দেশে ক্যানসার গবেষণায় যুক্ত হলো পেট-সিটি প্রযুক্তি
দেশে ক্যানসার গবেষণায় যুক্ত হলো পেট-সিটি প্রযুক্তি
দেশে প্রথমবারের মতো ক্যানসার গবেষণা এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সাইক্লোট্রন সুবিধাসহ সর্বাধুনিক পেট-সিটি (পজিট্রন ইমিশন টোমোগ্রাফি) প্রযুক্তি স্থাপন করা হয়েছে।
রবিবার (২৪ অক্টোবর) সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) অনকোলজি বিভাগের এ প্রযুক্তি স্থাপন করা হয়। এ প্রযুক্তি দেশের ক্যানসার চিকিৎসাকে আরও এক ধাপ এগিয়ে দিয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন অ্যান্ড অ্যালায়েড সায়েন্সেস (নিনমাস) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটি পেট-সিটি মেশিন, রেডিও কেমিস্ট্রি সুবিধাসহ একটি সাইক্লোট্রন মেশিন এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আরও একটি পেট-সিটি মেশিন স্থাপন করে।
বিএসএমএমইউ’র এ সংক্রান্ত প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ‘সাইক্লোট্রন সুবিধাদিসহ পেট-সিটি প্রযুক্তি দ্রুত ক্যানসার শনাক্ত ও চিকিৎসায় যুগান্তকারী অবদান রেখে চলেছে। শরীরে যেসব স্থানের কোষ বেশি সক্রিয়, পেট স্ক্যান কেবল সেসব স্থানের চিত্র/তথ্য প্রদান করে। আর সিটি স্ক্যান কোনো স্থানের গঠনগত ও অবস্থানগত তথ্য/চিত্র সূক্ষ্মভাবে প্রদান করে। এই দুটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে গঠিত স্ক্যানারে একটি ফিউশন ইমেজ একই সময়ে পাওয়া যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই দুটি ইমেজের সমন্বিত ইমেজটি একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসককে শরীরের যেসব স্থানের কোষ বেশি সক্রিয় অর্থাৎ ক্যানসার আক্রান্ত কোষগুলো খুঁজে বের করতে সাহায্য করবে। এ পরীক্ষার মাধ্যমে পাওয়া তথ্য/চিত্র চিকিৎসককে কোনো বেদনাদায়ক পরীক্ষা এবং সার্জারি ছাড়াই রোগ নির্ণয় করে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করতে সাহায্য করে। একটি নির্দিষ্ট রোগের চিকিৎসার ফলাফল পর্যবেক্ষণ করতেও এ পরীক্ষা করা হয়।’
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, এটি আধুনিক প্রযুক্তির অন্যতম উদাহরণ। এটি অনেক সময় রোগীর জীবন ও মৃত্যুর মাঝে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। পেট সিটি অন্যান্য ইমেজিং টেকনোলজি যেমন, এক্স-রে, সিটি স্ক্যান, আলট্রাসনোগ্রাম, এমআরআই প্রভৃতি প্রযুক্তি থেকে ভিন্ন। কারণ ওইসব প্রযুক্তি শুধু শরীরে টিউমারের আকার, আকৃতি, অবস্থান সম্পর্কে ধারণা দেয়। কিন্তু পেট-সিটি ক্যানসার (ম্যালিগন্যান্ট টিউমার) বা ক্যানসার নয় (বিনাইন টিউমার)— দুটি সর্ম্পকেই ধারণা দিতে সক্ষম।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব জিয়াউল হাসান। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. সানোয়ার হোসেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের সদস্য (জীব বিজ্ঞান) অধ্যাপক ডা. অশোক কুমার পাল এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে আগত তিন শতাধিক অতিথি।