস্থ্য সেবা (আই এম সি আই) সেবা,
➡️ দন্ত বিভাগের সেবা,
➡️আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা সেবা,
➡️ ২৪ ঘন্টা নরমাল ডেলিভারি সেবা,
➡️সার্জারী ওটি,
➡️গাইনি ওটি (সিজারিয়ান অপারেশন) সেবা,
➡️ইপি আই সেবা,
➡️কোভিড ভ্যাক্সিনেশন সেবা,
➡️আল্ট্রাসনোগ্রাম সেবা দেয়া হয়
ডক্টর টিভি : আপনি দায়িত্ব নেওয়ার নতুন কী কী পদক্ষেপ নিয়েছেন?
ডা. কামরুল হাসান সোহেল : আমি দায়িত্ব নেয়ার পর সর্বপ্রথম বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অপারেশন থিয়েটার চালুর উদ্যোগ নেই, কুমিল্লা জেলার সুযোগ্য সিভিল সার্জন ডাঃ মীর মোবারক হোসাইন স্যারের সুদক্ষ দিক নির্দেশনা এবং প্রত্যক্ষ সহোযোগিতায় গত ৬ ডিসেম্বর ২০২১ইং বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠার ৫৬ বছর পর সর্বপ্রথম বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওটি চালু করি। তারপর থেকে নিয়মিত সার্জারীর ওটি হচ্ছে।এখন পর্যন্ত ৫০ টি মেজর অপারেশন এবং ১৫০ এর অধিক মাইনর অপারেশন হয়েছে।
মাতৃ ও শিশু মৃত্যু হ্রাসকল্পে প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারিতে গর্ভবতী মায়েদের উৎসাহিত করার উদ্যোগ নেই, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নরমাল ডেলিভারিতে জন্ম নেওয়া নবজাতকদের ইউএইচএফপিও এর পক্ষ থেকে উপহার দেয়ার প্রচলন শুরু করি। এর ফলে বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নরমাল ডেলিভারির সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। প্রতি মাসে আগে ২০-২৫ টা নরমাল ডেলিভারি হতো এখন প্রতি মাসে গড়ে ৫০ টা নরমাল ডেলিভারি হয়।
বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নরমাল ডেলিভারি ও সিজারিয়ান অপারেশন করতে আগ্রহী গর্ভবতীদের বাড়ি থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা এবং যাওয়ায় জন্য ফ্রি এম্বুলেন্স সার্ভিস এর ব্যবস্থা করেছি।
বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি প্রসূতি সেবা সিজারিয়ান অপারেশন চালু করি ১০ এপ্রিল ২০২২ইং, বর্তমানে প্রতি সপ্তাহে নিয়মিত সিজারিয়ান অপারেশন হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ৪০ টি সিজারিয়ান অপারেশন হয়েছে বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আগত সেবাপ্রার্থীদের দ্রুততম সময়ে সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে অন্তঃবিভাগ, জরুরি বিভাগ, জরুরি বিভাগের চিকিৎসকের রুম, অফিস রুম, ইউএইচএফপিও রুমে ইন্টারকম কানেকশন স্থাপন করেছি।
বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত চিকিৎসক, এসএসএন, স্যাকমো,স্টাফ সহ আগত সেবাগ্রহীতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে সিসি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসি।
জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের সরকারি ঔষধ প্রাপ্তি নিশ্চিত করি, আন্তঃবিভাগে ভর্তিকৃত রোগীদের সরকারি ঔষধ প্রাপ্তি নিশ্চিত করি, বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ফুল কোর্স এন্টিবায়োটিক দেয়া নিশ্চিত করি।
জরুরি বিভাগে সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসার জন্য এন্টি স্নেইক ভেনম, কুকুরে কামড়ের রোগীদের জন্য এন্টি র্যাবিস ভ্যাক্সিন প্রাপ্তি নিশ্চিত করি।
জরুরি বিভাগে ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এর জন্য ইমার্জেন্সি ড্রাগ বক্স এর চালু করি। জরুরি বিভাগে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীদের ফার্স্ট ডোজ এন্টিবায়োটিক সহ অন্যান্য ঔষধ প্রাপ্তি নিশ্চিত করি।
বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনসিডি কর্ণার চালু করি। এনসিডি কর্ণারে সেবা নিতে আসা ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, শ্বাসকষ্ট রোগীদের জন্য ১ মাসের ঔষধ প্রাপ্তি নিশ্চিত করি।
বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরিপূর্ণ ডেন্টাল ইউনিট চালু করি। বরুড়া উপজেলা পরিষদ পরিচালন ও উন্নয়ন প্রকল্প(জাইকা) থেকে একটি ডেন্টাল ইউনিট সংগ্রহ করে পূর্ণাঙ্গ দন্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করি। উপজেলা পর্যায়ে দাতের ফিলিং,স্কেলিং, লাইট কিউর ফিলিং এবং টুথ এক্সট্রাকশন সেবা দেয়া হচ্ছে বর্তমানে।
কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবা নিতে আসা গর্ভবতীরা যেন কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা সেবা ও পরামর্শ গ্রহণ করতে পারে সেজন্য চালু করি অনলাইন চিকিৎসা ও পরামর্শ বিষয়ক সেবা "Connecting Barura"
প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার/শনিবার বরুড়া উপজেলার ৪০ টি কমিউনিটি ক্লিনিকর সাথে বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে জুম লিংক এর মাধ্যমে সংযুক্ত হয়ে স্বাস্থ্য সেবা ও পরামর্শ দেয়া হয়।
গর্ভবতীদের গর্ভকালীন ৪টি এ এন সি সেবা নিশ্চিত করার জন্য ইউনিয়ন ভিত্তিক গর্ভবতীদের তালিকা সংগ্রহ করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এ এন সি কর্ণার থেকে মিডওয়াইফদের মাধ্যমে তাদেরকে ৪টি এ এন সি ভিজিট নিতে ভিজিটের সময় হলে সরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে সেবা নিতে আসার জন্য মোবাইল ফোনে তাদের সাথে যোগাযোগ করা হয় এবং তাদের ভিজিট নিশ্চিত করা হয়।
মাঠ পর্যায়ে স্বাস্থ্য কর্মীদের কাজে উৎসাহিত করার জন্য প্রতি মাসে মাঠ পর্যায়ে সেবা প্রদানকারী সেরা ৩ জন সিএইচসিপি, সেরা ৩ জন স্বাস্থ্য সহকারী, সেরা ৩ জন সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শককে সার্টিফিকেট ও পুরষ্কার প্রদান করি।
ডক্টর টিভি : এই এলাকার স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে কোন কোন বিষয় বিশেষ জরুরি?
ডা. কামরুল হাসান সোহেল : এই এলাকার স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়নে বিশেষ জরুরি হলো জনগণকে "স্বাস্থ্য ই সকল সুখের মূল" এই বিষয়টি যেন তারা উপলব্ধি করতে পারে সেইজন্য তাদেরকে স্বাস্থ্য সচেতন করে তোলা। পুষ্টিকর ও সুষম খাবার খেতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভকালীন সময়ে কমপক্ষে চারটি এ এন সি সেবা নিশ্চিত করা। সুস্থ মা ই একজন সুস্থ শিশুর জন্ম দিতে পারে এই বিষয়ে তাদের সচেতন করতে হবে।
বাড়িতে ডেলিভারি করানোকে নিরুৎসাহিত করা এবং শত ভাগ প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারিতে উৎসাহিত করা। এতে করে শিশু মৃত্যু ও মাতৃ মৃত্যু কমে আসবে।
পানিতে ডুবে বাচ্চার মৃত্যু রোধে নিরাপদ সবুজ বেষ্টনী বা গ্রীণ ফেন্সিং চালু করতে হবে। বাড়ির আশেপাশে পুকুর বা জলাশয় থাকলে তার চারপাশে এই নিরাপদ সবুজ বেষ্টনী দিতে হবে।
ডক্টর টিভি : সরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে এই এলাকার মানুষের মনোভাব কেমন?
ডা. কামরুল হাসান সোহেল : সরকারি হাসপাতালে সেবা নিতে আসা সেবাগ্রহীতারা বর্তমানে সরকারি হাসপাতালের সেবা নিয়ে খুবই সন্তুষ্ট। সরকারি হাসপাতালে সেবা নিতে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে সবার মাঝে।
ডক্টর টিভি : আপনার হাসপাতালে কতটি পদ রয়েছে, এর মধ্যে পদ খালি আছে কতটুকু? শূন্যপদের চিকিৎসকদের অভাব কিভাবে পূরণ করছেন?
ডা. কামরুল হাসান সোহেল : ৩১ শয্যা বিশিষ্ট বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স+২০ শয্যা সোনাইমুড়ী হাসপাতালে ৮ টি কনসালটেন্ট পদ রয়েছে, কর্মরত আছেন ৩ জন, ৫টি পদ শুন্য রয়েছে। ২৮ জন মেডিকেল অফিসার পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ২৪ জন, ২৪ জনের মধ্যে ৬ জন অন্যত্র সংযুক্তিতে রয়েছেন।
২৬ জন নার্স ও ৬ জন মিডওয়াইফ রয়েছেন।
৪টি পরিচ্ছন্নকর্মী পদের বিপরীতে ২ জন পরিচ্ছন্নকর্মী কর্মরত রয়েছেন। ৩ টি পদ ই শুন্য।
৫ জন অফিস সহায়ক পদের ৫ টি পদই শুন্য। ৩ জন অফিস সহকারী পদের ৩ টি পদ ই শুন্য, ২ জন নিরাপত্তারক্ষীর ২ টি পদই শুন্য, ১ জন স্টোর কিপারের পদ আছে তা ও শুন্য, ২ জন ফার্মাসিস্ট এর পদ আছে তা ও শুন্য, ২ জন ল্যাব টেকনিশিয়ানের পদের বিপরীতে ১জন কর্মরত আছেন, ১জন কুক, ১ জন মশালচি দুইটি পদ-ই শুন্য।জুনিয়র মেকানিকের ১ টি পদ তা ও শুন্য।
মাঠ পর্যায়ে ৬০ জন স্বাস্থ্য সহকারী পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ২২ জন স্বাস্থ্য সহকারী, ১৫ জন সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ৯ জন সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, ৪ জন স্বাস্থ্য পরিদর্শকের স্থলে কর্মরত আছেন ২ জন
অর্ধেকের ও কম জনবল নিয়ে ৫ লক্ষাধিক মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত হিমশিম খেতে হচ্ছে বিশেষ করে হাসপাতাল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা খুবই কষ্টকর হয়ে যায়।নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় হাসপাতাল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে।
ডক্টর টিভি : আপনার হাসপাতালে সাপে কাটা রোগী ও কুকুরে কামড়ানো রোগীর চিকিৎসা দেওয়ার সুযোগ সুবিধা কেমন?
ডা. কামরুল হাসান সোহেল : বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাপে কাটা রোগীর জন্য এন্টি স্নেইক ভেনম আছে, কুকুরে কামড়ানো রোগীর চিকিৎসার জন্য এন্টি র্যাবিস ভ্যাক্সিন ও আছে।
ডক্টর টিভি : আপনার হাসপাতালে কোন রোগী বেশি আসে?
ডা. কামরুল হাসান সোহেল : বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে সবচেয়ে বেশি রোগী আসে ১৪ বছর বা তার কম বয়সী শিশু, মহিলা রোগীর সংখ্যা ও অনেক। বহির্বিভাগ ও আন্তঃবিভাগে ভর্তিকৃত বাচ্চাদের অধিকাংশই নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, জ্বর, সর্দি,কাশি তে ভুগে, চর্মরোগের প্রাদুর্ভাব ও অনেক বেশি থাকে।
বহির্বিভাগে সেবা গ্রহীতা মহিলা রোগীদের অধিকাংশ ই বাত,ব্যথার রোগী, এছাড়া শ্বাসকষ্ট, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসের রোগী ও থাকে। ভর্তিকৃত রোগীদের অধিকাংশ জ্বর,পেট ব্যথা, শ্বাসকষ্টের রোগী।
হাসপাতালে ভর্তিকৃত পুরুষ রোগীদের অধিকাংশ ই মারামারি, সড়ক দুর্ঘটনার শিকার, শ্বাসকষ্টের রোগী। এছাড়া বহির্বিভাগে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, শ্বাসকষ্টের রোগী ই থাকে অধিকাংশ।
ডক্টর টিভি : দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কখনও কোনো ধরনের প্রতিকূলতার সম্মূখীন হয়েছেন কিনা? হয়ে থাকলে কীভাবে তা মোকাবেলা করেছেন?
ডা. কামরুল হাসান সোহেল : দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত কোন প্রতিকূলতার শিকার হইনি। উল্টো বরুড়ার গণমানুষের নেতা, জননেতা নাছিমুল আলম চৌধুরী (নজরুল) এমপি মহোদয় সহ, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ এন এম মাইনুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবরিনা আফরিন মুস্তাফা, অন্যান্য জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক এলাকাবাসী সহ সবার সমর্থন ও সহযোগিতা পেয়েছি। সর্বোপরি আমাদের কুমিল্লা জেলার সুযোগ্য সিভিল সার্জন, ডায়নামিক, ক্যারিশমাটিক লিডার ডাঃ মীর মোবারক হোসাইন স্যারের দিক নির্দেশনা ও সহযোগিতার ফলেই বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবার পরিধি ও মান বাড়ানো সম্ভব হয়েছে। সবার প্রতি জানাই অপরিসীম কৃতজ্ঞতা।
একইসঙ্গে আমার চিকিৎসক, নার্স, মিডওয়াইফ, আয়া, পরিচ্ছন্নকর্মী, ওয়ার্ডবয়, এম্বুলেন্স ড্রাইভার, ল্যাব টেকনিশিয়ান, অফিস স্টাফ, মাঠকর্মী সহ টিম বরুড়ার সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবার মান বাড়াতে আমাকে সর্বাত্মক সহায়তা করার জন্য।
ডক্টর টিভি : দেশের চিকিৎসকদের উদ্দেশে আপনার পরামর্শ কী?
ডা. কামরুল হাসান সোহেল : দেশের চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে আমার পরামর্শ হলো, আপনার আপনাদের নিজ নিজ ক্ষেত্র থেকে আমাদের দেশের গরীব, দুঃখী, অসহায় রোগীদের আপনাদের সাধ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করবেন, তাদের সাথে হাসিমুখে কথা বলবেন, তাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনবেন। এরা আমাদেরই কারো না কারো বাবা, মা,ভাই,বোন তাদের সাথে নিজের বাবা,মা,ভাই বোনের মতোই ভাল আচরণ করুন।
ইনশাআল্লাহ আমাদের সবার এই পজিটিভ মানসিকতায় বদলে যাবে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার চিত্র, চিকিৎসকদের উপর এবং বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার উপর রোগীদের আস্থা ফিরে আসবে একদিন।
ডক্টর টিভি : আপনার জন্ম বেড়ে ওঠা, পরিবার, শিক্ষাজীবন ও কর্মজীবন সম্পর্কে জানতে চাই
ডা. কামরুল হাসান সোহেল : আমি ১৯৭৯ সালের ৭ই জুলাই জন্মগ্রহণ করি।যদিও আমার জন্ম হয় কুমিল্লা জেলার আদর্শ সদর উপজেলার ছোটরা গ্রামে কিন্তু আমার বাবার বাড়ি ব্রাক্ষণবাড়ীয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার বরিশল গ্রামে।
আমার বাবা মরহুম মোহাম্মদ আব্দুল হাই ভূইয়া গণপুর্ত অধিদপ্তরে চাকরি করতেন, মা মরহুম মোছাম্মাৎ জাহানারা বেগম ছিলেন গৃহিণী।
আমার বেড়ে উঠা কুমিল্লা শহরেই, পড়াশোনা করেছি আওয়ার লেডি অব ফাতিমা স্কুল, গুলবাগিচা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কুমিল্লা জিলা স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেছি ১৯৯৪ সালে। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছি ১৯৯৬ সালে। ১৯৯৭-৯৮ সেশনে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস কোর্সে চান্স পাই। ২০০৫ সালে এমবিবিএস পাস করি, ২০০৬ সালে ইন্টার্নশিপ শেষ করি এবং ২০০৬ সালে কুমিল্লা সেন্ট্রাল মেডিকেল কলেজে ফিজিওলজির প্রভাষক পদে যোগদান করি। ২০০৯ সালে কুমিল্লা ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজে ফিজিওলজির প্রভাষক হিসেবে যোগদান করি।
২৮ তম বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডার পদে উত্তীর্ণ হয়ে ২০১০ সালের ১ লা ডিসেম্বর কুমিল্লার ব্রাক্ষণপাড়া উপজেলায় সহকারী সার্জন পদে সরকারি চাকরিতে যোগদান করি। ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা পদে যোগদান করি। ২০২১ সালের ৬ অক্টোবর বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা পদে যোগদান করি।