পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় খুন ডা. জান্নাতুল

ডক্টর টিভি রিপোর্ট
2022-08-13 13:06:25
পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় খুন ডা. জান্নাতুল

জান্নাতুলের জন্মদিন উদযাপনের কথা বলে হোটেলে ডেকে এনে খুন করেন রেজা

বছর দুয়েক আগে গোপনে বিয়ে করেন রেজাউল করিম রেজা ও ডা. জান্নাতুল নাঈম সিদ্দিকা। বিয়ের পর একাধিক নারীর সঙ্গে স্বামীর পরকীয়া জেনে যান জান্নাতুল। ক্ষতিকর পথ থেকে ফেরানোর চেষ্টাতেই বেঁকে বসেন রেজা। স্ত্রীকে প্রধান কাঁটা মনে করে হত্যার পরিকল্পনা করেন। এরপর গত ১০ আগস্ট জন্মদিন উদযাপনের জন্য জান্নাতুলকে রাজধানীর পান্থপথের ফ্যামিলি সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্ট নামের আবাসিক হোটেলে ডেকে নিয়ে গলা কেটে হত্যা করেন রেজা।

এরপর আত্মগোপনে চলে যাওয়া রেজাকে ১১ আগস্ট চট্টগ্রাম নগরীর মুরাদপুর থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। হত্যাকাণ্ডের সময় আসামির পরিহিত রক্তমাখা গেঞ্জি, মোবাইল ফোন ও ব্যবহৃত ব্যাগ এবং নিহতের মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জান্নাতুলকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন রেজা।

শুক্রবার (১২ আগস্ট) রাজধানীর কাওরানবাজারে র‌্যাবের মিডয়িা সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

জান্নাতুল মগবাজার কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এমবিবিএস পাস করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গাইনি বিষয়ে একটি কোর্সে অধ্যয়নরত ছিলেন। আর রেজা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সিনিয়র এক্সিকিউটিভ হিসেবে কাজ করছিলেন।

এই ঘটনায় নিহতের বাবা অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক শফিকুল ইসলাম একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেছেন, প্রেমিক রেজাউল করিম রেজাই তার মেয়েকে হত্যা করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ২০১৯ সালে ফেসবুক থেকে দুজনের পরিচয় এবং পরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০২০ সালের অক্টোবরে তারা পরিবারের অগোচরে কাজী অফিসে বিয়ে করেন। এরপর স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে থাকতেন। এর মধ্যে একাধিক নারীর সঙ্গে রেজার সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিষয়টি জানতে পেরে জান্নাত আলাপের মাধ্যমে বিষয়টির সমাধানের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।

তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে তাদের মাঝে বিভিন্ন সময় বাগবিতণ্ডা হতো। তাই রেজা এক পর্যায়ে তার পথের কাঁটা দূর করতে জান্নাতুলকে সুবিধাজনক স্থানে নিয়ে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

খন্দকার আল মঈন বলেন, জান্নাতুলের জন্মদিন উদযাপনের কথা বলে ১০ আগস্ট সকালে তাকে নিয়ে পান্থপথের ফ্যামিলি অ্যাপার্টমেন্ট হোটেলে ওঠেন রেজা। স্ত্রীকে খুন করার উদ্দেশ্যে ব্যাগে করে তিনি ছুরি নিয়ে যান। সেখানে অন্য নারীর সঙ্গে রেজার সম্পর্কের বিষয়টি নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও ধস্তাধস্তি হয়। এক সময় রেজা তার ব্যাগ থেকে ছুরি বের করে জান্নাতুলের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেন। পরে গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে তিনি গোসল করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হন। তারপর জান্নাতের মোবাইল ফোন নিয়ে বাইরে থেকে ওই কক্ষে তালা দিয়ে চলে যান।

র‌্যাব বলছে, হোটেল থেকে বেরিয়ে রেজা প্রথমে মালিবাগে তার বাসায় যান। সেখান থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে একটি হাসপাতালে যান। ধস্তাধস্তিতে তার হাত কেটে গিয়েছিল, সেখানে সেলাই করে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। পরে আরামবাগ থেকে বাসে করে চট্টগ্রামে গিয়ে আত্মগোপন করেন।


আরও দেখুন: