দেশে অর্ধেকের বেশি প্রবীণ অপুষ্টির শিকার
দেশে অর্ধেকের বেশি প্রবীণ অপুষ্টির শিকার
বাংলাদেশের এক চতুর্থাংশ প্রবীণ অপুষ্টিতে ভুগছেন। আর অর্ধেকের বেশি রয়েছেন পুষ্টিহীনতার ঝুঁকিতে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) গবেষণায় দেশের বয়স্ক জনগোষ্ঠীর এমন চিত্র উঠে এসেছে।
বিশ্ব প্রবীণ দিবস (১ অক্টোবর) উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) এ-সংক্রান্ত তিনটি গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের গবেষণাগুলো হলো— ‘বাংলাদেশে প্রবীণদের অপুষ্টির কারণ’, ‘গ্রামাঞ্চলের প্রবীণদের বাত ব্যথার ব্যাপকতা’ ও ‘নিরাময় অযোগ্য রোগীদের জন্য হোম বেসড প্যালিয়েটিভ কেয়ার: বাংলাদেশে সম্ভাবনা।’
প্রধান গবেষক ডা. কে এম তৌহিদুর রহমান ও তত্ত্বাবধায়ক গবেষক ডা. মো. খালেকুজ্জামানের গবেষণায় প্রবীণদের অপুষ্টির কারণ হিসেবে বলা হয়, গোটা বিশ্বেই প্রবীণদের অপুষ্টি বা পুষ্টিহীনতার ঝুঁকি বেশি। তবে বিষন্নতা, মুখ ও দাঁতের রোগ, বিশেষ খাদ্য পরিহারের অভ্যাস ও অসংক্রামক রোগের উপস্থিতির কারণে এ সংকট প্রকট হয়েছে।
বাংলাদেশে বর্তমান প্রবীণের সংখ্যা আনুমানিক দেড় কোটি। ধারণা করা হচ্ছে, ২০৫০ সালে তা সাড়ে ৩ কোটি ছাড়িয়ে যাবে।
১২৫ প্রবীণকে নিয়ে করা এ গবেষণায় দেখা গেছে, পুরুষের (২২ শতাংশ) তুলনায় নারীদের (২৮ দশমিক ৮ শতাংশ) মধ্যে অপুষ্টির হার বেশি। সঙ্গীবিহীন (বিধবা, বিপত্মীক, অবিবাহিত) প্রবীণদের মাঝে অপুষ্টির হার ২৮ দশমিক ৬ শতাংশ ও পুষ্টিহীনতার ঝুঁকির হার ৬৫ দশমিক ৩ শতাংশ।
বিষন্নতায় ভোগা প্রায় ৪০ শতাংশ প্রবীণ অপুষ্টিতে ভুগছেন। স্বাভাবিকের তুলনায় এ জনগোষ্ঠীর অপুষ্টিতে ভোগার সম্ভাবনা ১৫ দশমিক ৬ গুণ বেশি। যেসব প্রবীণের মুখ ও দাঁতের অসুখ রয়েছে, তাদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ অপুষ্টিতে ভুগছেন। অন্যদের তুলনায় তাদের অপুষ্টিতে ভোগার সম্ভাবনা ৭ দশমিক ৩ গুণ বেশি।
মাংস, দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার এবং ডিম জাতীয় খাবার পরিহার করা প্রবীণদের মধ্যে অপুষ্টি ও পুষ্টিহীনতার ঝুঁকি— দুটিই বেশি। স্ট্রোক বা পক্ষাঘাতগ্রস্ত প্রবীণদের মধ্যে অপুষ্টির আরও হার বেশি।
গবেষণায় প্রবীণদের অপুষ্টি দূরে বেশ কিছু পরামর্শ তুলে ধরেছে পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগ। এগুলোর মধ্যে রয়েছে— প্রবীণদের জন্য পুষ্টিবিষয়ক সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি গ্রহণ করা, যেখানে নারীদের বিশেষ গুরুত্ব দেয়া উচিত। প্রবীণদের সঠিক পুষ্টি নিশ্চিতে তাদের মানসিক ও মুখের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে জোর দিতে হবে এবং সঠিক খাদ্যাভাস নিশ্চিতে উদ্যোগ নিতে হবে।