লাবিবা-লামিসার প্রথম ধাপের অস্ত্রোপচার সম্পন্ন
জোড়া লাগা দুই বোন লাবিবা-লামিসার প্রথম ধাপের অস্ত্রোপচার সম্পন্ন
বাংলাদেশে জন্ম থেকেই জোড়া লাগা দুই বোন লাবিবা-লামিসার প্রথম ধাপের অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা ধরে চলে এ অস্ত্রোপচার।
এই অস্ত্রোপচারে ৩২জন চিকিৎসক অংশ নিচ্ছেন বলে জানান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসক অধ্যাপক মোহাম্মদ আইয়ুব আলী।
এই অপারেশনের কসমেটিক বিভাগের নেতৃত্ব দেওয়া ডা. আইয়ুব আলী বলেন, আজকের মত অপারেশন সাকসেসফুল হয়েছে। এখন ছয় সপ্তাহ পর্যবেক্ষণের পর দ্বিতীয় ধাপের অপারেশন করা হবে। শিশুদের জ্ঞান ফিরেছে এবং তারা এখন হাসপাতালের আইসিউতে আছে।
২০১৯ সালের ১৫ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করে লাবিবা ও লামিসা। তাদের বয়স এখন আড়াই বছর। নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার যদুনাথপাড়া গ্রামের রাজমিস্ত্রির সহকারী লাল মিয়া ও মনুফা আক্তার দম্পতির সন্তান তারা।
অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আইয়ুব আলী বলেন এই অপারেশনটা বেশ জটিল। এখানে প্লাস্টিক সার্জারির একটা পার্ট রয়েছে। আমরা প্রথম ধাপে যেটা করেছি টিস্যু সম্প্রসারণ বল বা টিস্যু এক্সটেন্ডার বল বসানো হয়েছে। এটা একটা সিলিকন বল। যেটা বিদেশ থেকে আনা হয়েছে।
টিস্যু এক্সটেন্ডার বসানোর ফলে দু’টি শিশুর টিস্যু তৈরি হবে। এবং আলাদা করার ক্ষেত্রে প্রথম ধাপ এটা। আন্তর্জাতিক ভাবে এই ধরণের অপারেশনের ক্ষেত্রে এই প্রাকটিস করা হয়। আমরাও সেটা করছি।
তিনি বলেন, শিশু দুটির মেরুদণ্ড, পায়ুপথ এবং যোনি একসঙ্গে জোড়া লেগে আছে। এক্ষেত্রে অপারেশনের ক্ষেত্রে খুব সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
‘আমাদের লক্ষ্য অপারেশন সাকসেসফুল করা এবং শিশু দুইটাকে পূর্ণাঙ্গ নারীর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ স্থাপন করা। ভবিষ্যতে যাতে তারা নারী হিসেবে কোন জটিলতার মধ্যে না পড়ে।’
এই অপারেশনে তিনটি ধাপ প্রয়োজন হবে বলে চিকিৎসকরা জানালেও ডা. আইয়ুব আলী বলেন, দুই ধাপেই তারা শেষ করতে পারবেন বলে আশা করছেন।
বাচ্চা দুটি জন্মানোর পর থেকেই ঢামেক হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শের অধীন রয়েছে। ঢামেক হাসপাতালে ২০১৭ সালে জোড়া লাগানো শিশু তোফা-তহুরা ও ২০১৯ সালে রাবেয়া-রোকাইয়াকে আলাদা করা হয়।
তবে চিকিৎসকরা বলছেন, সেই অস্ত্রোপচারগুলোর তুলনায় এটা একটু জটিল।