এবার ৩ বাংলাদেশির দেহে শনাক্ত হলো করোনার ওমিক্রনের নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট (উপধরন)। মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রোনার এই নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তের তথ্য নিশ্চিত করেছেন যবিপ্রবির উপাচার্য ও জেনোম সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন। এর আগে রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) জিনোম সেন্টারের একদল গবেষক আক্রান্ত ৩ জনের দেহ থেকে সংগৃহীত ভাইরাসের আংশিক (স্পাইক প্রোটিন) জিনোম সিকুয়েন্সের মাধ্যমে করোনার এই নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত করে। আক্রান্তরা সবাই যশোরের বাসিন্দা।

গবেষক দল আরও জানান, ওমিক্রনের নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট আক্রান্তরা সবাই পুরুষ। তাদের একজনের বয়স ৫৫ এবং বাকি দুজনের বয়স ৮৫ বছর। তাদের মধ্যে একজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অন্যরা বাসাতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। আক্রান্তদের শরীরে জ্বর, গলাব্যথা, সর্দি-কাশিসহ বিভিন্ন মৃদু উপসর্গ রয়েছে। BA.2.75 সাব-ভ্যারিয়েন্টে স্পাইক প্রোটিনে ওমিক্রনের BA.2 ভ্যারিয়েন্টের মতোই মিউটেশন দেখা যায়। তবে তার সঙ্গে দুটি রিভার্সন মিউটেশন G446S এবং R493Q দেখা যায়।

তারা আরও জানান, ওমিক্রনের এই সাব-ভ্যারিয়েন্টটি প্রথম শনাক্ত হয় জুলাই মাসে ভারতে। আগস্টে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এটি শনাক্ত হয়। ভ্যাকসিন নেয়ার পরও এই সাব-ভ্যারিয়েন্ট দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছেন। আগামীতে এই সাব-ভ্যারিয়েন্ট বর্তমানে সংক্রমণশীল অন্যান্য সাব-ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় বেশি সংক্রমণ ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা। 

যবিপ্রবির উপাচার্য ও জেনোম সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ওমিক্রনের এই সাব-ভ্যারিয়েন্টটি মানুষের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সহজেই ফাঁকি দিতে সক্ষম। এ কারণে মাস্ক ব্যবহারসহ কঠোরভাবে করোনাকালীন স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বিকল্প নেই। অচিরেই পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিকুয়েন্স করে এ বিষয়ে আরও তথ্য জানা সম্ভব হবে। একই সঙ্গে এই সাব-ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তকরণের কাজ জিনোম সেন্টারে অব্যাহত থাকবে।

উল্লেখ্য, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ও জিনোম সেন্টারের সহযোগী পরিচালক অধ্যাপক ড. ইকবাল কবীর জাহিদের নেতৃত্বে করোনার নতুন এই সাব-ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তে গবেষক দলের অন্য সদস্যরা হলেন বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান ড. হাসান মো. আল-ইমরান, অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. তানভীর ইসলাম, ড. সেলিনা আক্তার, ড. অভিনু কিবরিয়া ইসলাম, জিনোম সেন্টারের গবেষণা সহকারী প্রশান্ত কুমার দাস, মো. আলী আহসান সেতু প্রমুখ।