করোনার চেয়ে অসংক্রামক রোগে মৃত্যু ২০ গুণ বেশি
করোনার চেয়ে অসংক্রামক রোগে মৃত্যু ২০ গুণ বেশি
করোনা মহামারীতে যত মৃত্যু হচ্ছে, তার চেয়ে ১০ থেকে ২০ গুণ বেশি মৃত্যু হয় অসংক্রামক রোগে। তার পরও অসংক্রামক রোগের প্রতি ততটা গুরুত্ব নেই, যতটা সংক্রামক রোগে দেওয়া হয়। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামী ২০৪০ সালে অসংক্রামক রোগে প্রাণহানির হার ৭০ থেকে বেড়ে ৮০ শতাংশে উঠে যেতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের প্রথম পর্বে যোগ দিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা এসব কথা বলেন। রাজধানীর প্যান প্যাসেফিক সোনারগাঁও হোটেলে তিন দিনের এই অনুষ্ঠান চলছে। আগামীকাল শুক্রবার শেষ হবে এই সম্মেলন। বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামসহ ৩০টি দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে।
সম্মেলনের প্রথম পর্বে স্বাস্থ্য অর্থ ইউনিটের মহাপরিচালক মোহাম্মদ শাহাদাত হোসাইন মাহমুদ বলেন, ‘কোভিডে সারা বিশ্ব এই মুহূর্তে ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। আমাদের দেশে কোভিডে যে মৃত্য, অসংক্রামক কোনো কোনো রোগে মৃত্যু তার চেয়ে ১০ থেকে ২০ গুণেরও বেশি। শুধু ধূমপানজনিত কারণেই প্রতিদিন গড়ে মৃত্যু হচ্ছে ৩৫০ জনের। ক্যানসার, টিভি, হার্ট ডিজিজ—সবগুলোই অসংক্রামক রোগ এবং সবগুলোর কারণে যে মৃত্যুর হার, প্রতিটির মৃত্যুর হার কোভিডে মৃত্যুর থেকে পাঁচ গুণ বেশি। কিন্তু কেন যেন আমরা শুধু সংক্রামক রোগের প্রতি বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকি।’
একটি গবেষণার বরাত দিয়ে শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘চিকিৎসার ক্ষেত্রে ৬৭ দশমিক ৫ ভাগ অর্থ জনগণ পকেট থেকে ব্যয় করে। এটি নিঃসন্দেহে অনেক বেশি। এখানেও একটি হিসেব বারবার বাদ পড়ে যায়। যাঁরা সরকারি কর্মচারী রয়েছেন, তাঁদের জন্য সরকার প্রতি মাসে হেলথ অ্যালাউন্স দিয়ে থাকে দেড় হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত। এটির পরিমাণও ছয় হাজার কোটি টাকা। এটি কিন্তু হিসাবে আনা হয় না। সবকিছু আনলে হয়তো সরকারের অংশগ্রহণ আরও বেশি হতো।’
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস বলেন, বাংলাদেশে এনসিডি একটি নতুন ও চলমান বোঝা। ডায়বেটিস, হৃদ্রোগ, ক্যানসারের রোগী উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। সরকার অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। দেশের আটটি বিভাগীয় শহরে ক্যানসার হাসপাতাল হচ্ছে। হৃদ্রোগের চিকিৎসায় গত দুই দশকে দেশে অনেক উন্নতি হয়েছে। উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত সব হাসপাতালে এনসিডি কর্নারে পাঁচটি ওষুধ বিনা মূল্যে দেওয়া হচ্ছে। ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত হতে কাজ করছে সরকার।