দেশে তিনজনের একজন ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত
শুধুমাত্র খাদ্যাভাস ও জীবনযাত্রার ধরন পরিবর্তন এবং ওজন কমানোর মাধ্যমে ফ্যাটি লিভার ও ন্যাশ প্রতিরোধ করা যায়
বাংলাদেশে প্রতি তিনজনে একজন ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত। প্রায় সাড়ে ৪ কোটি মানুষ ফ্যাটি লিভারে ভুগছেন। তাদের মধ্যে প্রায় ১ কোটি মানুষ সিরোসিস বা লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকিতে আছেন।
বুধবার (৮ জুন) বিশ্ব ন্যাশ দিবস উপলক্ষে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়নে এক বৈজ্ঞানিক সেমিনার ও সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইনে এসব তথ্য জানান স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
তারা বলছেন, দেশে ১ কোটি মানুষ ফ্যাটি লিভারজনিত প্রতিরোধযোগ্য লিভার সিরোসিস ও লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকিতে আছেন। অথচ শুধুমাত্র খাদ্যাভাস ও জীবনযাত্রার ধরন পরিবর্তন এবং ওজন কমানোর মাধ্যমে ফ্যাটি লিভার ও ন্যাশ প্রতিরোধ করা যায়।
হেপাটোলজি সোসাইটি এই সেমিনারের আয়োজন করে। সংগঠনের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক মবিন খানের সভাপতিত্বে সেমিনারে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা মেজর জেনারেল ডা. এ এস এম মতিউর রহমান, আইসিডিডিআর-বির নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আমীর খসরু প্রমুখ বক্তব্য দেন।
বক্তারা জানান, লিভার রোগজনিত মৃত্যুকে বিশ্বব্যাপী মারাত্মক জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, বাংলাদেশে মোট মৃত্যুর ২ দশমিক ৮২ শতাংশ লিভারের রোগ, শেষ করে সিরোসিস ও লিভার ক্যান্সারের কারণে হয়ে থাকে। লিভার সিরোসিস ও ক্যান্সারের অন্যতম প্রধান কারণ লিভারে চর্বি জমাজনিত প্রদাহ। চিকিৎসা বিজ্ঞানে একে স্টিয়াটো-হেপাটাইটিস বলা হয়।
অতিরিক্ত চর্বি জমা হওয়ার কারণে যকৃতে যে প্রদাহ সৃষ্টি হয় তাকেই স্টিয়াটো-হেপাটাইসিস বলে। ফ্যাটি লিভারের বিপজ্জনক পরিণতি হলো ন্যাশ। নির্ণয়হীন ও নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থায় ফ্যাটি লিভার বিপজ্জনকভাবে ন্যাশের দিকে অগ্রসর হতে থাকে।
বক্তারা আরও বলেন, লিভারে প্রদাহ সৃষ্টি করা ছাড়াও যকৃতে চর্বি জমার আরও কিছু খারাপ দিক রয়েছে। এই রোগটি হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও শরীরে ইনসুলিন হরমোনের কার্যকারিতা কমে যাওয়ার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও রোগটির প্রাদুর্ভাব আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে।
উল্লেখ্য, আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৯ জুন) বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পঞ্চম আন্তর্জাতিক ন্যাশ দিবস পালন করা হবে। মূলত দিবসটি উপলক্ষে হেপাটোলজি সোসাইটি এই সেমিনারের আয়োজন করে।