মেডিকেল কলেজ না বাড়িয়ে মানসম্মত চিকিৎসক তৈরি জরুরি
শুক্রবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বাংলাদেশ ডক্টর’স ফোরাম (বিডিএফ) আয়োজিত প্রথম সামিটে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখছেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হক
দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য মেডিকেল কলেজের সংখ্যা না বাড়িয়ে মানসম্মত চিকিৎসক তৈরি করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আ.ফ.ম রুহুল হক।
তিনি বলেন, দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে হলে মেডিকেল কলেজের সংখ্যা না বাড়িয়ে মানসম্মত চিকিৎসক তৈরি করতে হবে। অন্যথায় চিকিৎসা ব্যবস্থা ব্যাহত হবে। একজন চিকিৎসকের বিপরীতে তিনজন নার্স ও পাঁচজন টেকনোলোজিস্ট এই অনুপাত বাস্তবায়ন করতে হবে।
সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে ডাক্তারদের সংখ্যা বেশি হলে তখন নার্সের কাজ ডাক্তারদের করতে হবে। যা স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য খুবই মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।
শুক্রবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বাংলাদেশ ডক্টর’স ফোরাম (বিডিএফ) আয়োজিত প্রথম সামিটে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হলে স্বাস্থ্যখাতকে ঢেলে সাজাতে হবে। আন্তঃক্যাডার বৈষম্য রোধ করতে হলে ডাক্তারদের জন্য আলাদা ক্যাডার ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এসব সমস্যা সমাধানে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং আমলাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আর কোনো সরকারি মেডিকেল কলেজ দরকার নাই। বেশি ডাক্তার হলে চিকিৎসকদের নার্সের চাকরি করতে হবে। ঝাড়ুদারের চাকরি করতে হবে। আমাদের সক্ষমতা আছে কিন্তু আমাদের জন্য বিনিয়োগ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, রোগী এবং চিকিৎসকদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হওয়ার পেছনে সরকারি হাসপাতালগুলোর অব্যবস্থাপনা অনেকটা দায়ী। যদি হাসপাতালগুলো সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় নিয়ে আসা যায় তাহলে চিকিৎসকেদের ভুল বোঝার হার কমে যাবে এবং সাধারণ মানুষ সঠিক চিকিৎসা সেবা পাবে।
আন্তঃক্যাডার বৈষম্য প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, চিকিৎসকরাই দেশের সবচেয়ে মেধাবী ছাত্র। তাদের জন্য প্রথম ক্যাডার সার্ভিসে কোনো বৈষম্য থাকা উচিত নয়। আমাদের আলোচনার মাধ্যমে এসব বিষয়ে সমাধানে আসতে হবে।
তিনি বলেন, হাসপাতালের সামনে একজন চিকিৎসক যখন রিকশার জন্য দাঁড়িয়ে থাকেন সেটি আমাদের জন্য খুবই খারাপ দেখায়। অন্য ক্যাডারের সমমর্যাদার প্রশাসক যদি গাড়ির সুবিধা পানা তাহলে চিকিৎসকদের ব্যাপারেও আমাদের ভেবে দেখার সময় হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘চিকিৎসকদের অবস্থান গডের মতো’ একারণে মানুষ খুবই নাজুক অবস্থায় চিকিৎসকের কাছে আসে। তাদের সঙ্গে সমান্য খারাপ আচরণও মেনে নিতে ওই সমসয় কষ্ট হয়। একারণে চিকিৎসকদেরও সর্বচ্চ বিনয়ী আচরণ করতে হয়। চিকিৎসা সেবাই একমাত্র পেশা যার মধ্যে দিয়ে স্রষ্টার সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারে। এক্ষেত্রে একজন রোগীর দোয়ায়ই একজন চিকিৎসকের জন্য যথেষ্ঠ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যামিরেটস অধ্যাপক ও প্রধান মন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, হাসপাতালের কিছু সেবায় সাধারণ মানুষ সন্তুষ্ট হতে পারে না। এর জন্য চিকিৎসকরা সব সময় দ্বায়ী নয়। এটি সাহাপাতাল ব্যাবস্থাপনার ব্যর্থতা। এর জন্য প্রশাসনিক সমন্বয় দরকার।
তিনি আরও বলেন, কর্মস্থলে চিকিৎসকদরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে চিকিৎসকরা মনবল হারিয়ে ফেলে। চিকিৎসকরা যথেষ্ট ভালো কাজ করছে, তবে সাধারন মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ কিছুটা ঘাটতি রয়ে গেছে। ফলে এটি কাটিয়ে উঠতে হবে উটতে হলে সামাজিক সচেতনতা ও রাজনৈতি দলগুলোর বিশেষ ভূমিকার রাখতে হবে।