জোড়া লাগানো থেকে মুক্তি পেল জমজ দুই বোন
সুস্থ্য হয়ে দুই বোন ১৫ জুন বাড়িতে ফিরে এসেছে।
নীলফামারীর জোড়া লাগানো জমজ দুই বোনের এবারের ঈদ উৎসবটা ছিল অন্যরকম অনুভুতির। জন্মের পর দুজনের দেহ জোড়া লাগানো অবস্থায় ছিল। তবে সফলতার সাথে অস্ত্রপ্রচার করে তাদের আলাদা করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা। এ যেন নতুন জীবন ফিরে পাবার আনন্দ।
গত ২১ মার্চ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দীর্ঘ ১২ ঘন্টা অস্ত্র-পাচারের মাধ্যমে আলাদা করা হয় তাদের। জোড়া লাগানো শিশু লাবিবা ও লামিসাকে নীলফামারীর জলঢাকা থেকে তিন মাস আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়। শিশু দুটিকে আলাদা করতে হাসপাতালে শিশু পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. আশরাফুল হক কাজলের তত্ত্বাবধানে নিউরোসার্জারি, প্লাস্টিক সার্জারি,রেডিওলজি, অর্থোপেডিকস সার্জারি, অ্যানেসথেশিওলজিসহ বিভিন্ন বিভাগের ৩৮ জন চিকিৎসক অস্ত্রোপচারে অংশগ্রহণ করেন। সেই অস্ত্রোপচারের সফলতা শেষে সুস্থ্য হয়ে দুই বোন ১৫ জুন বাড়িতে ফিরে এসেছে।
তাদের আনন্দ খুশীর যেন শেষ নেই। চিকিৎসকদের আদর ভালবাসার কথা শিশু দুজন ভুলতে পারছেনা। বার বার স্মরণ করছিল চিকিৎসকদের।
শিশু দুটির খোঁজ খবর নিতে ঈদের দিন তাদের বাসায় ছুটে যান সিভিল সার্জন ডাক্তার মোঃ জাহাঙ্গীর কবির। সিভিল সার্জনের উপস্থিতিতে আনন্দিত লাবিবা ও লামিশাসহ পরিবারের লোকজন।দীর্ঘদিনের কষ্ট লাঘব হওয়ায় আনন্দিত লাল মিয়ার পরিবারসহ এলাকাবাসী।
এসময় সিভিল সার্জনের মেয়ে ইফফাত জাহাঙ্গীর শায়বা দুইবোন লাবিবা ও লামিশার হাতে ঈদ উপহার এবং তাদের বাবা লাল মিয়াকে নগদ অর্থ তুলে দেন।দীর্ঘদিন কষ্টে ফলে লাবিবা ও লামিশার পরিবারে সংসারে হাঁসি ফুটেছে। ঈদে নতুন জামা কাপড় পেয়ে জমজ দুই বোন সেজেছিল অন্যরকম।
২০১৯ সালের ১৫ এপ্রিল জলঢাকা উপজেলার কৈমারী ইউনিয়নের যদুনাথ পাড়ায় লাল মিয়া ও মনুফা দম্পতির ঘরে জন্ম নেয় জোড়া শিশু দুটি। শিশুদের বাবা লাল মিয়া একজন রাজমিস্ত্রির সহযোগী। জোড়া লাগানো শিশু দুটির নাম রাখা হয় লাবিবা ও লামিশা। তাদের বয়স এখন তিন বছর তিন মাস।