সেই ‘অলৌকিক’ শিশুর ঠাঁই ছোটমণি নিবাসে
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশুটিকে ছাড়পত্র দিয়ে সমাজসেবা কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়
ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলায় ট্রাকচাপায় মায়ের পেট ফেটে জন্ম নেওয়া অলৌকিক শিশুকে রাজধানীর সরকারি ছোটমণি নিবাসে পাঠানো হয়েছে।
শুক্রবার (২৯ জুলাই) বেলা সোয়া ১১টার দিকে একটি মাইক্রোবাসে করে শিশুটিকে নিয়ে ময়মনসিংহ থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেওয়া হয়। গাড়িতে রয়েছেন ত্রিশাল উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান।
শিশুটিকে পুরো যাত্রাপথে কোলে রাখবেন ময়মনসিংহ সরকারি বালিকা এতিমখানার কর্মচারী তাহমিনা আক্তার স্বপ্না। এ ছাড়া দুজন নারী কনস্টেবলসহ মোট তিনজন পুলিশ ও শিশুটির দাদা মোস্তাফিজুর রহমান রয়েছেন এই মাইক্রোবাসে।
সকাল ১০টা থেকেই ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশুটিকে হস্তান্তরের আনুষ্ঠানিকতা হয়। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশুটিকে ছাড়পত্র দিয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হস্তান্তরপত্রে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের পক্ষে স্বাক্ষর করেন ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের নবজাতক ইউনিটের ইনচার্জ (নার্স) শান্তি লতা। আর সমাজসেবা অধিদপ্তরের পক্ষে স্বাক্ষর করেন ত্রিশাল উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান।
১৬ জুলাই ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ট্রাকচাপায় মারা যান শিশুটির বাবা জাহাঙ্গীর আলম (৪২), মা রত্না বেগম (৩২) ও এ দম্পতির ছয় বছর বয়সী মেয়ে সানজিদা। ওই সড়ক দুর্ঘটনার সময় মায়ের পেট ফেটে সড়কেই নবজাতকটির জন্ম হয়।
জন্মের পরপর শিশুটির শিশুটির জন্ডিস, রক্তস্বল্পতা ও শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে ভর্তি করা হয় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডের প্রধান নজরুল ইসলাম বলেন, শিশুটির যেসব সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয়েছিল, সেগুলো সম্পূর্ণ সেরে গেছে। তবে দুর্ঘটনার সময় ভেঙে যাওয়া ডান হাতের কবজি সম্পূর্ণ সারতে আরও দুই সপ্তাহ লাগতে পারে।
শিশুর দাদা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ছয় বছর বয়স পর্যন্ত শিশুটিকে সরকারি নিবাসে রাখা হবে। ছয় বছর পর আবারও আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। এটি জানার পর আমি ছোটমণি নিবাসে দিতে রাজি হয়েছি। এ ছাড়া আমি চাইলে যেকোনো সময় নাতনিকে দেখতে যেতে পারব।
তিনি আরও বলেন, শিশুটির বড় বোন ১০ বছর বয়সী জান্নাত শিশুটির নাম রেখেছে ফাতেমা খাতুন। আমরা এ নামটিই চূড়ান্ত করেছি।