অতিরিক্ত লবণ খাওয়া বন্ধে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি ৫০ শতাংশ কমে
বাইরের খাবার থেকেও লবণ শরীরে ঢুকছে। যেমন এক প্যাকেট চিপসে ১০ গ্রাম লবণ থাকে
উচ্চ রক্তচাপের অন্যতম কারণ হিসেবে অতিরিক্ত লবণ খাওয়াকে দায়ী করেছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। তারা বলছেন, দিনে ৫ গ্রাম লবণ সহনীয় হলেও মানুষ কয়েকগুণ বেশি খাচ্ছে। বাইরের খাবার থেকেও শরীরে মাত্রাতিরিক্তি লবণ ঢুকে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। এই অতিরিক্তি লবণ খাওয়া বন্ধ করা গেলে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি ৫০ শতাংশ কমে যাবে।
সোমবার (২৮ মার্চ) রাজধানীর বাংলামোটরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) মিলনায়তনে ‘উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের ঝুঁকি’ বিষয়ক এক সেমিনারে এসব কথা বলেন বিশেষজ্ঞরা। তারা রোগটি থেকে সুস্থতার জন্য খাদ্যাভাস ও জীবনযাত্রার মানে পরিবর্তনের পরামর্শ দেন।
গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর এবং প্রগতির জন্য জ্ঞান (প্রজ্ঞা) আয়োজিত সেমিনারে বক্তারা বলেন, উচ্চ রক্তচাপ দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্যগত সমস্যা। ৫০ শতাংশের বেশি মানুষ তার এ সমস্যা জানেনই না। উচ্চ রক্তচাপের কারণে হৃদরোগ, স্ট্রোক ও কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়। বিশ্বে প্রতিবছর এক কোটির বেশি মানুষ উচ্চ রক্তচাপের কারণে মারা যায়, যা সব সংক্রামক রোগে মৃত্যুর চেয়ে বেশি। বাংলাদেশে প্রতি পাঁচজনে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগলেও এ বিষয়ে গণসচেতনতা এবং চিকিৎসা সেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে।
সেমিনারে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটল অ্যান্ড রিসার্স ইনস্টিটিউটের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ প্রোগ্রামের প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. মাহফুজুর রহমান ভূইয়া বলেন, ‘অতিরিক্তি লবণ খাওয়া বন্ধ করতে পারলে ৫০ শতাংশের উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমে যেত। ঘরে খাচ্ছেন। বাইরের খাবার থেকেও লবণ শরীরে ঢুকছে। যেমন এক প্যাকেট চিপসে ১০ গ্রাম লবণ থাকে। এভাবে সিঙ্গারা, ছমুচা কিংবা হোটেল-রেস্তোঁরার খাবার থেকে কী পরিমাণ লবণ শরীরে যাচ্ছে, তা মানুষ জানেই না।’
গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের কান্টি ডিরেক্টর মো. রুহুল কুদ্দুস বলেন, ‘উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমাতে প্রথমে স্ক্রিনিং করতে হবে। এরপর তাদের চিকিৎসা দিতে হবে। যারা আক্রান্ত হয়নি, তাদের জীবনাচারে পরিবর্তন আনতে হবে।’
সেমিনারে অন্যদের মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সৈয়দ মুজিবুল হক, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটল অ্যান্ড রিসার্স ইনস্টিটিউটের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ প্রোগ্রামের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. শামীম জোয়াদ্দার, প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের প্রমুখ বক্তব্য দেন।