‘ছাগল ভূরিভোজ’ ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক ব্যবসায়ীদের জঘণ্য নাটক: ডা. ফজলে বারি
নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রসূতির স্বাভাবিক প্রসব বেশি হয়। সিজারসহ সাধারণ যেকোনো অস্ত্রোপচার ও বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা স্বল্পমূল্যে করা যায়। এতে আশেপাশের কিছু ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকের ব্যবস্যা নষ্ট হয়ে গেছে
পিরোজপুরে এখন সবার মুখে মুখে ফিরছে নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভূরিভোজের ঘটনা। স্থানীয় চা বিক্রেতা আব্দুল লায়েক ফরাজি থানায় অভিযোগ করেন, তার হারিয়ে যাওয়া একটি ছাগল দিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৯ নভেম্বর রাতে ভূরিভোজ করা হয়েছে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (এউএইচএফপিও) ডা. মো. ফজলে বারি। বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) ডক্টর টিভিকে তিনি বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে আমার কোনো কিছু জানা নেই। আমি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঘটনার দিন ছিলামও না। রাতে ফিরলে আমাকে খাবার দেওয়া হয় এবং হ্যাঁ, সেখানে খাসির মাংস ছিল। শুনেছি স্টাফরা পিকনিক করেন এবং তা থেকেই আমাকে খাবার দেওয়া হয়।’
ডা. ফজলে বারির দাবি, ‘আমি গত বছরের ২৬ জানুয়ারি যোগদানের পর থেকেই সরকারি এই প্রতিষ্ঠানে সাধারণ রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করায় আশেপাশের ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লোকজন নাখোশ। এখানে প্রসূতির স্বাভাবিক প্রসব বেশি হয়। সিজারসহ সাধারণ যেকোনো অস্ত্রোপচার ও বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা স্বল্পমূল্যে করা যায়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে মানুষ তাদের আস্থায় নিয়েছে। এতে আশেপাশের কিছু ডায়াগনস্টিক ও ক্লিনিকের ব্যবস্যা নষ্ট হয়ে গেছে। তারাই আমাদের নানাভাবে হেনস্তার চেষ্টা করে আসছে। ছাগল চুরি করে ভূরিভোজের মতো জঘণ্য নাটক হয়ত তারাই সাজিয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপও নেব।’
নাজিরপুর থানায় গত ২২ নভেম্বর একটি লিখিত অভিযোগ দেন স্থানীয় চা বিক্রেতা আব্দুল লায়েক ফরাজি। তিনি দাবি করেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকায় চরানো তার চারটি ছাগল থেকে একটি হারিয়ে যায়। পরে স্থানীয় এক চামড়া ব্যবসায়ীর কাছে ওই ছাগলের চামড়া পাওয়া গেলে তিনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের লোকজন থেকে সেটি কিনেছেন বলে জানান।
বৃহস্পতিবার আব্দুল লায়েক ফরাজি ডক্টর টিভিকে বলেন, ‘হাসপাতালের লোকজন আমার খাসিটি খেয়েছে জানতে পেরে ডা. ফজলে বারির কাছে অভিযোগ দেই। তিনি কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় পরে থানা, উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছি। এখন তো শুনছি বিষয়টি নিয়ে অনেক ঝামেলা হচ্ছে।’
পিরোজপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. হাসনাত ইউসুফ জাকির বলেন, ‘নাজিরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ২৪টি সিসিটিভির ফুটেজ বিশ্লেষণ করে খাসি মেরে ভূরিভোজের কোনো প্রমাণ পেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএইচএফপিও ডা. ফজলে বারি লিখিত দিয়েছেন। হয়রানি মনে করে তিনি কোনো আইনি পদক্ষেপ নিতে চাইলে সহায়তা করা হবে।’
নাজিরপুর থানার ওসি আশ্রাফুজ্জামান ডক্টর টিভিকে বলেন, ‘থানা ছাড়াও উপজেলা চেয়্যাম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একই অভিযোগ দিয়েছেন আব্দুল লায়েক ফরাজি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’