টিকাদানে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে স্পষ্টত এগিয়ে বাংলাদেশ
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে টিকাদান কার্যক্রমে বাংলাদেশ স্পষ্টতই যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বাংলাদেশের সফলতার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
তিনি বলেছেন, এটি অসামান্য দক্ষতা এবং সত্যিই বিস্ময়কর। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে টিকাদান কার্যক্রমে বাংলাদেশ স্পষ্টতই যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। খবর বাসসের।
মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাতে এসে এ কথা বলেন। পরে বৈঠকের আলোচনা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। বৈঠকে অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের বিষয়ে ঢাকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস জানিয়েছে, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন পিটার হাস। সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের মধ্যকার ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান ইতিবাচক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অর্জনগুলো নিয়ে আলোচনা করেন। পাশাপাশি কী করে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও জোরদার করা যায় সেসব বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
এ মহামারীর ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি মোকাবিলায় ‘গ্লোবাল কভিড অ্যাকশন প্ল্যান’ নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে নিজ দেশের আগ্রহের কথা জানান পিটার।
এ সময় শেখ হাসিনা কভিড-১৯ মহামারী মোকাবিলায় সাফল্যের বিষয়ে বলেন, তার দল এবং সহযোগী সংগঠনগুলো সচেতনতা বৃদ্ধি, রোগীদের সেবা এবং ওষুধ ও অক্সিজেন বিতরণের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা কাজ করার মাধ্যমে শুরু থেকেই দক্ষতার সঙ্গে মহামারী পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে।
সরকারপ্রধান পিটার হাসকে বলেন, যখন ভ্যাকসিন পাওয়া গেছে, তার সরকার জনগণকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিনের প্রথম, দ্বিতীয় এবং বুস্টার ডোজ সরবরাহ করেছে। এখন সরকার শিশুদের টিকা দিচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তিনি কভিড-১৯ টিকা প্রকল্প পরিচালনার জন্য অন্যান্য মন্ত্রণালয় এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে সমন্বয় করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে একটি কমিটি গঠন করেছিলেন, যা সত্যিই ভালো কাজ করেছে।
সে সময় তিনি নিজেই সবার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন বলে জানান শেখ হাসিনা। তিনি বাংলাদেশে ভ্যাকসিন প্রদানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
কভিড-১৯ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তারা পূর্ণ সামর্থ্য নিয়ে জনগণের জন্য কাজ করার চেষ্টা করছেন।
কভিড-১৯ এর বিপর্যয়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও, বাংলাদেশ উন্নতি অব্যাহত রাখবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী এই লক্ষ্যে সমাজের প্রান্তিক মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে তার সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলোও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, তার সরকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ভাগ্য পরিবর্তনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে কাজ করে যাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের তথ্য মতে, বৈঠক সম্পর্কে পিটার হাস বলেন, আমাদের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা, নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন, রোহিঙ্গা শরণার্থী সহায়তা ও কভিড-১৯সহ বিভিন্ন বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।
পিটার হাস বলেন, আলোচনাকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলেছি যে, আমি মনে করি আমাদের সবচেয়ে বেশি যৌথ গৌরবের অর্জনগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো কভিড-১৯ সংকট সম্মিলিতভাবে মোকাবিলা করা।
রাষ্ট্রদূত বলেন, আমি বাংলাদেশের ৭০ শতাংশের বেশি জনসংখ্যাকে টিকা দেওয়ার প্রচেষ্টার প্রশংসা করি। বৈঠকে তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং তাদের আশ্রয়দানকারী স্থানীয় বাংলাদেশি জনগোষ্ঠীকে সহায়তা দেওয়া অব্যাহত রাখার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।