ডা. বুলবুল হত্যায় গ্রেপ্তার ৪, রহস্যে কালো মাইক্রো

ডক্টর টিভি রিপোর্ট
2022-03-30 14:57:19
ডা. বুলবুল হত্যায় গ্রেপ্তার ৪, রহস্যে কালো মাইক্রো

ডা. বুলবুল দরিদ্র ও নিম্নবিত্তদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দিতেন

দন্তচিকিৎসক আহমেদ মাহী বুলবুল হত্যকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে। এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু জব্দ করা হয়।

বুধবার (৩০ মার্চ) ঢাকা মহানগর পুলিশের এক বার্তায় বলা হয়েছে, গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে কিছু আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। তবে কখন কোথা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হলো বা তাদের পরিচয় কী, সেসব বিষয়ে কোনো তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি।

মহানগর পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার আ স ম মাহাতাব উদ্দিন জানান, পরে সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করবেন তারা।

এর আগে মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) হত্যাকারীদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করে বাংলাদেশ ডেন্টাল সোসাইটি। সংগঠনের নেতারা বেধে দেওয়া সময়ের মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তার করা না হলে সারা দেশে কঠোর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছিলেন।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধনে ডেন্টাল সোসাইটির নেতারা বলেন, নিরাপদ ঢাকা শহর দাবি নয়, নগরবাসীর অধিকার। এ শহরে একজন মানুষ রাস্তায় নেমে খুন হয়ে যাবেন, এটা হতে পারে না। বুলবুলের এ নৃশংস হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বুলবুল শুধু একজন মেধাবী ছাত্রই ছিলেন না, তিনি একজন ভালো চিকিৎসকও ছিলেন। গরিবের চিকিৎসক হিসেবে তার খ্যাতি ছিল। সরকারকে বুলবুলের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তারা।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন ঢাকা ডেন্টাল কলেজের অধ্যক্ষ ও বাংলাদেশ ডেন্টাল সোসাইটির মহাসচিব অধ্যাপক হুমায়ুন কবীর বুলবুল, বাংলাদেশ ডেন্টাল সোসাইটির লাইব্রেরি অ্যান্ড প্রকাশনা সম্পাদক মোর্শেদ আলম তালুকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন রতন প্রমুখ।

২৭ মার্চ ভোরে ঠিকাদারির কাজে নোয়াখালী যাওয়ার উদ্দেশে রাজধানীর পশ্চিম শেওড়াপাড়ার বাসা থেকে বের হন ডা. বুলবুল। প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে কাজীপাড়ায় নির্মাণাধীন মেট্রোরেলের ২৭৮ নম্বর পিলারের কাছে ছুরি মেরে তাকে হত্যা করা হয়। ওইদিনই অজ্ঞাত তিনজনকে অভিযুক্ত করে মিরপুর মডেল থানায় মামলা করেন বুলবুলের স্ত্রী শাম্মী আক্তার।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, তিনজন তাকে ছুরিকাঘাত করে দৌড়ে পালিয়ে যায়। তার কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন খোয়া গেছে। তবে তার সঙ্গে থাকা ১২ হাজার টাকা, অন্য একটি মোবাইল এবং আঙুলে পরা সোনার আংটি উদ্ধার করেছে পুলিশ।

মগবাজারে রংপুর ডেন্টাল নামে একটি চেম্বারে চিকিৎসাসেবা দিতেন বুলবুল। সেখানে তিনি দরিদ্র ও নিম্নবিত্তদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দিতেন। শুধু স্বাবলম্বীদের কাছ থেকে ফি নিতেন। এর বাইরে তিনি কয়েক বছর থেকে ঠিকাদারির কাজ করতেন।

এদিকে ডা. বুলবুল হত্যাকাণ্ডের আগ মুহূর্তে পশ্চিম শেওড়াপাড়ায় তার বাসার কাছে গেট খোলা একটি কালো রঙের মাইক্রোবাস নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, এ বিষয়টি তাদের জানা নেই।

বুলবুলের স্ত্রী শাম্মী আক্তার বলেছেন, ‘এলাকার অনেকেই আমাকে বলেছেন ঘটনার দিন খুব ভোরে আমাদের বাসার কাছেই রাস্তায় কালো রঙের একটি মাইক্রোবাস দাঁড়ানো ছিল। মাইক্রোবাসটির গেইট খোলা ছিল। এ ছাড়া যেখানে তার লাশ পাওয়া গেছে সেখানে তার যাওয়ার কথা ছিল না। ফার্মগেটের দিকে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু উল্টো দিকে কাজীপাড়ায় যাওয়ার বিষয়টিও সন্দেহজনক।’

মিরপুর মডেল থানার ওসি মুস্তাফিজুর রহমান জানান, ছিনতাইকারীর তালিকা ধরে কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। বাসার কাছে কালো মাইক্রোবাসের অবস্থান সম্পর্কে অবহিত নন তিনি।

ঢাকায় ছুরি মেরে চিকিৎসককে হত্যা
ডা. বুলবুলের মৃত্যু ঘিরে বাড়ছে ‘রহস্য’
অসাধারণ হৃদয়ের মানুষ ছিলেন ডা. বুলবুল


আরও দেখুন: