ওজন ও দাঁত দেখে স্কুল ভর্তি অবৈজ্ঞানিক
ওজন ও দাঁত দেখে স্কুল ভর্তি অবৈজ্ঞানিক
সম্প্রতি রাজধানীর একটি নামকরা স্কুলে প্লে-গ্রুপে ভর্তির জন্য শিশুদের দাঁত ও ওজনকে যোগ্যতার মাপকাঠি নির্ধারণ করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। এতে করে অনেক অভিভাবকের শিশুদের ভর্তি নিয়ে উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা দাঁত ও ওজন দেখে ভর্তি প্রক্রিয়াকে অবৈজ্ঞানিক বলে জানিয়েছেন।
ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে প্লে-গ্রুপ ক্লাসে ভর্তির জন্য শিশুর উচ্চতায় ৩ ফুট থেকে ৩ ফুট ৮ ইঞ্চি হতে হবে । একই সাথে শিক্ষার্থীর সকল দুধ দাঁত অটুট থাকতে হবে। ওজন ১৩ কেজি থেকে ২১ কেজির মধ্যে হতে হবে বলেও শর্ত দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
এছাড়াও বলা হয়, বয়স ১লা জানুয়ারি ২০২২ সালে ৪ থেকে ৫ বছরের মধ্যে হতে হবে।
এ নিয়ে ফরাজী ডেন্টাল এন্ড রিসার্চ লিমিটেডের কনসালট্যান্ট ডা. ফারিয়া তাবাসসুম তন্বী বলেন, সব শিশুর যে বিশটি দাঁত থাকবে তা কিন্তু নয়। শিশুদের ক্ষয় রোগ বেশি হয়। এতে কিন্তু দাঁত পড়ে যেতে পারে। আবার শিশুদের জন্মগত বা বংশগত কারণে চোয়াল ছোট হতে পারে। তাহলে দাঁত কিন্তু কমে যেতে পারে।
তিনি আরও বলেন, দাঁত কোন অবস্থায় শিক্ষার প্রতিবন্ধকতা হতে পারেনা। এমন নোটিশ বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের জন্য কষ্টের কারণ।
এদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. জিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, দাঁত দেখে শিশুদের বয়স নির্ধারণ শতভাগ সঠিক হবে না। আবার সব শিশুর যে শতভাগ দাঁত থাকবে তাও কিন্তু না। শুধু দাঁত দেখে ভর্তি করালে কিন্তু বৈষম্য হতে পারে।
ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালের হরমোন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সুলতানা মারুফা শেফিন বলেন, বিশেষ কিছু হরমোন জনিত সমস্যার কারণে শিশুদের দাঁত কম কিংবা বেশি হতে পারে। অনেকের সব দুধ দাঁত নাও উঠতে পারে। ওজন বেশি কম হতে পারে বিভিন্ন কারণে। এখন তো স্থুলতা বেড়ে গেছে। কাজেই ওজনকে মাপকাঠি করে ভর্তি করানো উচিত হবে না।
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. নাঈমা সুলতানা বলেন, শিশুরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে। ফলে তাদের শারীরিক বৃদ্ধি যেমনি বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তেমনি ওজন বৃদ্ধি কিংবা বেশিও হতে পারে। তবে এর ফলে হয়তো শিশুদের পরিবার হয়তো সচেতন হবেন।