চল্লিশোর্ধ্ব প্রতি দুই ধূমপায়ীর একজনের হবে ভয়ঙ্কর সিওপিডি

ডক্টর টিভি রিপোর্ট
2021-11-17 16:21:47
চল্লিশোর্ধ্ব প্রতি দুই ধূমপায়ীর একজনের হবে ভয়ঙ্কর সিওপিডি

চল্লিশোর্ধ্ব প্রতি দুই ধূমপায়ীর একজনের হবে ভয়ঙ্কর সিওপিডি

শ্বাসতন্ত্রের দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহের আরেক নাম সিওপিডি। টানা ১০ বছর যারা ধূমপান করছেন, তাদের বয়স ৪০ পার হলেই রোগটি মারাত্মক আকার নেবে। গবেষণা বলছে, ধূমপানে আসক্ত প্রতি দুইজনের একজন এ বয়সে অসংক্রামক রোগটিতে আক্রান্ত হবেন এবং বিশ্বে মৃত্যুর প্রধান কারণগুলোর তৃতীয় অবস্থানে আসবে সিওপিডি।

বুধবার (১৭ নভেম্বর) বিশ্ব সিওপিডি দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের বৈজ্ঞানিক সেমিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে বিএসএমএমইউয়ের রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, ‘বয়সের সাথে সিওপিডির সমস্যা প্রকট হয় এবং এক পর্যায়ে রোগী নিজের দৈনন্দিন কাজকর্মেও শ্বাসকষ্টে ভোগেন। পাশাপাশি হৃদরোগ, মাংসপেশীর দুর্বলতা, ওজন হ্রাস, বিষণ্ণতা, ফুসফুস ক্যান্সারের মতো সিওপিডিজনিত জটিলতা বেড়ে যায়।’

তিনি বলেন, ‘ধূমপানই সিওপিডির প্রধান যম। প্রতিদিন কেউ এক প্যাকেট করে সিগারেট ১০ বছর খেলে, তার বয়স ৪০ পার হলেই বিপদ বাড়বে। চল্লিশোর্ধ্ব প্রতি দুজনের একজন সিওপিডিতে ভুগবেন। এজন্য রোগটি থেকে বাঁচতে হলে ধূমপান এখনই ছেড়ে দিতে হবে। বিভিন্ন প্রকার পেট্রোলিয়াম জাতীয় ধোঁয়া, লাকড়ির চুলা নিঃসৃত ধোঁয়া ছাড়াও অন্যের টানা সিগারেটের ধোঁয়া ফুসফুসের একই ধরনের ক্ষতি করতে পারে।’

আলোচকরা জানান, দীর্ঘদিন বিষাক্ত ও ক্ষতিকারক উপাদান শ্বাসতন্ত্রে গেলে শ্বাসনালী ও ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এক পর্যায়ে আক্রান্ত স্থানে প্রদাহ দেখা দেয়। আক্রান্ত ফুসফুসের ছোট ছোট বায়ু কুঠুরি নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে (এমফাইসিমা) অথবা শ্বাসনালীর অংশগুলোর আবরণের ধরন পরিবর্তিত হয়ে বাড়তি মিউকাস নিঃসরণ করে ও সিলিয়া বা প্রক্ষেপক আবরণীয় সংখ্যা কমে যায় (ব্রংকাইটিস)। এতে করে দীর্ঘমেয়াদি কাশি, কফ নিঃসরণ, শ্বাসকষ্টসহ ইত্যাদি সমস্যা ধীরে ধীরে জেগে জিওপিডিতে রূপ নেয়।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মো. নজরুল ইসলাম খান, পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. আবু নাসার রিজভী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

দিবসটি উপলক্ষে সকালে বিএসএমএমইউয়ে শ্বাসকষ্টসহ বক্ষব্যাধির বিভিন্ন রোগ চিকিৎসায় জরুরি বিভাগ, পোস্ট কভিড কেয়ার সেন্টার, স্লিপ ল্যাব, ব্রঙ্কোসকপি প্রসিডিউর কক্ষের উদ্বোধন করা হয়।

এ ছাড়া জনসচেতনতামূলক শোভাযাত্রা, ফলজ, বনজ ও ঔষধি বৃক্ষরোপন কর্মসূচি পালন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য, ‘সুস্থ ফুসফুস সর্বাধিক গুরুত্বের এখনই সময়’।


আরও দেখুন: