যে ৫ রোগে বাংলাদেশে প্রবীণদের সবচেয়ে বেশি মৃত্যু

অনলাইন ডেস্ক
2021-10-01 21:49:53
যে ৫ রোগে বাংলাদেশে প্রবীণদের সবচেয়ে বেশি মৃত্যু

বাংলাদেশে প্রবীণদের সাধারণত একাধিক জটিলতায় ভুগতে দেখা যায়।

বিশ্বেজুড়ে ১ অক্টোবর ‘বিশ্ব প্রবীণ দিবস’ হিসেবে পালন হয়। সুস্থ এবং কর্মক্ষম থাকা বাংলাদেশের মতো বিশ্বের অনেক দেশের প্রবীণ মানুষের জন্যই একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বার্ধক্যে রোগ-জরাগ্রস্ত হয়ে নাজুক অবস্থায় পড়া ঠেকাতে দরকার সচেতনতা আর সতর্কতা এবং নিজের প্রতি যত্ন।

বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে প্রবীণদের সাধারণত একাধিক জটিলতায় ভুগতে দেখা যায়।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ ২০২০ সালের জরিপে প্রবীণ মানুষেরা যেসব রোগে বেশি মারা যান, তার একটি পরিসংখ্যান দেওয়া হয়েছে। তার ভিত্তিতে হিসেব করা হয়েছে, বাংলাদেশে বয়স্ক মানুষেরা কোন রোগগুলোতে সবচেয়ে বেশি ভোগেন।

দেখা যাচ্ছে, যেসব রোগ প্রবীণ মানুষের শারীরিক ভোগান্তি যা তাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে পারে, তার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে হৃদরোগ। এ সংক্রান্ত অন্যান্য রোগ, ব্রেইন স্ট্রোক, শ্বাসতন্ত্রের অসুখ, অ্যাজমা, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কিডনি অসুখ। এছাড়াও আছে লিভারের অসুখ এবং বাতের ব্যথা।

ক্যান্সারেও বাংলাদেশে অনেক মানুষ মারা যান। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হন লিভার ক্যান্সার, পাকস্থলীর ক্যান্সার ও ব্লাড ক্যান্সার। এর বাইরে বার্ধক্যে অচিহ্নিত বা অজানা রোগে মারা যান ২৩ শতাংশের বেশি মানুষ।

বাংলাদেশে প্রবীণদের সেবায় প্রতিষ্ঠিত সবচেয়ে পুরনো সংগঠন, প্রবীণ হিতৈষী সংঘের একজন চিকিৎসক ডা. মাহবুবা আক্তার বলছেন, দেশে বেশির ভাগ প্রবীণের হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কিডনি জটিলতা, পুরুষদের ক্ষেত্রে প্রোস্টেট গ্লান্ডে জটিলতা থাকে।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ ২০২০ সালের জরিপ বলছে, বাংলাদেশে প্রবীণ মানুষেরা যে সব রোগে ভুগে মারা যান, তার সর্বোচ্চ ২৪ শতাংশই মারা যান হৃদরোগ এবং এ সংক্রান্ত অন্যান্য রোগে।

বাংলাদেশে প্রবীণ মানুষের মৃত্যুর দ্বিতীয় শীর্ষ কারণ ব্রেইন স্ট্রোক। এতে মারা যান সাড়ে ১১ শতাংশ প্রবীণ মানুষ।

বাংলাদেশে প্রবীণদের মৃত্যুর তৃতীয় শীর্ষ কারণ শ্বাসতন্ত্রের অসুখ, যাতে মারা যান ১১ শতাংশ বয়স্ক মানুষ।

দেশের বয়স্ক মানুষের মৃত্যুর আরেকটি কারণ ডায়াবেটিস। জীবনযাপন পদ্ধতিতে পরিবর্তন আসার ফলে এখন বাংলাদেশে কেবল বয়স্ক মানুষ নন, অনেক অল্প বয়সী মানুষও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছেন।

বাংলাদেশে মোট ডায়াবেটিস আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা এক কোটি ১০ লাখের বেশি। বাংলাদেশে সরকারি তথ্য অনুযায়ী, দেশে দুই কোটির বেশি মানুষ কোনো না কোনোভাবে কিডনি রোগে ভুগছে।

পঞ্চমত, দেশের প্রবীণরা যে রোগে আক্রান্ত হন, সেটি হলো কিডনি জটিলতা। কিডনি রোগীর জন্য দুই ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে- হয় ডায়ালাইসিস অর্থাৎ যন্ত্রের মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে কিডনির কাজ করানো বা কিডনি প্রতিস্থাপন।

দুই ধরণের চিকিৎসা পদ্ধতিই ব্যয়বহুল। ফলে দেশের প্রায় ৮০ শতাংশের মত কিডনি রোগী অর্থাভাবে চিকিৎসা করতে পারেন না।

প্রতিকার কী?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রবীণ বয়সে সুস্থ থাকতে চাইলে আগে থেকে পরিকল্পনা করতে হবে। এছাড়া জটিল রোগে আক্রান্ত হবার আগেই সতর্ক হওয়া দরকার।

দূরারোগ্য বা জন্মগত ব্যাধি না হলে কেবলমাত্র লাইফস্টাইলে পরিবর্তন করে সুস্থ থাকা সম্ভব বলেও মনে করেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা।


আরও দেখুন: