বিবাহিত স্বাস্থ্যকর্মীরা বেশি ট্রমায় ভুগেছেন

ডক্টর টিভি রিপোর্ট
2022-05-27 18:48:00
বিবাহিত স্বাস্থ্যকর্মীরা বেশি ট্রমায় ভুগেছেন

পিটিএসডি আক্রান্ত স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা থাকতে পারে

দেশে করোনাকালে চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে বিবাহিতরা বেশি পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডারে (পিটিএসডি) আক্রান্ত হয়েছেন।

জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের (নিপসম) এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। এতে বলা হয়েছে, যাদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে তাদের মধ্যে ৬২ দশমিক ৯ শতাংশেরই পিটিএসডি ছিল। তাদের মধ্যে ৮৩ দশমিক ৬ শতাংশ ছিলেন বিবাহিত। এই ৮৩ শতাংশের মধ্যে নারীদের পিটিএসডি ঝুঁকি ছিল বেশি।

বৃহস্পতিবার (২৭ মে) দুপুরে নিপসম মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশে কভিড-১৯ মহামারীকালে স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর এর মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব, কুশলাবস্থা, সংশ্লিষ্ট ফ্যাক্টরসমূহ এবং মানিয়ে নেওয়ার কৌশল’ শীর্ষক এ গবেষণার ফল প্রকাশ করে নিপসম।

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের অর্থায়নে পরিচালিত এ গবেষণা দলের প্রধান ছিলেন নিপসমের পরিচালক অধ্যাপক ডা. বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজ। তিনি গবেষণার ফল তুলে ধরেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ১ হাজার ৩৯৪ স্বাস্থ্যকর্মীর ওপর পরিচালিত গবেষণাটি ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে শুরু হয়ে শেষ হয় জুনে। ৫৯৬ চিকিৎসক, ৭১৩ নার্স এবং ৮৫ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্টের ওপর গবেষণাটি চালানো হয়।

এতে আরও বলা হয়, স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারদের কাজের চাপ অনেক বেশি ছিল, তারা ব্যক্তিগত নিরাপত্তাসামগ্রীর (পিপিই) অপ্রতুলতায় ছিলেন এবং করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে ছিলেন।

দেশে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মীর মধ্যে ২৩ দশমিক ৫০ শতাংশ (পিটিএসডি) আক্রান্ত হয়। স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারদের মধ্যে চিকিৎসকদের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ হয়েছিল। এরপরেই ছিলেন টেকনোলজিস্ট ও নার্স। পিটিএসডিতে আক্রান্তদের মধ্যে চিকিৎসক ২৪ দশমিক ৩০ শতাংশ, টেকনোলজিস্ট ২৩ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং নার্স ২২ দশমিক ৮০ শতাংশ।

অধ্যাপক ডা. বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজ বলেন, ‘পিটিএসডি আক্রান্ত স্বাস্থ্যসেবা পেশাদাররা সবার থেকে দূরে সরে থাকতে পারেন বা চাকরি ছেড়ে দিতে পারেন। তাদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা থাকতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারদের কাজের চাপ অনেক বেশি ছিল। তারা ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সামগ্রীর (পিপিই) অপ্রতুলতায় ছিলেন এবং করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে ছিলেন।’

গবেষণায় স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারদের মানসিক সুস্থতায় কাউন্সেলিং প্রোগ্রামের ব্যবস্থা জোরদার ও প্রবর্তনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে কোর্সের সময় ভিন্নতা দেখা যায়। একই কোর্স এমপিএইচ কোথাও ৬ মাস, কোথাও ৯ মাস, কোথাও ১২ মাস আবার কোথাও ১৮ মাস। ফলে সময় নিয়ে জটিলা সৃষ্টি হয়ে থাকে। এ জটিলতা দূর করতে হলে সকল স্বাস্থ্যসেবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এই এমপিএইচ কোর্সকে ২ বছর মেয়াদি করতে হবে।’

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. সাইফুল হাসান বাদল, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন প্রমুখ।


আরও দেখুন: