কলেরার মুখে খাওয়ার টিকা কর্মসূচি শুরু
গর্ভবতী নারী ছাড়া এক বছরের বেশিসহ সব বয়সের মানুষ পরপর দুই মাস দুই ডোজের এ টিকা পাবে
রাজধানীতে সপ্তাহব্যাপী ডায়রিয়া-কলেরার মুখে খাওয়ার টিকা কর্মসূচি শুরু হচ্ছে আজ। এই কর্মসূচি চলবে ২ জুলাই পর্যন্ত। এ সময় রাজধানীর ডায়রিয়ার পাঁচ হটস্পট যাত্রাবাড়ী, সবুজবাগ, মিরপুর, মোহাম্মদপুর ও দক্ষিণখানের ২৩ লাখ মানুষকে এই টিকা খাওয়ানো হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম জানান, গর্ভবতী নারী ছাড়া এক বছরের বেশিসহ সব বয়সের মানুষ পরপর দুই মাস দুই ডোজের এ টিকা পাবে। এসব এলাকার বাসিন্দাদের টিকা পেতে কোনো নিবন্ধনের প্রয়োজন হবে না।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ সপ্তাহে প্রাথমিকভাবে ঢাকার পাঁচটি স্থানের প্রায় ২৩ লাখ মানুষকে এই টিকা খাওয়ানো হবে। এই পাঁচ এলাকার ৭০০ নিয়মিত ও অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টিকা পাবে মানুষ। এক মাস পর দ্বিতীয় ডোজ টিকা খাওয়ানো হবে। দ্বিতীয় ডোজের তারিখ পরে জানিয়ে দেওয়া হবে।
দেশে এ বছর ব্যাপকহারে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় সরকার মুখে কলেরা-ডায়রিয়ার টিকা খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। টিকার বৈশ্বিক জোট ‘গ্যাভি’ থেকে এই টিকা পাচ্ছে বাংলাদেশ। টিকা নিতে মানুষকে আহ্বান জানাতে মাইকিং চলছে। স্থানীয়ভাবে স্বাস্থ্যকর্মীরা মানুষের কাছে বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন।
মার্চের মাঝামাঝি সময় থেকে ঢাকায় ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব বেড়ে যায়। এ সময় রেকর্ডসংখ্যক রোগী ভর্তি হয় ঢাকার আইসিডিডিআর-বির কলেরা হাসপাতালে। গত এপ্রিলের প্রথম সপ্তাপ পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১ হাজার ৩০০ রোগী ভর্তি হয়েছে।
এর মধ্যে হাসপাতালের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেকর্ডসংখ্যক রোগী ভর্তি হয় ৪ এপ্রিল ১ হাজার ৩৮৩, যা ঘণ্টায় ছিল ৫৮ জন। গত ৯ এপ্রিল থেকে রোগী কিছুটা কমতে শুরু করে এবং দৈনিক ১ হাজার ২০০-এর ঘরে আসে। পরের দুদিন আরও কমে ১ হাজার ১০০-এর ঘরে পৌঁছে। পরে ধীরে ধীরে ডায়রিয়ার প্রকোপ কমে আসে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মুখে দুই ডোজের কলেরা-ডায়রিয়ার টিকা খেলে ৮৫ শতাংশ ক্ষেত্রে এটি কলেরার বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধ গড়ে তোলে। টিকা খাওয়ার প্রথম ছয় মাসে এটি থাকে সবচেয়ে বেশি কার্যকর। এরপর এর কার্যকারিতা কিছুটা হ্রাস পায়। সাধারণত দু-তিন বছর পর্যন্ত এই টিকা কলেরার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ দেয়াল গড়ে তুলতে সক্ষম।