শেবাচিমের চিকিৎসককে অব্যাহতি
দীর্ঘদিন গজ থাকায় পেটের ভেতরে পচন ধরে নাড়ি ফুটো হয়ে গেছে শারমিন আক্তার শিলার
বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের এক অনারারি চিকিৎসককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছে দুই নার্সকে। তাদের সাত কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
প্রসূতির অস্ত্রোপচারের পর পেটে গজ রেখে সেলাই দেওয়ার ঘটনায় রবিবার (১২ জুন) এ ব্যবস্থা নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
অব্যাহতি দেওয়া চিকিৎসক মো. তারেক এমবিবিএস পাস করে হাসপাতালের গাইনি বিভাগে ছয় মাসের প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন। নোটিস পাওয়া নার্সরা হলেন, স্টাফ নার্স মিঠু রানী দাস ও সুমী সরকার।
হাসপাতালের পরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি শনিবার (১১ জুন) প্রতিবেদন দিয়েছে। এতে চিকিৎসকের দায়িত্বহীনতা ও অস্ত্রোপচারের সময় উপস্থিত দুই নার্সের কর্তব্যে অবহেলার প্রমাণ মিলেছে। প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে (ডিজি) অবহিত করা হয়েছে।
ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার শারমিন আক্তার শিলা গত ১৬ এপ্রিল সিজারের মাধ্যমে কন্যাসন্তান জন্ম দেন। শারমিন বাড়ি ফেরার কিছুদিন পর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। পরে ব্যথা শুরু হলে ফের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সার্জারি বিভাগের প্রধান নাজিমুল হক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে জানান, শিলার পেটের ভেতরে গজ রয়ে গেছে। গত ২২ মে অস্ত্রোপচার করে তা অপসারণ করা হয়।
এ ঘটনায় শিলাকে ১৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে গত ৭ জুন হাইকোর্টে রিট করেন অ্যাডভোকেট জীবননেছা মুক্তা। পরে কেন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দেয় আদালত।
রিটে শিলার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা এবং তাৎক্ষণিক ১০ লাখ টাকা দেওয়ার আবেদন করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত উন্নত চিকিৎসার জন্য সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দেয়। এ ছাড়া তদন্ত করে ১৪ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।