বরগুনায় চিকিৎসকের খোঁজে ঘুরতে ঘুরতে রাস্তায় সন্তান প্রসব

ডক্টর টিভি রিপোর্ট
2022-07-27 14:14:54
বরগুনায় চিকিৎসকের খোঁজে ঘুরতে ঘুরতে রাস্তায় সন্তান প্রসব

বরগুনা শহরের পশু হাসপাতাল সড়কে মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) রাত সোয়া ১২টার দিকে রিমা বেগমের ছেলেসন্তান জন্ম হয়

বরগুনায় সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ঘুরে চিকিৎসক না পেয়ে এক নারী অন্য হাসাপাতালের যাওয়ার পথে সন্তান প্রসব করেছেন।

বরগুনা শহরের পশু হাসপাতাল সড়কে মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) রাত সোয়া ১২টার দিকে রিমা বেগমের ছেলেসন্তান জন্ম হয়। রিমা বরগুনার রিকশাচালক মো. ইব্রাহীমের স্ত্রী।

রিমার শাশুড়ি জানান, মঙ্গলবার সকালে বরগুনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় রিমাকে। সন্ধ্যার পর সে যন্ত্রণায় ছটফট করছিলেন। সে সময় হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, এ হাসপাতালে তার চিকিৎসা হবে না। ক্লিনিকে নিতে বলেন নার্স ও চিকিৎসক।

তিনি বলেন, আমরা অসহায়ের মতো ছটফট করতে থাকি। আমরা গরিব। আবার রিমার অবস্থা খুব খারাপ। তাকে তখন আলরাজি ক্লিনিকে নিয়ে যাই। কিন্তু সেখানে ডাক্তার ছিলেন না। তারপর তাকে শেফা হাসপাতালে নিয়ে যাই। কিন্তু সেখানেো ডাক্তার পাইনি।

শেফা হাসপাতাল থেকে থেকে অন্য হাসপাতালে নেওয়ার পথেই রিমার ছেলেসন্তানের জন্ম হয়।

আবু হানিফ দোলন নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, রাত সাড়ে ১১টার দিকে আলরাজি ক্লিনিকের সামনে দিয়ে আমি বাসায় যাচ্ছিলাম। এমন সময় ক্লিনিকের ভেতরে দুই নারীর আহাজারি শুনে কাছে যাই। পুরো বিষয়টি জানতে পারি। আমি প্রসূতিকে শেফা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যাই। দুর্ভাগ্যবশত সেখানেও ডাক্তার ছিলেন না। পরে ডক্টরস কেয়ার নামে আরেকটি ক্লিনিকে ফোন করে জানতে পারি, সেখানে ডাক্তার আছেন। তখন তাকে সেখানে নেওয়ার পথেই সন্তানের জন্ম হয়।

কী কারণে রিমাকে বরগুনা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া যায়নি সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে সদুত্তর মেলেনি। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক সোহরাব উদ্দিন বলেন, রাতে আমি হাসপাতালে ছিলাম না। রোগীর স্বজনরা চিকিৎসকের সঙ্গে কথা না বলে একজন নার্সের পরামর্শে হাসপাতাল থেকে চলে যান বলে জেনেছি।

তবে শেফা ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ জান্নাতুল আলম লিমা ভূমিকা রাখেন বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, আমি ডিউটি শেষে বাসায় যাই। কিছুক্ষণ পর পশু হাসপাতাল সড়কে প্রসূতির সন্তান প্রসবের খবর পেয়ে আবার হাসপাতালে আসি। প্রসূতিকে উদ্ধার করে আমাদের এখানে আনা হয়। আমি দেখি প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়ায় তার অবস্থা খারাপের দিকে। তাকে দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে বলি। তবে নবজাতক সুস্থ আছে।

পরে রিমাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে এক ইন্টার্ন চিকিৎসক জানান, রিমার রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়েছে। এখন আশঙ্কামুক্ত বলা যায়। ইতিমধ্যে তাকে এক ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়েছে। আরও দুই ব্যাগ রক্ত দিতে হবে।


আরও দেখুন: