দেশের জনসংখ্যা নিয়ে যা না জানলেই নয়
এখন ৯৮ জন পুরুষের বিপরীতে নারীর সংখ্যা ১০০ জন
দেশের প্রথম ডিজিটাল জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২-এর প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। এতে দেশে এখন মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৬১৬ জন উল্লেখ করা হয়েছে।
বুধবার (২৭ জুলাই) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। বিবিএস বলছে, স্বাধীনতার পর ১৯৭৪ সালে প্রথম শুমারিতে জনসংখ্যা ছিল ৭ কোটি ১৫ লাখ। এরপর ১৯৮১ সালের জনশুমারিতে বেড়ে হয় ৮ কোটি ৭১ লাখ ১৯ হাজার ৯৬৫ জন। ১৯৯১ সালে ১০ কোটি ৬৩ লাখ, ২০০১ সালে ১২ কোটি ২৪ লাখ ও সর্বশেষ ২০১১ সালের জনশুমারিতে জনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৪ কোটি ৪০ লাখ।
২০২২ সালে এসে এটি হলো ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৬১৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৮ কোটি ১৭ লাখ ১২ হাজার ৮২৪, নারী ৮ কোটি ৩৩ লাখ ৪৭ হাজার ২০৬ এবং তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী ১২ হাজার ৬২৯ জন।
নারী বেশি
বিবিএসের প্রতিবেদন বলছে, দেশে বার্ষিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ২২ শতাংশ, যা এক দশক আগে ছিল ১ দশমিক ৪৬ শতাংশ। দেশে প্রতি বর্গকিলোমিটারে জনসংখ্যা ঘনত্বের হার ১ হাজার ১১৯ জন, এক দশক আগে যা ছিল ৯৭৬ জন। আর এখন ৯৮ জন পুরুষের বিপরীতে নারীর সংখ্যা ১০০ জন।
৯১ শতাংশ মুসলিম
প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে ১০ থেকে তার বেশি বয়সী জনগোষ্ঠীর মধ্যে ২৮ শতাংশ অবিবাহিত ও বিবাহিত ৬৫ শতাংশ। মোট জনংখ্যার ৯১ দশমিক ০৪ শতাংশ মুসলিম, হিন্দু ৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী মোট জনগোষ্ঠীর ৯০ দশমিক ৩৯ শতাংশ মুসলমান ছিল। আর হিন্দু ছিল ৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
৫৬ শতাংশ মানুষ মোবাইল ব্যবহার করে
দেশে মোবাইল ব্যবহারকারীর হার ৫৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ এবং ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ৩০ দশমিক ৬৮ শতাংশ। দেশে মোট খানার সংখ্যা ৪ কোটি ১০ লাখ ১০ হাজার ৫১টি। গড়ে খানার আকার ৪ জন, এক দশক আগে যা ছিল সাড়ে ৪ জন।
দেশের মোট জনসংখ্যার ১১ কোটি ৩০ লাখ ৬৩ হাজার ৫৮৭ জন গ্রামে বাস করেন। বিপরীতে শহরে বাস করেন ৫ কোটি ২০ লাখ ৯ হাজার ৭২ জন।
সাক্ষরতার হার ৭৪.৬৬
দেশে মোট সাক্ষরতার হার ৭৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ। পুরুষ জনগোষ্ঠীর সাক্ষরতার হার ৭৬ দশমিক ৫৬, নারী জনগোষ্ঠীর এ হার ৭২ দশমিক ৮২। এছাড়া প্রতিবন্ধিতার হার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। সাক্ষরতার হারে বর্তমানে নারীদের চেয়ে এগিয়ে আছে পুরুষ। ২০১১ সালের আদমশুমারির তুলনায় সাক্ষরতার হারে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে বাংলাদেশ। ২০১১ সালের আদমশুমারিতে দেশে সাক্ষরতার হার ছিল ৫১.৭৭।
২০১১ সালের আদমশুমারিতে তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর সাক্ষরতার কোনো হিসাব না থাকলেও এবারের জনশুমারিতে তাদের সাক্ষরতার হার ৫৩ দশমিক ৬৫।
সারা দেশে গত ১৫ জুন একযোগে শুরু হয় জনশুমারি ও গৃহগণনা কার্যক্রম। গত ২১ জুন জনশুমারি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জেলায় বন্যা শুরু হওয়ায় এসব জেলায় শুমারি কার্যক্রম ২৮ জুন পর্যন্ত চলে।