বিশ্ব রক্তদাতা দিবস আজ, সংকট বিশুদ্ধ রক্তের
গত ১৪ বছরে মাত্র ৮৫টি উপজেলায় ব্লাড ব্যাংক স্থাপন করতে পেরেছে। ৮৩ শতাংশ উপজেলায় ব্লাড ব্যাংক হয়নি
আজ ১৪ জুন বিশ্ব রক্তদাতা দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হবে।
২০০৪ সাল থেকে নিরাপদ রক্ত নিশ্চিত করতে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। এবার দিবসের প্রতিপাদ্য— ‘রক্তদান সংঘবদ্ধতারই প্রকাশ, এ কাজে যুক্ত হোন, জীবন বাঁচান’।
বাংলাদেশ সরকার ২০০৮ সালে বিশুদ্ধ রক্ত পরিসঞ্চালন আইন করে পেশাদার রক্ত কেনাবেচা বন্ধের উদ্যোগ নেয়। কর্মসূচির অধীনে ৪৯৫ উপজেলার মধ্যে ২০০ উপজেলায় সরকারিভাবে ব্লাড ব্যাংক স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু গত ১৪ বছরে মাত্র ৮৫টি উপজেলায় ব্লাড ব্যাংক স্থাপন করতে পেরেছে। সে হিসাবে লক্ষ্যমাত্রার ৫৮ শতাংশ ও মোট উপজেলার ৮৩ শতাংশ উপজেলায় কোনো ব্লাড ব্যাংক করা যায়নি।
এ অবস্থায় এসব উপজেলায় বিশুদ্ধ রক্তের জন্য এখনো মানুষকে নির্ভর করতে হচ্ছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও আত্মীয়স্বজনের ওপর। এভাবে রক্ত সংগ্রহ করতে গিয়ে বিশুদ্ধ রক্তের সংকট দেখা দিচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা ছাড়াই রক্ত পরিসঞ্চালন করতে গিয়ে শরীরে বাসা বাঁধছে নানা রোগ।
রক্ত পরিসঞ্চালন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রক্তদানে রক্তদাতার হেপাটাইটিস-বি, সি, এইচআইভি, ম্যালেরিয়া ও সিফিলিস পরীক্ষা করা বাধ্যতামূলক। এ পরীক্ষাগুলো অবশ্যই করতে হবে।
এবার দিবস পালনে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি এগিয়ে এসেছে বাংলাদেশে প্রায় সাড়ে চার লাখ রক্তদাতার সর্বোচ্চ ডোনার পুল নিয়ে মানবিক সংগঠন কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন।
কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে রক্তদাতাদের পদযাত্রা, ব্লাড ক্যাম্প ও রক্তদাতা সম্মাননা অনুষ্ঠান। আজ দুপুর সাড়ে ১২টায় জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
২৪ ঘণ্টা সেবাদানকারী মানবিক সংগঠন কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন ১৯৯৬ সাল থেকে রক্তদান কার্যক্রম শুরু করে। ২০০০ সালে নিজস্ব আধুনিক ল্যাব প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) নির্ধারিত সকল নিয়ম মেনে নিরাপদ রক্তের গুরুত্বপূর্ণ উৎসে পরিণত হয়।
এ পর্যন্ত কোয়ান্টাম ১৪ লাখ ইউনিট রক্ত ও রক্ত উপাদান সরবরাহ করেছে। প্রসেসিং খরচ দেয়ারও সামর্থ্য নেই- এমন অসংখ্য মানুষকে সম্পূর্ণ ফ্রি রক্ত সরবরাহ করেছে সংগঠনটি। ২০২০ সালে করোনাকালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ল্যাব সরবরাহ করেছে প্রায় ৮৫ হাজার ইউনিট রক্ত ও রক্ত উপাদান।