ফের করোনার ঝুঁকিতে দেশ?
ঘরমুখী মানুষের ভীড়
দেশের করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক চললেও ঈদ উপলক্ষে বেড়েছে জনসমাগম। নাড়ির টানে বাড়ি ফেরায় ব্যস্ত রাজধানীর মানুষ। ট্রেন স্টেশন, বাস স্ট্যান্ড, লঞ্চ টার্মিনালসহ সকল স্থানে ঘরমুখী মানুষের ভীড়। সেই সাথে ঈদের কেনাকাটায়ও মার্কেট ও বাজারগুলোতে উপচে পড়া ভীড়।
ঠিক এ অবস্থায় করোনা বিধি-নিষেধ বা ব্যক্তি সতর্কতা অনেকটা তোয়াক্কা না করেই চলছে সকল কার্যক্রম। মাস্ক ছাড়াই চলাফেরা করছে অধিকাংশ মানুষ। নেই হেন্ড সেনিটাইজারের ব্যবহার। ফলে করোনা সংক্রমণ বাড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এছাড়া ভারতসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে গত বেশ কিছুদিন যাবৎ বেড়েছে করোনা সংক্রমণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০ এপ্রিল দেওয়া সর্বশেষ বৈশ্বিক হালনাগাদ তথ্যে বলা হয়েছিল, ২৪টি দেশে করোনা সংক্রমণ আগের সপ্তাহের তুলনায় ২০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। ওই সময়ে চীনে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে ২৮ শতাংশ। ফলে করোনার চতুর্থ ঢেউয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গত বুধবার ঢাকার মার্কিন দূতাবাস আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) কান্ট্রি ডিরেক্টর নিলি কায়ডোস–ড্যানিয়েলস বলেন, করোনা মহামারির চতুর্থ ঢেউয়ের ঝুঁকি আছে। তবে আগের ঢেউগুলোর তুলনায় তার তীব্রতা কম হতে পারে।
চতুর্থ ঢেউয়ের সম্ভাব্য কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে জনস্বাস্থ্যবিদ ও সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা মুশতাক হোসেন বলেন, মহামারিতে তিন থেকে ছয় মাসের ব্যবধানে সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রবণতা দেখা গেছে। ওই সময় বিবেচনায় নিলে আরেকটি নতুন ঢেউয়ের কাছাকাছি সময়ে বাংলাদেশ। তিনি আরও বলেন, পবিত্র ঈদুল ফিতরের পরে বা মে মাসের শেষের দিকে সংক্রমণ বাড়তে পারে।
ভারতে সংক্রমণ বৃদ্ধি বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও হুমকি স্বরুপ। এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সতর্ক আছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সংক্রমণ বেশি এমন দেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের আন্তর্জাতিক বন্দরে স্বাস্থ্যপরীক্ষা নিশ্চিত করা, ঈদের বাজারে ও ঘরমুখী মানুষের মাস্ক পরা নিশ্চিত করা, ভাইরাসের জেনোম সিকোয়েন্সিং জোরদার করার সুপারিশ করেছে কমিটি। পাশাপাশি রোগীদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত রাখারও পরামর্শ দিয়েছে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।
তবে সংক্রমণ বাড়লেও দেশের বেশিরভাগ মানুষ টিকা গ্রহণ করায় তা তীব্র আকার ধারণ করবে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।