অবৈধ ১৩২ হাসপাতাল ক্লিনিক সিলগালা
লাইসেন্স ও পরিবেশ ছাড়পত্র না থাকা, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ, অপ্রশিক্ষিত মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট রাখাসহ বিভিন্ন অনিয়মের কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো সিলগালা করে দেওয়া হয়
সারা দেশে অবৈধ বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে প্রশাসন। শনিবার (২৮ মে) বিভিন্ন বিভাগীয় শহর, জেলা ও উপজেলায় অভিযান চালিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এসব অভিযানে ১৩২টি অবৈধ প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
লাইসেন্স ও পরিবেশ ছাড়পত্র না থাকা, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ, অপ্রশিক্ষিত মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট রাখাসহ বিভিন্ন অনিয়মের কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো সিলগালা করে দেওয়া হয়। জরিমানাও করা হয়েছে অনেক প্রতিষ্ঠানকে।
২৫ মে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সভা থেকে অনিবন্ধিত ও নবায়নবিহীন বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান বন্ধে ৭২ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। রবিবার সেই সময়সীমা শেষ হচ্ছে। এ সময়ের মধ্যেও যেসব অবৈধ বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ হবে না, সেগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে অধিদপ্তর।
শনিবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. বেলাল হোসেন বলেন, অনিবন্ধিত ও নবায়নবিহীন বেসরকারি কিছু প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে বন্ধ করা হয়েছে। অভিযান অব্যাহত আছে। একটি সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। সেই সময় শেষ হলে আমরা বসব। নিবন্ধনের কতটা অগ্রগতি হয়েছে কিংবা অবৈধ কতগুলো ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ হয়েছে তা পর্যালোচনা করা হবে। বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক, সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বসে এরপর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সারা দেশে কতগুলো অবৈধ হাসপাতাল ও ক্লিনিক রয়েছে সে তথ্য-উপাত্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিবন্ধনের জন্য আবেদনের পর বলা যায় কতগুলো আবেদন এসেছে, কতগুলোর নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে, আর কতগুলো অপেক্ষমাণ আছে। যারা আবেদন করেননি তাদের তথ্য জানার উপায় নেই। অভিযান চালিয়ে সেগুলো খুঁজে বের করা হবে।
অবৈধ প্রতিষ্ঠানের তালিকা ছাড়া কোন প্রক্রিয়ায় অভিযান চালানো হচ্ছে- এমন প্রশ্নের উত্তরে পরিচালক বলেন, অবৈধ প্রতিষ্ঠানের নির্দিষ্ট তালিকা না থাকলেও বৈধগুলোর তালিকা সিভিল সার্জনদের কাছে রয়েছে। সে অনুযায়ী অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
বিভিন্ন অনিয়ম পাওয়ায় চট্টগ্রাম নগরীর দুটি হাসপাতাল ও দুটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াস চৌধুরীর নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়।
এছাড়া শেরপুর শহরের ২৬টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং ঝিনাইগাতী উপজেলার দুটি ক্লিনিক, ফরিদপুর জেলা সদরসহ পাঁচ উপজেলার ২০টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার, হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা সদরে পাঁচটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতাল, চুনারুঘাটে দুটি হাসপাতাল ও দুটি ক্লিনিক, নাটোরের বড়াইগ্রামে অনিবন্ধিত তিনটি ক্লিনিক, জামালপুরের বকশীগঞ্জে তিনটি প্রতিষ্ঠান, রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে একটি ক্লিনিক ও তিনটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার, টাঙ্গাইলে সাতটি হাসপাতাল ও ক্লিনিক সিলগালা করা হয়।
ময়মনসিংহে একটি নার্সিং হোম ও পাঁচটি ক্লিনিকের অপারেশন থিয়েটার, নেত্রকোনা জেলা শহরের দুটি বেসরকারি হাসপাতাল, বগুড়া শহরের একটি ক্লিনিক, যশোরে ছয়টি অবৈধ ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ঝিনাইদহের শৈলকুপায় তিনটি ক্লিনিক, মাগুরায় সাতটি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার, বরিশালের গৌরনদীতে চারটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ঢাকার নবাবগঞ্জে দুটি ক্লিনিক ও দুটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং কুষ্টিয়ার খোকসায় একটি ক্লিনিক, ১০টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং ময়মনসিংহের ভালুকায় ১১টি ডায়াগনস্টিক সিলগালা ও সাময়িক বন্ধ, ঢাকার ধামরাইয়ে দুটি ডেন্টাল কেয়ার ও দুটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।